আমরা দেখলাম যে, “ইঞ্জিল শরীফ” নামের পুস্তকটি কখনোই ইঞ্জিল নয়। ২৭টির মধ্যে মাত্র চারটি পুস্তক “মতানুসারে ইঞ্জিল” বলে দাবি করেছেন খৃস্টানগণ।
এ সকল ‘মতানুসারে ইঞ্জিলের’ সাথে ‘ঈসা মাসীহের ইঞ্জিলের’ মুল পার্থক্য ঈসা (আঃ)-এর উপর নাযিলকৃত মূল ইঞ্জিলটি ছিল আল্লাহর কালাম। আর প্রচলিত ‘মতানুসারে ইঞ্জিল’ চারটির মধ্যে আল্লাহর কোনো কালাম খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। এগুলির মধ্যে ঈসা মাসীহের বক্তব্যও কম। এগুলি মূলত তাঁর জীবনীগ্রন্থ। এগুলির মধ্যে ঈসা মাসীহ বিষয়ে বিভিন্ন মানুষের গালগল্প সংকলন করা হয়েছে।
দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, এরূপ প্রায় অর্ধশত “মতানুসারে ইঞ্জিল” তৃতীয় শতকের খৃস্টানদের মধ্যে প্রচলিত ছিল। এগুলির মধ্য থেকে সাধু পলের অনুসারী ত্রিত্ববাদী খৃস্টানগণ কোনোরূপ সুস্পষ্ট সনদ, ভিত্তি বা যুক্তি ছাড়া, শুধু নিজেদের পছন্দের উপর নির্ভর করে এ চারটিকে বাছাই করেন।
খৃস্টান পণ্ডিতদের লেখা এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকার biblical literature-এর বক্তব্য: As far as the New Testament is concerned, there could be no Bible without a church that created it; yet conversely, having been nurtured by the content of the writings themselves, the church selected the canon. ... Indeed, until c. AD 150, Christians could produce writings either anonymously or pseudonymously—i.e., using the name of some acknowledged important biblical or apostolic figure. The practice was not believed to be either a trick or fraud. ...
“নতুন নিয়মের বিষয়টি হলো যদি চার্চ (ধর্মগুরুদের মণ্ডলী) বাইবেল তৈরি না করত তাহলে কোনো বাইবেলই থাকতো না। অপরদিকে লিখনিগুলির বিষয়বস্তুর ভিত্তিতে চার্চই বাইবেলের বইগুলি বাছাই করেছে। ... প্রকৃত বিষয় হলো, ১৫০ খৃস্টাব্দের দিকে যে কোনো খৃস্টান নাম প্রকাশ না করে, অথবা কোনো প্রসিদ্ধ বাইবেলীয় ব্যক্তিত্ব বা যীশুর শিষ্যদের নামে বই লিখতে পারত। এরূপ কর্মকে ছলচাতুরি বা প্রতারণা বলে গণ্য করা হতো না! ...”
কি ভয়ঙ্কর কথা! ১০০/১৫০ বৎসর পরে যে কোনো খৃস্টান সম্পূর্ণ মিথ্যাভাবে একটি বই লিখে প্রচার করছে, এটি লূক লিখিত ইঞ্জিল, এটি পিতর লিখিত ইঞ্জিল... এভাবে যীশুর শিষ্যদের বা সাধুদের নামে যে যা পারছে লিখে প্রচার করছে। এরূপ কর্মকে উক্ত ধার্মিক লেখক বা সমাজের অন্য কোনো ধার্মিক খৃস্টান কেউই অন্যায় বা পাপ বলে গণ্য করছেন না! এগুলি সমাজে এভাবে ইঞ্জিল নামে প্রসিদ্ধ হওয়ার আরো ১৫০ বৎসর পর এরূপ ধার্মিক খৃস্টানগণ “যীশুর শিষ্যদের নামে ১৫০ বৎসর পরে অজ্ঞাত ধার্মিক মানুষদের লেখা” অর্ধশত ইঞ্জিল থেকে শুধু বিষয়বস্তুর দিকে তাকিয়ে, বিষয়বস্তুগুলি নিজেদের পছন্দমত কিনা তা দেখে, ৪টি ইঞ্জিল বেছে নিয়ে “নতুন নিয়ম”-এর অন্তর্ভুক্ত করলেন।
মাইক্রোসফট এনকার্টায় Bible আর্টিকেলের বক্তব্য: The27books of theNew Testament are only a fraction of the literary production of the Christian communities in their first three centuries. ... As many as 50 Gospels were in circulation during this time. “খৃস্টান সম্প্রদায়গুলি প্রথম তিন শতকে যে সকল ধর্মগ্রন্থ লিখেছিল তার মধ্যে মাত্র কয়েকটি হলো নতুন নিয়মের ২৭টি বই। তখন ৫০টির মত ইঞ্জিল তাদের মধ্যে প্রচলিত ছিল।”