উত্তরঃ নব আবিস্কিৃত বিদ্আত হচ্ছে সুন্নাতের বিপরীত। আর তা হচ্ছে এমন বিষয় শরীয়তের অন্তর্ভূক্ত করা, আল্লাহ্ যার অনুমতি দেন নি। ইসলামের পরিভাষায় বিদআত বলা হয় দ্বীনের মধ্যে এমন বিষয় তৈরী করা, যা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও খোলাফায়ে রাশেদার যুগে ছিলনা বরং পরবর্তীতে উদ্ভাবন করা হয়েছে। এদিকে ইঙ্গিত করেই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ
مَنْ أَحْدَثَ فِي أَمْرِنَا هَذَا مَا لَيْسَ فِيهِ فَهُوَ رَدٌّ
‘‘যে ব্যক্তি আমাদের দ্বীনের মধ্যে নতুন বিষয় তৈরী করবে যা তার অন্তর্ভূক্ত নয়, তা প্রত্যাখ্যাত হবে’’।[1] তিনি আরও বলেনঃ
(مَنْ عَمِلَ عَمَلًا لَيْسَ عَلَيْهِ أَمْرُنَا فَهُوَ رَدٌّ)
‘‘যে ব্যক্তি এমন কোন আমল করবে, যে বিষয়ে আমাদের অনুমোদন নেই, তা আমলকারীর উপর প্রত্যাখ্যাত হবে’’।[2] নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো বলেনঃ
(عَلَيْكُمْ بِسُنَّتِي وَسُنَّةِ الْخُلَفَاءِ الْمَهْدِيِّينَ الرَّاشِدِينَ تَمَسَّكُوا بِهَا وَعَضُّوا عَلَيْهَا بِالنَّوَاجِذِ وَإِيَّاكُمْ وَمُحْدَثَاتِ الأُمُورِ فَإِنَّ كُلَّ مُحْدَثَةٍ بِدْعَةٌ وَكُلَّ بِدْعَةٍ ضَلاَلَةٌ)
‘‘আমার পরে তোমাদের মধ্যে যারা জীবিত থাকবে, তারা অনেক মতবিরোধ দেখতে পাবে। সুতরাং তোমরা সে সময় আমার সুন্নাত এবং খোলাফায়ে রাশেদার সুন্নাতকে আঁকড়ে ধরবে তোমরা দ্বীনের মাঝে নতুন বিষয় আবিষ্কার করা থেকে বিরত থাকবে, কেননা প্রত্যেক নতুন বিষয়ই বিদআত। আর প্রতিটি বিদআতের পরিণাম গোমরাহী বা ভ্রষ্টতা’’।[3]
এই উম্মাতের মধ্যে বিদ্আত প্রবেশ করবে। এ কথা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর হাদীছে আগেই বলে দিয়েছেন। তিনি বলেনঃ
(وَإِنَّ أُمَّتِي سَتَفْتَرِقُ عَلَى ثلاث وَسَبْعِينَ فِرْقَةً كُلُّهَا فِي النَّارِ إلاَّ وَاحِدَةً)
‘‘নিশ্চয়ই আমার উম্মাত ৭৩ দলে বিভক্ত হবে। একটি দল ব্যতীত অন্যান্য সকল দলই জাহান্নামে প্রবেশ করবে। সাহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেনঃ সেই নাজাত প্রাপ্ত দল কোন্টি? তিনি তাঁর পবিত্র জবানে নির্দিষ্ট করে সেই দলটির পরিচয় বলে দিলেনঃ
(هم من كان على مثل مَا أَنَا عَلَيْهِ وَأَصْحَابِي)
‘‘যারা আমার এবং আমার সাহাবীদের পথে চলবে তারাই হবে সেই নাজাত প্রাপ্ত দল’’।[4] যারা দলাদলি করবে এবং দ্বীনের ব্যাপারে মতবিরোধ সৃষ্টি করবে তাদের থেকে আল্লাহ্ তাআলা তাঁর নবীকে সম্পূর্ণ মুক্ত ঘোষণা করেছেন। আল্লাহ্ তাআলা বলেনঃ
إِنَّ الَّذِينَ فَرَّقُوا دِينَهُمْ وَكَانُوا شِيَعًا لَسْتَ مِنْهُمْ فِي شَيْءٍ إِنَّمَا أَمْرُهُمْ إِلَى اللَّهِ
‘‘নিশ্চয়ই যারা নিজেদের দ্বীনকে খন্ড-বিখন্ড করেছে এবং বিভিন্ন দলে-উপদলে বিভক্ত হয়ে পড়েছে, তাদের সাথে আপনার কোন সম্পর্ক নেই। তাদের ব্যাপারটি আল্লাহর নিকট সোপর্দ রয়েছে’’। (সূরা আনআমঃ ১৫৯)
[2] - সহীহ মুসলিম। অধ্যায়ঃ কিতাবুল আকযীয়া।
[3] - আবু দাউদ, অধ্যায়ঃ কিতাবুস্ সুন্নাহ, তিরমিযী, অধ্যায়ঃ কিতাবুল ইল্ম। ইমাম তিরমিযী বলেনঃ হাদীছটি হাসান সহীহ। মুসনাদে আহমাদ, (৪/১২৬), মাজমুওয়ায়ে ফাতাওয়া (১০/ ৩৫৪)।
[4] - তিরমিযীঃ কিতাবুল ঈমান, হাকেমঃ কিতাবুল ইল্ম। তিরমিযী হাসান বলেছেন। সাহেবে তুহ্ফ বলেনঃ হাদীছের সনদে রয়েছে আব্দুর বিয়াদ আফরিকী। তিনি হচ্ছেন যঈফ। তবে ইমাম তিরমিযী অন্যান্য সহীহ হাদীছের মাধ্যমে সমর্থিত হওয়ার কারণেই হাসান বলেছেন। দেখুনঃ তুহ্ফাতুল আহ্ওয়াযী, (৩/হাদীছ নং-২৩৬৮)