সহীহ দুআ ও যিক্‌র দুআয়ে মাসূরাহ আবদুল হামীদ ফাইযী ১ টি

নামাযে দরূদ পাঠ করার পর সালাম ফেরার পূর্বে নিম্নের দুআগুলি পঠনীয়ঃ

১।

اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ جَهَنَّمَ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ فِتْنَةِ الْمَسِيحِ الدَّجَّالِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ فِتْنَةِ الْمَحْيَا وَفِتْنَةِ الْمَمَاتِ

উচ্চারণঃ আল্লা-হুম্মা ইন্নী আউযু বিকা মিন আযা-বি জাহান্নাম, অ আউযু বিকা মিন আযা-বিল ক্বাব্‌র, অ আউযু বিকা মিন ফিতনাতিল মাসীহিদ দাজ্জাল, অ আউযু বিকা মিন ফিতনাতিল মাহয়্যা অ ফিতনাতিল মামা-ত।

অর্থঃ হে আল্লাহ! নিশ্চয় আমি জাহান্নাম ও কবরের আযাব থেকে, কানা দাজ্জাল, জীবন ও মৃত্যুর ফিতনা থেকে তোমার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি।।

প্রকাশ যে, নামাযের শেষ তাশাহহুদে দরূদের পর অন্যান্য দুআর পূর্বে এই চার প্রকার আযাব ও ফিতনা থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করা ওয়াজেব। (মুসলিম, নাসাঈ ১৩০৯, সিফাতু সালাতিন নাবী ১৯৮ পৃঃ)

২।

اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ الْمَأْثَمِ وَالْمَغْرَمِ

উচ্চারণঃ-আল্লা-হুম্মা ইন্নী আউযু বিকা মিনাল মা’সামি অ মিনাল মাগরাম।

অর্থ-হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট পাপ ও ঋণ হতে পানাহ চাচ্ছি।

৩।

اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا عَمِلْتُ وَمِنْ شَرِّ مَا لَمْ أَعْمَلْ

উচ্চারণঃ- আল্লা-হুম্মা ইন্নী আউযু বিকা মিন শার্লি মা আমিলতু অ মিন শারি মা লাম আ’মাল।

অর্থঃ হে আল্লাহ! নিশ্চয় আমি তোমার নিকট আমার কৃত (পাপের) অনিষ্ট হতে এবং অকৃত (পুণ্যের) মন্দ থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। (নাসাঈ ১৩০৬)

৪।

اللَّهُمَّ حَاسِبْنِي حِسَابًا يَسِيرًا

উচ্চারণঃ আল্লা-হুম্মা হা-সিবনী হিসা-বাঁই য়্যাসীরা।

অর্থ-হে আল্লাহ! তুমি আমার সহজ হিসাব গ্রহণ করো। (আহমদ, হাকেম)

৫।

اللَّهُمَّ بِعِلْمِكَ الْغَيْبَ، وَقُدْرَتِكَ عَلَى الْخَلْقِ، أَحْيِنِي مَا عَلِمْتَ الْحَيَاةَ خَيْرًا لِي، وَتَوَفَّنِي إِذَا كَانَتْ الْوَفَاةَ خَيْرًا لِي، اللَّهُمَّ وَأَسْأَلُكَ خَشْيَتَكَ فِي الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ، وَأَسْأَلُكَ كَلِمَةَ الْحَقِّ وَالْعَدْلِ فِي الْغَضَبِ وَالرِّضَا وَأَسْأَلُكَ الْقَصْدَ فِي الْفَقْرِ وَالْغِنَى، وَأَسْأَلُكَ نَعِيمَاً لاَ يَبِيْدُ، وأَسْأَلُكَ قُرَّةَ عَيْنٍ لاَ تَنْفَدُ وَلاَ تَنْقَطِعْ، وَأَسْأَلُكَ الرِّضَى بَعَدَ الْقَضَاءِ، وَأَسْأَلُكَ بَرْدَ الْعَيْشِ بَعْدَ الْمَوْتِ، وَأَسْأْلُكَ لَذَّةَ النَّظَرِ إلَى وَجْهِكَ، وَالشَّوْقَ إِلَى لِقَائِكَ، فِي غَيْرِ ضَرَّاءَ مُضِرَّةٍ، وَلاَ فِتْنَةٍ مُضِلَّةٍ، اللَّهُمَّ زَيِّنَّا بِزِينَةِ الإِيمَانِ، وَاجْعَلْنَا هُدَاةً مُهْتَدِينَ

