উত্তরঃ আমলনামা পেশ এবং হাশরের মাঠের হিসাব সম্পর্কে অনেক হাদীছ এসেছে। নিম্নে আমরা কয়েকটি হাদীছ বর্ণনা করব। আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ
(مَنْ نُوقِشَ الْحِسَابَ عُذِّبَ قَالَتْ: قُلْتُ أَلَيْسَ يَقُولُ اللَّهُ تَعَالَى ( فَسَوْفَ يُحَاسَبُ حِسَابًا يَسِيرًا) قَالَ ذَلِكِ الْعَرْضُ)
‘‘যাকে হিসাব নেয়ার জন্য পাকড়াও করা হবে তাকে শাস্তি দেয়া হবে। আয়েশা (রাঃ) বলেনঃ আমি বললামঃ আল্লাহ্ তাআলা কি বলেন নি, ‘‘তার অতি সহজ হিসাব নেয়া হবে?’’। তিনি বললেনঃ ওটা কেবল পেশ করা’’।[1]
(يَقُولُ يُجَاءُ بِالْكَافِرِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فَيُقَالُ لَهُ أَرَأَيْتَ لَوْ كَانَ لَكَ مِلْءُ الأَرْضِ ذَهَبًا أَكُنْتَ تَفْتَدِي بِهِ فَيَقُولُ نَعَمْ فَيُقَالُ: لَهُ قَدْ كُنْتَ سُئِلْتَ مَا هُوَ أَيْسَرُ مِنْ ذَلِكَ * وفي رواية: فَقَدْ سَأَلْتُكَ مَا هُوَ أَهْوَنُ مِنْ هَذَا وَأَنْتَ فِي صُلْبِ آدَمَ أَنْ لاَ تُشْرِكَ بِي فَأَبَيْتَ إِلاَّ الشِّرْكَ)
‘‘কিয়ামতের দিন কাফেরকে উপস্থিত করে জিজ্ঞেস করা হবে, তোমার কাছে যদি সমস্ত যমীন পূর্ণ স্বর্ণ থাকত, তাহলে তুমি কি আজকের আযাব থেকে রেহাই পাওয়ার বিনিময়ে তা দিয়ে দিতে? সে বলবেঃ হ্যাঁ অবশ্যই দিয়ে দিতাম। তখন তাকে বলা হবেঃ তোমার কাছে তো এর চেয়ে অধিক সহজ বিষয়ের দাবী করা হয়েছিল। অন্য বর্ণনায় আছে, তুমি যখন আদমের পৃষ্ঠে ছিলে তখন তোমার কাছে আমি এর চেয়ে অনেক সহজ একটি জিনিষ চেয়েছিলাম। সেটি হচ্ছে তুমি আমার সাথে কাউকে শরীক করবে না। কিন্তু তুমি তা মানতে অস্বীকার করেছিলে এবং আমার সাথে শরীক করাকেই বেছে নিয়েছিলে’’।[2] নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো বলেনঃ
(مَا مِنْكُمْ أَحَدٌ إلاَّ سَيُكَلِّمُهُ رَبُّهُ لَيْسَ بَيْنَهُ وَبَيْنَهُ تُرْجُمَانٌ فَيَنْظُرُ أَيْمَنَ مِنْهُ فَلاَ يَرَى إِلاَّ مَا قَدَّمَ مِنْ عَمَلِهِ وَيَنْظُرُ أَشْأَمَ مِنْهُ فَلاَ يَرَى إِلاَّ مَا قَدَّمَ وَيَنْظُرُ بَيْنَ يَدَيْهِ فَلاَ يَرَى إِلاَّ النَّارَ تِلْقَاءَ وَجْهِهِ فَاتَّقُوا النَّارَ وَلَوْ بِشِقِّ تَمْرَةٍ وَلَوْ بِكَلِمَةٍ طَيِّبَةٍ)
‘‘তোমাদের প্রত্যেকের সাথেই আল্লাহ্ তাআলা কথা বলবেন। আল্লাহর মধ্যে ও বান্দার মধ্যে দোভাষী থাকবে না। মানুষ তার ডান দিকে দেখবে। তার আমল ব্যতীত অন্য কিছু দেখতে পাবে না। সে তার বাম দিকে তাকিয়ে দেখবে। তার আমল ব্যতীত অন্য কিছু দেখতে পাবে না। সে তার সামনের দিকে তাকিয়ে দেখবে। সে তার চেহারার সামনে জাহান্নাম ছাড়া অন্য কিছু দেখতে পাবে না। সুতরাং তোমরা এক টুকরা খেজুরের বিনিময়ে হলেও এবং একটি ভাল কথার বিনিময়ে হলেও জাহান্নামের আগুন হতে বাঁচার চেষ্টা কর’’।[3] নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও বলেনঃ
(يَدْنُو أَحَدُكُمْ مِنْ رَبِّهِ حَتَّى يَضَعَ كَنَفَهُ عَلَيْهِ فَيَقُولُ عَمِلْتَ كَذَا وَكَذَا فَيَقُولُ نَعَمْ وَيَقُولُ عَمِلْتَ كَذَا وَكَذَا فَيَقُولُ نَعَمْ فَيُقَرِّرُهُ ثُمَّ يَقُولُ إِنِّي سَتَرْتُ عَلَيْكَ فِي الدُّنْيَا فَأَنَا أَغْفِرُهَا لَكَ الْيَوْمَ)
‘‘তোমাদের কেউ তার প্রতিপালকের এত নিকটবর্তী হবে যে, আল্লাহ্ তার কাঁধে স্বীয় পর্দা রেখে বলবেনঃ তুমি কি এই এই কাজ করেছ? সে স্বীকার করবে এবং বলবেঃ হ্যাঁ, আমি এই এই কাজ করেছি। আল্লাহ্ও তাকে স্বীকার করাবেন। অতঃপর আল্লাহ্ বলবেনঃ আমি দুনিয়াতে তোমার এই কাজগুলো গোপন রেখেছি। আর আমি আজ তোমাকে এগুলো ক্ষমা করে দিব’’।[4]
[2] - বুখারী, অধ্যায়ঃ কিতাবুর্ রিকাক।
[3] - বুখারী, অধ্যায়ঃ কিতাবুত্ তাওহীদ।
[4] - বুখারী, অধ্যায়ঃ কিতাবুত্ তাওহীদ।