পূর্বেই বলা হয়েছে, জাহান্নামীদের সংখ্যা জান্নাতীদের তুলনায় অনেক গুণ বেশি হবে। যেহেতু এ সংসারে অসৎ লোকের সংখ্যাই অধিক, আল্লাহর বাধ্য বান্দা কম, শয়তানের বাধ্য গোলামই বেশি। মানুষের সৃষ্টিকর্তা ও পালনকর্তা নিজেই ঘোষণা দিয়েছেন,

وَمَا أَكْثَرُ النَّاسِ وَلَوْ حَرَصْتَ بِمُؤْمِنِينَ

অর্থাৎ, তুমি যতই আগ্রহী হও না কেন, অধিকাংশ লোকই বিশ্বাস করবার নয়। (ইউসুফঃ ১০৩)

وَلَقَدْ صَدَّقَ عَلَيْهِمْ إِبْلِيسُ ظَنَّهُ فَاتَّبَعُوهُ إِلَّا فَرِيقًا مِّنَ الْمُؤْمِنِينَ

অর্থাৎ, ওদের উপর ইবলীস তার অনুমান সত্য হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করল, ফলে ওদের মধ্যে একটি বিশ্বাসী দল ছাড়া সকলেই তার অনুসরণ করল। (সাবাঃ ২০)

তিনি শয়তানকে বিতাড়িত করার সময় বলেছিলেন,

لَأَمْلَأَنَّ جَهَنَّمَ مِنكَ وَمِمَّن تَبِعَكَ مِنْهُمْ أَجْمَعِينَ

অর্থাৎ, তোমার দ্বারা ও ওদের মধ্যে তোমার সকল অনুসারীদের দ্বারা আমি অবশ্যই জাহান্নাম পূর্ণ করব।” (স্বাদঃ ৮৫)।

বলা বাহুল্য, অধিকাংশ জ্বিন-ইনসানই জাহান্নামের অধিবাসী।

মহান আল্লাহ আদম (আঃ)-কে আদেশ করবেন যে, যেন তিনি নিজ সন্তানদের মধ্য হতে হাজারে ৯৯৯ জনকে জাহান্নামের জন্য বের করে দেন। এই কথা শুনে গর্ভবতীরা তাদের গর্ভপাত করে ফেলবে, বালকরা বৃদ্ধ হয়ে পড়বে, আর মানুষকে দেখে মাতাল মনে হবে, অথচ তারা আসলে মাতাল হবে না; বরং আল্লাহর আযাবের ভয়াবহতার জন্য এ রকম (কিংকর্তব্যবিমূঢ়) হবে। সাহাবাদের কাছে এ কথা অত্যন্ত ভারী মনে হল, তাদের চেহারার রং পাল্টে গেল। নবী (ﷺ) তা দেখে বললেন ভয়ের কিছু নেই। ৯৯৯ জনের সংখ্যা য়্যা’জুজ-মাজুজের মধ্য হতে হবে আর তোমাদের মাত্র একজন। তোমাদের সংখ্যা অন্য মানুষদের তুলনায় এমন হবে, যেমন সাদা গরুর গায়ে একটি কালো লোম অথবা কালো গরুর গায়ে একটি সাদা লোম। আর আমি আশা করি যে, তোমরাই হবে জান্নাতের এক চতুর্থাংশ বা এক তৃতীয়াংশ বা অর্ধেক। তা শুনে সাহাবারা আনন্দে ‘আল্লাহু আকবার’ ধ্বনি উচ্চারিত করলেন। (বুখারী)

অন্য এক বর্ণনায় আছে, প্রত্যেক একশ’র মধ্যে ৯৯ জন জাহান্নামে যাবে। (বুখারী) হয়তো বা এ সংখ্যাতে য়্য’জুজ-মাজুজকে গণনায় বাদ দেওয়া হয়েছে। আর আল্লাহই ভাল জানেন।