উচ্চারণঃ আল্লা-হুম্মা বিইলমিকাল গাইবা অকূদরাতিকা আলাল খালক্ব, আহয়িনী মা আলিমতাল হায়্যাতা খাইরাল লী, অতাওয়াফ্‌ফানী ইযা কা-নাতিল অফা-তু খাইরাল লী। আল্লা-হুম্মা অ আসআলুকা খাশয়্যাতাকা ফিল গাইবি অশাহাদাহ। অ আসআলুকা কালিমাতাল হাক্কি অলআদলি ফিল গায়বি অররিয্বা। অ আসআলুকাল ক্বাসদা ফিল ফাক্‌রি অলগিনা। অ আসআলুকা নাঈমাল লা য়্যাবীদ। অ আসআলুকা কুররাতা আইনিল লা তানফাদু অলা তানক্বাতি’। অ আসআলুকার রিয্বা বা'দাল ক্বায্বা, অ আসআলুকা বাদাল আইশি বা'দাল মাউত। অ আসআলুকা লাযযাতান নাযারি ইলা অজহিক, অশ্‌শাওক্বা ইলা লিক্বা-ইক, ফী গাইরি য্বাররা-আ মুয্বিররাহ, অলা ফিতনাতিম মুযিল্লাহ। আল্লা-হুম্মা যাইয়িন্না বিহীনাতিল ঈমান, অজআলনা হুদা-তাম মুহতাদীন।

অর্থ- হে আল্লাহ! তোমার অদৃশ্যের জ্ঞানে এবং সৃষ্টির উপর শক্তিতে আমাকে জীবিত রাখ, যতক্ষণ জীবনকে আমার জন্য কল্যাণকর জান এবং আমাকে মৃত্যু দাও যদি মৃত্যু আমার জন্য কল্যাণকর হয়। হে আল্লাহ! আর আমি গোপনে ও প্রকাশ্যে তোমার ভীতি চাই, ক্রোধ ও সন্তুষ্টিতে সত্য ও ন্যায্য কথা চাই, দারিদ্র ও ধনবত্তায় মধ্যবর্তিতা চাই, সেই সম্পদ চাই, যা বিনাশ হয় না। সেই চক্ষুশীতল চাই, যা নিঃশেষ ও বিচ্ছিন্ন হয় না। ভাগ্য-মীমাংসার পরে সন্তুষ্টি চাই, মৃত্যুর পরে জীবনের শীতলতা চাই, তোমার চেহারার প্রতি দর্শন-স্বাদ চাই, তোমার সাক্ষাতের প্রতি আকাঙ্ক্ষা চাই, বিনা কোন কষ্ট ও ক্ষতিতে, কোন ভ্ৰষ্টকারী ফিতনায়। হে আল্লাহ! আমাদেরকে ঈমানের সৌন্দর্যে সুন্দর কর এবং আমাদেরকে হিদায়াতকারী ও হিদায়াতপ্রাপ্ত কর। (নাসাঈ ১৩০৮, আহমাদ ৪/ ৩৬৪)।

৬।

اللَّهُمَّ إِنِّي ظَلَمْتُ نَفْسِي ظُلْمًا كَثِيرًا وَلَا يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلَّا أَنْتَ فَاغْفِرْ لِي مَغْفِرَةً مِنْ عِنْدِكَ وَارْحَمْنِي إِنَّكَ أَنْتَ الْغَفُورُ الرَّحِيمُ

উচ্চারণঃ- আল্লা-হুম্মা ইন্নী যালামতু নাফসী যুলমান কাসীরাউ অলা য়্যাগফিরুয যুনুবা ইল্লা আন্তা ফাগফিরলী মাগফিরাতাম মিন ইন্দিকা অরহামনী ইন্নাকা আন্তাল গাফুরুর রাহীম।

অর্থ- হে আল্লাহ! আমি নিজের উপর অনেক অত্যাচার করেছি এবং তুমি ভিন্ন অন্য কেহ গোনাহসমূহ মাফ করতে পারে না। অতএব তোমার তরফ থেকে আমাকে ক্ষমা করে দাও এবং আমার উপর দয়া কর। নিশ্চয় তুমি ক্ষমাশীল দয়াবান। (বুখারী, মুসলিম)

