উত্তরঃ বনী আদমের যখন মওতের টান এসে যায় এবং মালাকুল মাওতকে চোখের সামনে উপস্থিত দেখতে পায় তখন তার জন্যে তাওবার সুযোগ শেষ হয়ে যায়। এ সময় তাওবা করলেও কোন কাজ হবে না। যেমন আল্লাহ্ তাআলা বলেনঃ
إِنَّمَا التَّوْبَةُ عَلَى اللَّهِ لِلَّذِينَ يَعْمَلُونَ السُّوءَ بِجَهَالَةٍ ثُمَّ يَتُوبُونَ مِنْ قَرِيبٍ فَأُوْلَئِكَ يَتُوبُ اللَّهُ عَلَيْهِمْ
অবশ্যই আল্লাহ তাদের তাওবা কবুল করবেন যারা ভুল বশতঃ মন্দকাজ করে, অতঃপর অনতিবিলম্বে তওবা করে, এরাই হলো সে সব লোক যাদেরকে আল্লাহ ক্ষমা করে দেন’’। (সূরা নিসাঃ ১৭)
সাহাবীগণ এব্যাপারে একমত হয়েছেন যে, পাপ কাজে লিপ্ত প্রত্যেক ব্যক্তিই জাহেল তথা মূর্খ। চাই সে পাপ কাজ করার সময় হারাম জেনে ইচ্ছাকৃতভাবে পাপ কাজে লিপ্ত হোক বা না জেনে এবং অনিচ্ছাকৃতভাবে লিপ্ত হোক। যেহেতু মূর্খতা বশতঃ মানুষ পাপ কাজে লিপ্ত হয়ে থাকে, তাই মৃত্যুর অল্প সময় পূর্বে এবং মওতের আলামত প্রকাশিত হওয়ার পূর্বে যদি তাওবা করে তখন তার তাওবা কবুল হবে। এ ক্ষেত্রে মৃত্যুর কয়েক বছর পূর্বে তাওবা করা আর কয়েক মিনিট পূর্বে তাওবা করা একই কথা। কারণ মৃত্যুর পূর্বে যা কিছু হবে, তা মৃত্যুর অতি নিকটবর্তী সময়েই হয়েছে বলে ধরতে হবে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো বলেনঃ
(إِنَّ اللَّهَ يَقْبَلُ تَوْبَةَ الْعَبْدِ مَا لَمْ يُغَرْغِرْ)
‘‘আল্লাহ্ তাআলা বান্দার তাওবা ততক্ষণ পর্যন্ত কবুল করেন, যতক্ষণ না তার মৃত্যুর গড়গড়ানী শুরু হয়’’।[1] এ ব্যাপারে আরো সহীহ হাদীছ বর্ণিত হয়েছে।
আর বান্দা যখন মালাকুল মাওতের ভয়াবহ চেহারা দেখবে, তার রূহ বক্ষদেশ থেকে বের হয়ে কন্ঠণালীতে পৌঁছে যাবে এবং মরণের গড়গড়ানী শুরু হবে ও প্রাণ বের হয়ে যাওয়ার উপক্রম হবে, তখন কোন প্রকার তাওবা কবুল হবে না এবং মৃত্যু হতে পলায়নের কোন সুযোগও থাকবে না। আল্লাহ্ তাআলা বলেনঃ
(وَلاَتَ حِينَ مَنَاصٍ)
‘‘কিন্তু তখন পরিত্রাণের কোন উপায় ছিল না’’। (সূরা সোয়াদঃ ৩) আল্লাহ্ তাআলা বলেনঃ
(وَلَيْسَتِ التَّوْبَةُ لِلَّذِينَ يَعْمَلُونَ السَّيِّئَاتِ حَتَّى إِذَا حَضَرَ أَحَدَهُمُ الْمَوْتُ قَالَ إِنِّي تُبْتُ الآنَ)
‘‘আর তাদের জন্য ক্ষমা নেই, যারা ঐ পর্যন্ত পাপ করতে থাকে যখন তাদের কারো নিকট মৃত্যু উপস্থিত হয়, তখন বলেঃ নিশ্চয়ই আমি এখন তাওবা করছি’’। (সূরা নিসাঃ ১৮)