উত্তরঃ সিঙ্গায় ফুঁ দেয়ার অনেক দলীল রয়েছে। আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ
وَنُفِخَ فِي الصُّورِ فَصَعِقَ مَنْ فِي السَّمَاوَاتِ وَمَنْ فِي الْأَرْضِ إِلَّا مَنْ شَاءَ اللَّهُ ثُمَّ نُفِخَ فِيهِ أُخْرَى فَإِذَا هُمْ قِيَامٌ يَنْظُرُونَ
‘‘এবং শিঙ্গায় ফুঁ দেয়া হবে। ফলে আকাশ ও যমিনে যারা আছে সকলেই বেহুঁশ হয়ে যাবে। তবে আল্লাহ যাকে ইচ্ছা করেন, সে ব্যতীত। অতঃপর আবার শিঙ্গায় ফুঁ দেয়া হবে। তৎক্ষনাৎ তারা দন্ডায়মান হয়ে দেখতে থাকবে’’। (সূরা যুমারঃ ৬৮ এই আয়াতে দুইবার শিঙ্গায় ফুঁ দেয়ার কথা বর্ণিত হয়েছে। একবার ফুঁ দেয়ার সাথে সাথে সকলেই বেহুঁশ হয়ে যাবে। দ্বিতীয়বার ফুঁ দেয়ার সাথে সাথে সকলেই জীবিত হয়ে উঠবে। আল্লাহ্ তাআলা আরো বলেনঃ
وَيَوْمَ يُنْفَخُ فِي الصُّورِ فَفَزِعَ مَنْ فِي السَّمَوَاتِ وَمَنْ فِي الْأَرْضِ إِلاَّ مَنْ شَاءَ اللَّهُ
‘‘আর সেদিন শিঙ্গায় ফুঁ দেয়া হবে। ফলে আকাশ ও যমিনে যারা আছে সকলেই ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়বে। তবে আল্লাহ যাকে ইচ্ছা করেন, সে ব্যতীত’’। (সূরা নামলঃ ৮৭)
যারা এই আয়াতে الفزع শব্দের ব্যাখ্যা الصعق দ্বারা করেছেন, তাদের মতে এখানে الفزع দ্বারা প্রথম ফুৎকার উদ্দেশ্য, যা সূরা যুমারের ৬৮নং আয়াতে উল্লেখিত হয়েছে। মুসলিম শরীফের হাদীছ থেকেও এর সমর্থন পাওয়া যায়। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ
ثُمَّ يُنْفَخُ فِي الصُّورِ فَلَا يَسْمَعُهُ أَحَدٌ إِلَّا أَصْغَى لَهُ وَأَوَّلُ مَنْ يَسْمَعُهُ رَجُلٌ يَلُوطُ حَوْضَهُ فَيَصْعَقُ ثُمَّ لَا يَبْقَى أَحَدٌ إِلَّا صَعِقَ ثُمَّ يُرْسِلُ اللَّهُ أَوْ يُنْزِلُ اللَّهُ قَطْرًا كَأَنَّهُ الطَّلُّ فَتَنْبُتُ مِنْهُ أَجْسَادُ النَّاسِ ثُمَّ يُنْفَخُ فِيهِ أُخْرَى فَإِذَا هُمْ قِيَامٌ يَنْظُرُونَ
‘‘অতঃপর শিঙ্গায় ফুঁ দেয়া হবে। শিঙ্গায় ফুঁ দেয়া মাত্রই প্রত্যেক ব্যক্তি তা কান পেতে শুনার চেষ্টা করবে। সর্বপ্রথম উটের হাওজ মেরামত রত একজন ব্যক্তি সেই শব্দ শুনতে পেয়ে বেহুঁশ হয়ে পড়ে যাবে। অতঃপর সকল মানুষ সেই শব্দ শুনে বেহুঁশ হয়ে যাবে। তারপর আল্লাহ তা’আলা শিশিরের ন্যায় এক প্রকার হালকা বৃষ্টি বর্ষণ করবেন। তাতে মানুষের দেহগুলো গজিয়ে উঠবে। পুনরায় শিঙ্গায় ফুৎকার দেয়ার সাথে সাথে সকল মানুষ আল্লাহর দরবারে হাজির হবে’’।[1] এই হাদীছে দুই ফুঁ দেয়ার কথা এসেছে। আর যারা الفزع এর ব্যাখ্যা الصعق দ্বারা করেন নি, তাদের মতে এখানে উপরোক্ত দু’টি ফুৎকার ব্যতীত তৃতীয় ফুৎকার উদ্দেশ্য, যা এ দু’টির পূবেই দেয়া হবে। শিঙ্গার দীর্ঘ হাদীছে একথার সমর্থন পাওয়া যায়। তাতে তিনটি ফুৎকারের কথা বলা হয়েছে। ভীত-সন্ত্রস্ত হওয়ার ফুৎকার, বেহুঁশ হওয়ার ফুৎকার এবং বিশ্বজাহানের প্রতিপালকের সামনে হাজির হওয়ার ফুৎকার। আল্লাহই ভাল জানেন।