মু’মিনদের সকলের ঈমান এক সমান নয়। কারো ঈমান বড় আবার কারো ঈমান ছোট বা দুর্বল হয়ে থাকে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও আবু বকরের ঈমান সমান নয়, আবু বকর (রাঃ) এবং অন্যান্য সাহাবীদের ঈমানও সমান নয়। এমনিভাবে সাহাবী ও তাদের পরবর্তী যুগের মুমিনদের ঈমান একই রকম নয়। আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ
وَالسَّابِقُونَ السَّابِقُونَ * أُوْلَئِكَ الْمُقَرَّبُونَ إلى قوله: وَأَصْحَابُ الْيَمِينِ مَا أَصْحَابُ الْيَمِينِ
‘‘অগ্রবর্তীগণ তো অগ্রবর্তীই। তারাই নৈকট্যশীল---এবং যারা ডান দিকে থাকবে। ডান দিকের লোকেরা কতই না ভাগ্যবান’’। (সূরা ওয়াকীয়াঃ ১০-২৭) আল্লাহ্ তা’আলা আরো বলেনঃ
فَأَمَّا إِنْ كَانَ مِنْ الْمُقَرَّبِينَ * فَرَوْحٌ وَرَيْحَانٌ وَجَنَّةُ نَعِيمٍ * وَأَمَّا إِنْ كَانَ مِنْ أَصْحَابِ الْيَمِينِ * فَسَلاَمٌ لَكَ مِنْ أَصْحَابِ الْيَمِينِ
‘‘যদি সে নৈকট্যশীলদের একজন হয় তবে তার জন্য রয়েছে আরাম, উত্তম রিযিক এবং নিয়ামতে পরিপূর্ণ জান্নাত। আর যদি সে ডান পাশের লোকদের একজন হয়, তবে তাকে বলা হবেঃ তোমার জন্য ডান পার্শ্বের লোকদের পক্ষ থেকে সালাম’’। (সূরা ওয়াকীয়াঃ ৮৮-৯১) আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ
فَمِنْهُمْ ظَالِمٌ لِنَفْسِهِ وَمِنْهُمْ مُقْتَصِدٌ وَمِنْهُمْ سَابِقٌ بِالْخَيْرَاتِ بِإِذْنِ اللَّهِ
‘‘তবে তাদের কেউ নিজের প্রতি যুলুমকারী, কেউ মধ্যপন্থী আবার কেউ আল্লাহর ইচ্ছায় কল্যাণের কাজে অগ্রগামী’’। (সূরা ফাতিরঃ ৩২) শাফাআতের হাদীছে এসেছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ
(إنّ اللَّه يُخْرِجُ مِنَ النَّارِ مَنْ كَانَ فِي قَلْبِهِ وَزْنُ دِينَارٍ مِنْ الْإِيمَانِ ثُمَّ قَالَ مَنْ كَانَ فِي قَلْبِهِ وَزْنُ نِصْفِ دِينَارٍ مِنْ الْإِيمَانِ)
‘‘যার অন্তরে এক দ্বীনার পরিমাণ ঈমান থাকবে আল্লাহ তা’আলা তাকে জাহান্নাম থেকে বের করবেন। অতঃপর যার অন্তরে অর্ধ দ্বীনার পরিমাণ ঈমান থাকবে, তাকেও জাহান্নাম থেকে বের করবেন’’।[1] অন্য বর্ণনায় আছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো বলেনঃ
(يَخْرُجُ مِنَ النَّارِ مَنْ قَالَ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَفِي قَلْبِهِ من الخير ما يزن شَعِيرَةً وَيَخْرُجُ مِنَ النَّارِ مَنْ قَالَ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَفِي قَلْبِهِ من الخير ما يزن بُرَّة وَيَخْرُجُ مِنَ النَّارِ مَنْ قَالَ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَفِي قَلْبِهِ من الخير ما يزن ذَرَّةً)
‘‘যে ব্যক্তি ‘‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’’ পাঠ করবে এবং তার অন্তরে একটি যব পরিমাণ ঈমান রয়েছে সেও জাহান্নাম থেকে বের হবে। যে ব্যক্তি ‘‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’’ পাঠ করবে এবং তার অন্তরে একটি গম পরিমাণ ঈমান রয়েছে সেও জাহান্নাম থেকে বের হবে। অনুরূপভাবে ঐ ব্যক্তিও জাহান্নাম থেকে বের হবে যে ‘‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’’ পাঠ করবে অথচ তার অন্তরে একটি সরিষার দানা পরিমাণ ঈমান রয়েছে।[2]
[2] - বুখারী, মুসলিমঃ অধ্যায়ঃ কিতাবুল ঈমান।