শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়্যাহ (রঃ) বলেন, 'ইলম ও ইবাদত বিষয়ক (প্রায়) সর্বপ্রকার বিদআত খুলাফায়ে রাশেদীনের খোলাফত কালের শেষের দিকেই প্রকাশ পায়। যেমন, এ বিষয়ে সতর্ক করে নবী (সা.) বলেছিলেন, “যে আমার পর যে জীবিত থাকবে সে বহু মতানৈক্য দেখতে পাবে, সুতরাং তোমরা আমার ও আমার পরবর্তী খুলাফায়ে রাশেদীনের সুন্নাহ (আদর্শ)কে আঁকড়ে ধরো।” (ফাতওয়া ইবনে তাইমিয়্যাহ ৩০/৩৫৪)
সর্বপ্রথম কদরের (তকদীর বলে কিছু নেই এই বিশ্বাসের) বিদআত বিকাশ লাভ করে অতঃপর ‘ইরজা’ (আমল ঈমানে শামিল নয় এই বিশ্বাস), ‘তাশাইয়ু’ (হযরত আলী প্রথম খলীফা হওয়ার যোগ্য ও অধিকারী এই ধারণার উপর ঘটিত) বিদআত এবং খাওয়ারেজ (যারা বলে কাবীরাহ গুনাহকারী কাফের এবং চিরস্থায়ী জাহান্নামবাসী তাদের) বিদআত প্রকাশ পায়। এ সমস্ত বিদআতগুলি প্রথম ও দ্বিতীয় শতাব্দীতে সাহাবাদের বর্তমানেই ঘটে। যাতে তাঁরা অসম্মতি প্রকাশ করেছিলেন এবং উচিত মত সে সবের প্রতিবাদ ও খনও করেছিলেন। বরং আলী (রাঃ) খাওয়ারেজদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিলেন।
অতঃপর মু’যিলা আকলানীদের (যারা আকল বা জ্ঞান ও বিবেকের নিক্তিতে শরীয়ত বুঝে তাদের) বিদআত দেখা দেয় এবং মুসলিমদের মাঝে বড় বিঘ্ন ও ফিতনার সৃষ্টি হয়। বিভিন্নমুখী মতানৈক্যে, কলহ-বিবাদ ও খেয়াল-খুশীর পূজা বাড়তে থাকে। তাসাউবুফ (সুফীবাদ) ও কবর। পূজার বা মাজারের বিদআত প্রকাশ হয় ইসলামী স্বর্ণযুগের পর এবং সেইভাবে পর পর যুগ অতিবাহিত হওয়ার সাথে সাথে আরো অন্যান্য রকমারী বিদআতের প্রাদুর্ভাব ঘটে। প্রধান প্রধান বিদআত দেখা দেয় বসরা, কুফা ও শাম থেকে, যা পরবর্তীকালে অন্যান্য দেশে ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ে।