উত্তরঃ আবু বকরের পর উমার (রাঃ) খলীফা হওয়ার অধিক হকদার ছিলেন। এ ব্যাপারে অনেক দলীল রয়েছে। কতিপয় দলীল পূর্বে আলোচিত হয়েছে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ
(إِنِّي لاَ أَدْرِي مَا بَقَائِي فِيكُمْ فَاقْتَدُوا بِاللَّذَيْنِ مِنْ بَعْدِي وَأَشَارَ إِلَى أَبِي بَكْرٍ وَعُمَرَ)
‘‘আমি জানিনা যে, তোমাদের মধ্যে আমি কত দিন বেঁচে থাকব। আমার পরে তোমরা আবু বকর ও উমার- এই দু’জনের অনুসরণ করবে’’।[1] এই বলে তিনি আবু বকর ও উমার (রাঃ)এর দিকে ইঙ্গিত করেছেন।
হুজায়ফা (রাঃ)এর হাদীছে বর্ণিত হয়েছে, তিনি একদা উমার বিন খাত্তাব (রাঃ)এর কাছে বসা ছিলেন। উমার (রাঃ) বললেনঃ ‘‘তোমাদের মধ্যে কে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হতে বর্ণিত ফিতনার হাদীছ মুখস্থ রেখেছে? হুজায়ফা (রাঃ) বললেনঃ মানুষ ধন-সম্পদ, স্ত্রী-পরিবার ও সন্তান-সন্ততি নিয়ে ফিতনায় পড়ে যে গুনাহর কাজে লিপ্ত হবে নামায, সাদকাহ, সৎকাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ এবং অন্যান্য সৎকাজ তা মিটিয়ে দিবে। উমার (রাঃ) বললেনঃ আমি আপনাকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করছিনা। আপনাকে সে ফিতনা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করছি, যা সাগরের ঢেউয়ের মত আসতে থাকবে। হুজায়ফা (রাঃ) বললেনঃ হে আমীরুল মু’মিনীন! এরকম ফিতনায় আপনি পতিত হবেন না। কারণ আপনার মাঝে এবং ফিতনার মাঝে একটি বন্ধ দরজা রয়েছে। উমার (রাঃ) জিজ্ঞেস করলেনঃ সেই দরজাটি খুলে দেয়া হবে? না কি বল প্রয়োগ করে ভেঙ্গে ফেলা হবে? হুজায়ফা (রাঃ) বললেন; বরং তা ভেঙ্গে ফেলা হবে। উমার (রাঃ) বললেনঃ তাই যদি হয় আর কোন দিন তা বন্ধ করা সম্ভব হবে না। হুজায়ফা (রাঃ) বলেনঃ আমি বললামঃ হ্যাঁ, তাই। সাহাবীগণ বলেনঃ আমরা হুজায়ফাকে জিজ্ঞেস করলামঃ উমার (রাঃ) কি জানতেন সেই বন্ধ দরজা কোনটি? তিনি বললেনঃ দিনের পর রাত্রির আগমণ যেমন নিশ্চিত তেমনি নিশ্চিতভাবেই তিনি তা জানতেন। হাদীছের শেষাংশে এসেছে সেই বন্ধ দরজাটি ছিলেন উমার (রাঃ) স্বয়ং নিজেই।[2] উমার (রাঃ) নিহত হওয়ার পর মুসলমানদের পারস্পরিক তলোয়ারবাজি বন্ধ হয়নি। আবু বকরের পর উমার (রাঃ)এর খেলাফতের উপর মুসলমানদের ইজমা তথা ঐকমত্য সংঘটিত হয়েছে।
[2] - বুখারী, অধ্যায়ঃ কিতাবুল ফিতান।