প্রশ্নঃ (৯০) এবাদতের মূল বুনিয়াদের ক্ষেত্রে সকল রাসূলের দাওয়াত যে এক ছিল, তার দলীল কি?

উত্তরঃ এ ব্যাপারে কুআনের দলীলগুলো দুইভাগে বিভক্ত। সংক্ষিপ্ত ও বিস্তারিত। সংক্ষিপ্ত দলীলগুলো যেমন আল্লাহর বাণীঃ

وَلَقَدْ بَعَثْنَا فِي كُلِّ أُمَّةٍ رَسُولاً أَنِ اُعْبُدُوا اللَّهَ وَاجْتَنِبُوا الطَّاغُوتَ

‘‘এবং প্রত্যেক জাতির নিকট আমি একজন করে রাসূল প্রেরণ করেছি এই কথার দাওয়াত দেয়ার জন্য যে, তোমরা আল্লাহর ইবাদত কর এবং তাগুত থেকে দূরে থাক’’। (সূরা নাহল- ৩৬) আল্লাহ্ তাআলা বাণীঃ

وَمَا أَرْسَلْنَا مِنْ قَبْلِكَ مِنْ رَسُولٍ إِلاَّ نُوحِي إِلَيْهِ أَنَّهُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنَا فَاعْبُدُونِ

‘‘আপনার পূর্বে আমি যে রাসূলই প্রেরণ করেছি, তার প্রতি এ প্রত্যাদেশই প্রেরণ করেছি যে, আমি ব্যতীত কোন সত্য মা’বুদ নেই। সুতরাং তোমরা আমারই এবাদত কর’’। (সূরা আম্বীয়াঃ ২৫) আল্লাহ্ তা’আলার বাণীঃ

وَاسْأَلْ مَنْ أَرْسَلْنَا مِنْ قَبْلِكَ مِنْ رُسُلِنَا أَجَعَلْنَا مِنْ دُونِ الرَّحْمَنِ آلِهَةً يُعْبَدُونَ

‘‘আপনার পূর্বে আমি যেসব রাসূল প্রেরণ করেছিলাম তাদেরকে আপনি জিজ্ঞেস করুন। আমি কি দয়াময় আল্লাহ ব্যতীত কোন মা’বুদ স্থির করেছিলাম যাদের এবাদত করা যায়?’’ (সূরাঃ যুখরুফঃ ৪৫) এ ছাড়া আরো অনেক আয়াত রয়েছে।

আর বিস্তারিত দলীলগুলো হচ্ছে যেমন আল্লাহর বাণীঃ

وَلَقَدْ أَرْسَلْنَا نُوحًا إِلَى قَوْمِهِ فَقَالَ يَا قَوْمِ اعْبُدُوا اللَّهَ مَا لَكُمْ مِنْ إِلَهٍ غَيْرُهُ

‘‘আমি নূহকে পাঠিয়েছিলাম তাঁর সম্প্রদায়ের নিকট, তিনি বলেছিলেনঃ হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা আল্লাহর এবাদত কর। তিনি ব্যতীত তোমাদের অন্য কোন সত্য মা’বুদ নেই’’। (সূরা মু’মিনূনঃ ২৩) আল্লাহ্ তাআলার বাণীঃ

وَإِلَى ثَمُودَ أَخَاهُمْ صَالِحًا قَالَ يَا قَوْمِ اعْبُدُوا اللَّهَ مَا لَكُمْ مِنْ إِلَهٍ غَيْرُهُ

‘‘আর আমি সামুদ জাতির প্রতি তাদের ভাই সালেহকে পাঠিয়েছিলাম। তিনি বললেনঃ হে আমার জাতি! তোমরা আল্লাহর এবাদত কর। তিনি ব্যতীত তোমাদের অন্য কোন সত্য মা’বুদ নেই’’। (সূরা হুদঃ ৬১) আল্লাহ্ তাআলা বাণীঃ

وَإِلَى عَادٍ أَخَاهُمْ هُودًا قَالَ يَا قَوْمِ اعْبُدُوا اللَّهَ مَا لَكُمْ مِنْ إِلَهٍ غَيْرُهُ

