উত্তরঃ মনে রাখবেন যে, উপরোক্ত চারটি অপরাধ ও অনুরূপ পাপ কর্ম মানুষের কাছে বাহ্যিক দৃষ্টিতে কর্মে কুফরী মনে হলেও তা মূলতঃ كفرعملي তথা কর্মগত কুফরী নয়। তবে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের মাধ্যমে তা সংঘটিত হয় বলে মানুষের কাছে কুফরে আমলী মনে হয়। মূলতঃ তা কুফরে আমলী নয়; বরং তা প্রকৃত كفر أكبر অর্থাৎ বড় কুফরী। কেননা মানুষ এ ধরণের পাপকাজ তখনই করতে পারে, যখন তার অন্তর থেকে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস, একনিষ্ঠতা, ভালাবাসা ও আনুগত্য সম্পূর্ণরূপে উঠে যায়। বাহ্যিকভাবে কুফরে আমলী বা কর্মগত কুফর মনে হলেও তা প্রকৃতপক্ষে কুফরে এতেকাদী তথা বিশ্বাসগত কুফরকে আবশ্যক করে। বেদীন মুনাফেক অথবা অবাধ্য সীমালংঘনকারী ব্যতীত অন্য কেউ এ ধরণের কাজ করতে পারে না। মুনাফেকদেরকে তাবুকের যুদ্ধে কুফরে এতেকাদীই কুফরী বাক্য উচ্চারণ করতে উৎসাহিত করেছিল। যেমন কুরআনে উল্লেখিত হয়েছেঃ
وَلَقَدْ قَالُوا كَلِمَةَ الْكُفْرِ وَكَفَرُوا بَعْدَ إِسْلاَمِهِمْ وَهَمُّوا بِمَا لَمْ يَنَالُوا
‘‘অথচ নিশ্চয়ই তারা কুফরীর কথা বলেছিল এবং নিজেরা ইসলাম গ্রহণের পর কাফের হয়ে গেল। আর তারা এমন বিষয়ের পরিকল্পনা করেছিল, যা তারা কার্যকরী করতে পারে নি’’। (সূরা তাওবাঃ ৭৪) তাদেরকে যখন এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হল, তখন তারা বললঃ
إِنَّمَا كُنَّا نَخُوضُ وَنَلْعَبُ
‘‘আমরা তো শুধু আলাপ-আলোচনা ও হাসি-তামাসা করছিলাম’’। (সূরা তাওবাঃ ৬৫) তখন আল্লাহ্ তাআ’লা আরও বললেনঃ
قُلْ أَبِاللَّهِ وَآيَاتِهِ وَرَسُولِهِ كُنْتُمْ تَسْتَهْزِئُونَ * لاَ تَعْتَذِرُوا قَدْ كَفَرْتُمْ بَعْدَ إِيمَانِكُمْ
‘‘আপনি বলে দিনঃ তবে কি তোমরা আল্লাহ্, তাঁর আয়াতসমূহ এবং তাঁর রাসূলের সাথে হাসি-তামাসা করছিলে? তোমরা ওযর আপত্তি পেশ করো না। তোমরা তো ঈমান আনয়নের পর কুফরী করেছ’’। (সূরা তাওবাঃ ৬৫-৬৬) আর আমরা সর্বাবস্থায় ছোট কুফরীর পরিচয় এ ভাবে দেই নি যে, উহা হচ্ছে كفرعملي তথা আমলে কুফরী; বরং যে আমলটি অন্তরের বিশ্বাসের সাথে কোন সম্পর্ক রাখে না কিংবা অন্তরের বিশ্বাস বা কর্মকে ভঙ্গ করে না, তাকেই আমরা কুফরে আমল হিসাবে আখ্যায়িত করেছি।