উত্তরঃ উদাহরণ স্বরূপ আল্লাহ্ তাআলার রাহমান ও রাহীম নাম দ্বয় উল্লেখ করা যেতে পারে। এ দু’টি নাম তাঁর দ্বারা নামকরণকৃত সত্ববা তথা সরাসরি আল্লাহর সত্ববাকে বুঝায়। আর এ দু’টি নাম তা থেকে নির্গত সিফাতকে (গুণকে) অন্তর্ভূক্ত করে। আর তা হচ্ছে আল্লাহর সীমাহীন রহমত। এমনিভাবে এ দু’টি নাম আরো অনেক সিফাতকেও আবশ্যক করে। যেমন জীবন, ক্ষমতা ইত্যাদি। অন্যান্য সকল সিফাতের ব্যাপারে একই কথা।
অপর পক্ষে মাখলুকের বিষয়টি সম্পূর্ণ ভিন্ন। দেখা যায় কখনও কোন মানুষের নাম রাখা হয় حَكيْم (মহাজ্ঞানী) অথচ সে একেবারেই মূর্খ, কারো নাম রাখা হয় حَكَمْ (ন্যায় বিচারক) অথচ সে যালেম, কারো নাম রাখা হয় عَزِيْز (সম্মানিত) অথচ সে লাঞ্জিত, কোন কোন মানুষের নাম রাখা হয় شَرِيف (অভিজাত) অথচ সে ইতর, কারো নাম রাখা হয় كَرِيْم (মর্যাদাবান) অথচ সে নিকৃষ্ট, কারো নাম রাখা হয় صَالِح (সৎকর্মপরায়ণ) অথচ সে অসৎকর্মপরায়ণ, কারো নাম রাখা হয় سَعِيْد (সৌভাগ্যবান) অথচ সে নিতান্ত হতভাগা। অনুরূপভাবে কারো নাম রাখা হয় أَسَدْ (বাঘ) অথচ সে বাঘের মত সাহসী নয়, কারো নাম রাখা হয় حَنْظَلَة (তিক্ত) অথচ সে খুবই মিষ্টভাষী, কারো নাম রাখা হয় عَلْقَمَة (এক প্রকার তিক্তফল) অথচ তার ব্যবহার তিক্ত নয়।
অপর পক্ষে আল্লাহর সুন্দর নামগুলো যে অর্থ ও তাৎপর্য বহন করে তা পরিপূর্ণভাবে আল্লাহ্ তা’আলার মধ্যে বিদ্যমান। যেমন আল্লাহ্ তা’আলার রহমত সর্বত্র সকল সৃষ্টিকে ঘিরে আছে বলেই তাঁর নাম (الرَّحْمَن الرَّحِيْم) রাহমান ও রাহীম। তিনি সকল বস্ত্ত সৃষ্টি করেছেন বলেই তাঁর নাম খালেক (خَالِقْ) সৃষ্টিকর্তা। তিনি সর্ব বিষয় অবগত আছেন বলেই তাঁর নাম (عَلِيْم) মহাজ্ঞানী। আল্লাহর সকল নামের ক্ষেত্রে একই কথা।
সুতরাং জানা গেল যে, আল্লাহর সত্ত্বা সমস্ত দোষ-ত্রুটি হতে সম্পূর্ণ মুক্ত। তিনি সেরকমই যেমন তিনি নিজের বর্ণনা দিয়েছেন। মানুষ যতই তাঁর গুণাগুণ বর্ণনা করুক না কেন, তিনি তার অনেক ঊর্ধ্বে।