উত্তরঃ বিভিন্ন অর্থকে শামিল করার দিক থেকে আসমায়ে হুস্না তথা আল্লাহর সুন্দর নামসমূহ চার প্রকার। যথাঃ
প্রথমঃ এমন একটি খাস বা নির্দিষ্ট নাম, যা অন্যান্য সকল আসমায়ে হুসনার অর্থকে শামিল করে। আর সেই খাস নামটি হচ্ছেঃ আল্লাহ (الله)। এ জন্যই অন্যান্য সকল নাম ‘আল্লাহ্’ নামের পরে সিফাত হিসাবে উল্লেখ করা হয়। আল্লাহ্ তা’আলার বাণীঃ
هُوَ اللَّهُ الْخَالِقُ الْبَارِئُ الْمُصَوِّرُ
‘‘তিনিই আল্লাহ خَالِق (সৃষ্টিকারী), بَارِي (উদ্ভাবক) এবং مُصَوِّر (রূপদাতা)’’। (সূরা হাশরঃ ২৪) এখানে ‘সৃষ্টিকারী’, ‘উদ্ভাবক’ এবং ‘রূপদাতা’- এই তিনটি নাম ‘আল্লাহ্’ নামের অনুগামী হিসাবে উল্লেখিত হয়েছে। কিন্তু ‘আল্লাহ্’ নামটি অন্য কোন নামের অনুগামী হিসাবে উল্লেখ হয় না।
দ্বিতীয়ঃ আল্লাহর এমন কতিপয় নাম রয়েছে, যা আল্লাহ্ তা’আলার সত্বাগত সিফাতকে আবশ্যক করে। যেমন আল্লাহ্ তা’আলার سَمِيْع ‘শ্রবণকারী’ নামটি তাঁর শ্রবণ করা গুণটিকে আবশ্যক করে, যা সমস্ত আওয়াজকে শামিল করে। তাঁর নিকট প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য সব আওয়াজই সমান। তাঁর আর একটি নাম البصير ‘বাসীর’ অর্থাৎ সর্বদ্রষ্টা। এই নামটি আল্লাহর ‘দৃষ্টি’ গুণকে অন্তর্ভূক্ত করে। তিনি দৃশ্যমান ও অদৃশ্যমান সকল বস্ত্তই দেখেন। চাই সেটি অতি সূক্ষ্ম হোক বা প্রকাশমান হোক।
আল্লাহর আরেকটি গুণবাচক নামক হচ্ছে عليم ‘মহাজ্ঞানী’। তাঁর জ্ঞান সমস্ত বিষয়কে বেষ্টন করে আছে। আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ
لاَ يَعْزُبُ عَنْهُ مِثْقَالُ ذَرَّةٍ فِي السَّمَوَاتِ وَلاَ فِي الأَرْضِ وَلاَ أَصْغَرُ مِنْ ذَلِكَ وَلاَ أَكْبَرُ
‘‘আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে অনুপরিমাণ কোন কিছুই তাঁর অগোচর নয়; কিংবা তার চেয়ে ক্ষুদ্র অথবা বড় কিছু’’। (সূরা সাবাঃ ৩)
তাঁর আরেকটি নাম হল قَدِيرٌ (শক্তিমান) এটি সকল বিষয়ের উপর আল্লাহর ক্ষমতা থাকার প্রমাণ বহন করে। চাই সৃষ্টি করার ক্ষেত্রে হোক অথবা কোন কিছু ধ্বংস করার ব্যাপারে হোক।
তৃতীয়ঃ কিছু কিছু নাম আছে, যা আল্লাহর কর্মগত গুণাগুণের প্রমাণ বহন করে। যেমঃ خَالِق (সৃষ্টিকারী), رَازِقْ (রিযিকদাতা), بَارِي (উদ্ভাবক), مُصَوِّر (রূপদাতা) ইত্যাদি।
চতুর্থঃ আরো এমন কতিপয় নাম রয়েছে, যা প্রমাণ করে যে, আল্লাহ তা’আলা সমস্ত দোষ-ত্রুটি হতে পবিত্র। যেমন قُدُّوس (সমস্ত ত্রুটি হতে অতীব পবিত্র) سَلَام (সমস্ত দোষ-ত্রুটি হতে মুক্ত)