‘‘আর আমি আদ সম্প্রদায়ের প্রতি তাদের ভাই সালেহকে পাঠিয়েছিলাম। তিনি বললেনঃ হে আমার জাতি! তোমরা আল্লাহর এবাদত কর। তিনি ব্যতীত তোমাদের অন্য কোন সত্য মা’বুদ নেই’’। (সূরা হুদঃ ৫০) আল্লাহ্ তাআলা বাণীঃ

وَإِلَى مَدْيَنَ أَخَاهُمْ شُعَيْبًا قَالَ يَا قَوْمِ اعْبُدُوا اللَّهَ مَا لَكُمْ مِنْ إِلَهٍ غَيْرُهُ

‘‘আর আমি মাদায়েনের অধিবাসীর প্রতি তাদের ভাই সালেহকে পাঠিয়েছিলাম। তিনি বললেনঃ হে আমার জাতি! তোমরা আল্লাহর এবাদত কর। তিনি ব্যতীত তোমাদের অন্য কোন সত্য মা’বুদ নেই’’। (সূরা হুদঃ ৮৪) আল্লাহ্ তাআলা বাণীঃ

وَإِذْ قَالَ إِبْرَاهِيمُ لأَبِيهِ وَقَوْمِهِ إِنَّنِي بَرَاءٌ مِمَّا تَعْبُدُونَ * إِلاَّ الَّذِي فَطَرَنِي

‘‘স্মরণ করুন সেই সময়ের কথা, যখন ইবরাহীম তাঁর পিতা এবং সম্প্রদায়কে বলেছিলঃ তোমরা যাদের উপাসনা কর তাদের সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই। সম্পর্ক আছে শুধু তারই সাথে যিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন’’। (সূরা যুখরুফঃ ২৬-২৭) কুরআনে আল্লাহ্ তাআ’লা মুসা (আঃ) এর কথা উল্লেখ করে বলেনঃ

إِنَّمَا إِلَهُكُمُ اللَّهُ الَّذِي لاَ إِلَهَ إلاَّ هُوَ وَسِعَ كُلَّ شَيْءٍ عِلْمًا

‘‘তোমাদের মা’বুদ তো শুধুমাত্র আল্লাহই, যিনি ছাড়া অন্য কোন সত্য মা’বুদ নেই। তার জ্ঞান সর্ববিষয়ে ব্যাপ্ত’’। (সূরা তোহাঃ ৯৮) আল্লাহ্ তাআ’লা ঈসা (আঃ)এর কথা উল্লেখ করে বলেনঃ

وَقَالَ الْمَسِيحُ يَا بَنِي إِسْرَائِيلَ اعْبُدُوا اللَّهَ رَبِّي وَرَبَّكُمْ إِنَّهُ مَنْ يُشْرِكْ بِاللَّهِ فَقَدْ حَرَّمَ اللَّهُ عَلَيْهِ الْجَنَّةَ وَمَأْوَاهُ النَّارُ

‘‘মাসীহ (ঈসা) বললেনঃ হে বনী ইসরাঈলগণ! তোমরা আল্লাহর এবাদত কর। যিনি আমার প্রতিপালক এবং তোমাদেরও প্রতিপালক। নিশ্চয় যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে শরীক করবে তার জন্য আল্লাহ জান্নাত হারাম করে দিবেন, তার স্থান হবে জাহান্নাম’’। (সূরা মায়েদাঃ ৭২) আল্লাহ তাআলা আরও বলেনঃ

قُلْ إِنَّمَا أَنَا مُنْذِرٌ وَمَا مِنْ إِلَهٍ إِلاَّ اللَّهُ الْوَاحِدُ الْقَهَّارُ

‘‘হে নবী আপনি বলুনঃ আমি তো একজন সতর্ককারী মাত্র। এক পরাক্রমশালী আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কোন সত্য মা’বুদ নেই’’। (সূরা সোয়াদঃ ৬৫) এ ছাড়া রয়েছে আরো অনেক আয়াত।