৭।

اللهم إني أسألك من الخير كله عاجله وآجله ما علمت منه ومالم أعلم، وأعوذ بك من الشر كله عاجله وآجله ما علمت منه وما لم أعلم، وأسألك الجنة وما قرب إليها من قول أو عمل، وأعوذ بك من النار وما قرب إليها من قول أو عمل، وأسألك من الخير ما سألك عبدك ورسولك محمد صلی الله عليه وسلم وأعود بك من شر ما استعاذك منه عبدك ورسولك محمد صلى الله عليه وسلم وأسألك ما قضيت لي من أمر أن تجعل عاقبته لي رشداً

উচ্চারণঃ- আল্লা-হুম্মা ইন্নী আসআলুকা মিনাল খাইরি কুল্লিহী আ’ জিলিহী অ আ-জিলিহী মা আলিমতু মিনহু অমা লাম আ’লাম। অ আউযু বিকা মিনাশ শাররি কুল্লিহী আ’-জিলিহী অ আ-জিলিহী মা আলিমতু মিনহু অমা লাম আ’লাম, অ আসআলুকাল জান্নাতা অমা ক্বাররাবা ইলাইহা মিন ক্বাউলিন আউ আমাল। অ আউযু বিকা মিনান্না-রি অমা ক্বাররাবা ইলাইহা মিন ক্বাউলিন আউ আমাল। অ আসআলুকা মিনাল খাইরি মা সাআলাকা আদুকা অ রাসুলুকা মুহাম্মাদুন সাল্লাল্লাহু আলাইহি অসাল্লাম। অ আউযু বিকা মিন শাররি মাসতাআ-যাকা মিনহু আবদুকা অরাসুলুকা মুহাম্মাদুন সাল্লাল্লাহু আলাইহি অসাল্লাম। অ আসআলুকা মা ক্বাযাইতা লী মিন আমরিন আন তাজআলা আ-ক্বিবাতাহু লী রুশ্‌দা।

অর্থঃ হে আল্লাহ! নিশ্চয় আমি তোমার নিকট আমার জানা ও অজানা, অবিলম্বিত ও বিলম্বিত সকল প্রকার কল্যাণ প্রার্থনা করছি এবং আমার জানা ও অজানা, অবিলম্বিত ও বিলম্বিত সকল প্রকার অকল্যাণ থেকে তোমার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি। তোমার নিকট জান্নাত এবং তার প্রতি নিকটবর্তীকারী কথা ও কাজ প্রার্থনা করছি, এবং জাহান্নাম ও তার প্রতি নিকটবর্তীকারী কথা ও কাজ থেকে তোমার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি। আমি তোমার নিকট সেই কল্যাণ ভিক্ষা করছি যা তোমার দাস ও রসূল মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তোমার নিকট চেয়েছিলেন। আর সেই অকল্যাণ থেকে তোমার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি, যা থেকে তোমার দাস ও রসুল মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তোমার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করেছেন। যে বিষয় আমার উপর মীমাংসা করেছ তার পরিণাম যাতে মঙ্গলময় হয়, তা আমি তোমার নিকট কামনা করছি। (মুঃ আহমাদ ৬/ ১৩৪, ত্বায়ালিসী)

৮।

اللَّهُمَّ إنِّي أَسْأَلُكَ الْجَنَّةَ وَأَسْتَجِيْرُ بِكَ مِنَ النَّارِ

উচ্চারণঃ-আল্লা-হুম্মা ইন্নী আসআলুকাল জান্নাতা অ আউযু বিকা মিনান্না-র।

অর্থ-হে আল্লাহ! নিশ্চয় আমি তোমার নিকট জান্নাত চাচ্ছি এবং জাহান্নাম থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। (আবু দাউদ, সহীহ ইবনে মাজাহ ২/৩২৮)।

৯। শয়নকালের ৭নং দুআ পঠনীয়। (মুসলিম, মিশকাত ১৪৭নং)

১০। দুআর ৯নং আদবের (খ) এর দুআ পঠনীয়। (নাসাঈ ৩/৫২)

১১। দুআর ৯নং আদবের (গ) এ বর্ণিত ইসমে আযম পাঠ করে এই দুআ পঠনীয়, (إنِّي أَسْأَلُكَ الْجَنَّةَ وَأَسْتَجِيْرُ بِكَ مِنَ النَّارِ) এর উচ্চারণ ও অর্থ ৮নং দুআর মত। (সহীহ ইবনে মাজাহ ২/৩২৯)।

১২। দুআর ৯নং আদবের (ক) এ বর্ণিত দুআ পাঠ করে যে কোন দুআ পঠনীয়। (আবু দাউদ ২/৬২, তিরমিযী ৫/৫১৫, সহীহ ইবনে মাজাহ ২/৩২৯)

১৩।

اللَّهُمَّ أَعِنِّي عَلَى ذِكْرِكَ وَشُكْرِكِ وَحُسْنِ عِبَادَتِكِ

উচ্চারণঃ-আল্লা-হুম্মা আইন্নী আলা যিকরিকা অশুকরিকা অহুসনি ইবা-দাতিক।

অর্থঃ হে আল্লাহ! তুমি আমাকে তোমার যিকর (স্মরণ), শুকর (কৃতজ্ঞতা) এবং সুন্দর ইবাদত করতে সাহায্য দান কর। (আবু দাউদ ২/৮৬ নাসাঈ ১৩০২)।

১৪।

اللَّهُمَّ إنِّي أعُوذُ بِكَ مِنَ البُخْلِ، وَأَعوذُ بِكَ مِنَ الجُبْنِ، وَأعُوذُ بِكَ أنْ أُرَدَّ إِلَى أَرْذَلِ العُمُرِ، وَأعُوذُ بِكَ مِنْ فِتْنَةِ الدُّنْيَا، وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ القَبْرِ

উচ্চারণঃ- আল্লা-হুম্মা ইন্নী আউযু বিকা মিনাল বুখলি অ আউযু বিকা মিনাল জুবনি অ আউযু বিকা মিন আন উরাদ্দা ইলা আরযালিল উমুরি অ আউযু বিকা মিন ফিতনাতিদুনয়্যা অ আযা-বিল ক্বাবর।

অর্থঃ হে আল্লাহ! নিশ্চয় আমি তোমার নিকট কার্পণ্য ও ভীরুতা থেকে পানাহ চাচ্ছি, স্থবিরতার বয়সে কবলিত হওয়া থেকে আমি তোমার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি আর দুনিয়ার ফিতনা ও কবরের আযাব থেকে তোমার নিকট আশ্রয় চাচ্ছি। (বুখারী ৬/৩৫)

১৫।

اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي وَتُبْ عَلَيَّ إِنَّكَ أَنْتَ التَّوَّابُ الْغَفُورُ

উচ্চারণঃ-আল্লা-হুম্মাগফিরলী অতুব আলাইয়্যা, ইন্নাকা আন্তাত তাউওয়াবুল গাফুর।

অর্থঃ- আল্লাহ গো! তুমি আমাকে ক্ষমা কর এবং আমার তওবা গ্রহণ কর। নিশ্চয় তুমি তওবাগ্রহণকারী, বড় ক্ষমাশীল।

এটি ১০০বার পঠনীয়। (সিলসিলাহ সহীহাহ ২৬০৩ নং)

১৬।

اللهم اغفر لي ما قدمت وما أخرت، وما أسررت وما أعلنت، وما أسرفت، وما أنت أعلم به مني، أنت المقدم، وأنت المؤخر، لا إله إلا أنت

উচ্চারণঃ- আল্লা-হুম্মাগফিরলী মা ক্বাদ্দামতু অমা আখখারতু অমা আসরারতু অমা আ’লানতু অমা আসরাফতু অমা আন্তা আ’লামু বিহী মিন্নী, আন্তাল মুক্কাদ্দিমু অ আন্তাল মুআখখিরু লা ইলা-হা ইল্লা আন্ত।

অর্থ- হে আল্লাহ! তুমি আমাকে মার্জনা কর, যে অপরাধ আমি পূর্বে করেছি এবং যা পরে করেছি, যা গোপনে করেছি এবং যা প্রকাশ্যে করেছি, যা অতিরিক্ত করেছি এবং যা তুমি অধিক জান। তুমি আদি তুমিই অন্ত। তুমি ব্যতীত কেউ সত্য উপাস্য নেই।। এই দুআটি সবার শেষে পাঠ করে সালাম ফিরা কর্তব্য। (মুসলিম ১/৫৬৪)