উম্মুল ফাদল বিনতে হারিস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা সূত্রে বর্ণনা করেন যে,

«أَنَّ نَاسًا تَمَارَوْا عِنْدَهَا يَوْمَ عَرَفَةَ فِي صَوْمِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَ بَعْضُهُمْ: هُوَ صَائِمٌ، وَقَالَ بَعْضُهُمْ: لَيْسَ بِصَائِمٍ، فَأَرْسَلَتْ إِلَيْهِ بِقَدَحِ لَبَنٍ وَهُوَ وَاقِفٌ عَلَى بَعِيرِهِ، فَشَرِبَهُ»

“কিছুসংখ্যক লোক ‘আরাফাতের দিনে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাওম পালন সম্পর্কে তাঁর কাছে সন্দেহ প্রকাশ করে। তাদের কেউ বলল, তিনি সাওম পালন করেছেন। আর কেউ বলল, না, তিনি করেন নি। এতে উম্মুল ফাদল রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু এক পেয়ালা দুধ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট পাঠিয়ে দিলেন এবং তিনি তা পান করে নিলেন। এ সময় তিনি উঠের পিঠে (‘আরাফাতে) উকূফ অবস্থায় ছিলেন।”[1]

মায়মূনা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত যে, তিনি বললেন,

«إِنَّ النَّاسَ شَكُّوا فِي صِيَامِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمَ عَرَفَةَ، فَأَرْسَلَتْ إِلَيْهِ مَيْمُونَةُ بِحِلَابِ اللَّبَنِ، وَهُوَ وَاقِفٌ فِي الْمَوْقِفِ، فَشَرِبَ مِنْهُ وَالنَّاسُ يَنْظُرُونَ إِلَيْهِ»

“কিছু সংখ্যক লোক ‘আরাফাতের দিনে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাওম পালন সম্পর্কে সন্দেহ প্রকাশ করলে তিনি স্বল্প পরিমাণ দুধ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট পাঠিয়ে দিলে তিনি তা পান করলেন ও লোকেরা তা প্রত্যক্ষ করছিল। তখন তিনি (‘আরাফাতে) অবস্থান স্থলে উকূফ করছিলেন”।[2]

আবু কাতাদা আল-আনসারী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত,

»أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سُئِلَ عَنْ صَوْمِهِ؟ قَالَ: فَغَضِبَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَ عُمَرُ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ: رَضِينَا بِاللهِ رَبًّا، وَبِالْإِسْلَامِ دِينًا، وَبِمُحَمَّدٍ رَسُولًا، وَبِبَيْعَتِنَا بَيْعَةً. قَالَ: فَسُئِلَ عَنْ صِيَامِ الدَّهْرِ؟ فَقَالَ: لَا صَامَ وَلَا أَفْطَرَ أَوْ مَا صَامَ وَمَا أَفْطَرَ قَالَ: فَسُئِلَ عَنْ صَوْمِ يَوْمَيْنِ وَإِفْطَارِ يَوْمٍ؟ قَالَ: وَمَنْ يُطِيقُ ذَلِكَ» قَالَ: وَسُئِلَ عَنْ صَوْمِ يَوْمٍ، وَإِفْطَارِ يَوْمَيْنِ؟ قَالَ: لَيْتَ أَنَّ اللهَ قَوَّانَا لِذَلِكَ» قَالَ: وَسُئِلَ عَنْ صَوْمِ يَوْمٍ، وَإِفْطَارِ يَوْمٍ؟ قَالَ: ذَاكَ صَوْمُ أَخِي دَاوُدَ - عَلَيْهِ السَّلَام قَالَ: وَسُئِلَ عَنْ صَوْمِ يَوْمِ الِاثْنَيْنِ؟ قَالَ: «ذَاكَ يَوْمٌ وُلِدْتُ فِيهِ، وَيَوْمٌ بُعِثْتُ أَوْ أُنْزِلَ عَلَيَّ فِيهِ قَالَ: فَقَالَ: صَوْمُ ثَلَاثَةٍ مِنْ كُلِّ شَهْرٍ، وَرَمَضَانَ إِلَى رَمَضَانَ، صَوْمُ الدَّهْرِ قَالَ: وَسُئِلَ عَنْ صَوْمِ يَوْمِ عَرَفَةَ؟ فَقَالَ: يُكَفِّرُ السَّنَةَ الْمَاضِيَةَ وَالْبَاقِيَةَ قَالَ: وَسُئِلَ عَنْ صَوْمِ يَوْمِ عَاشُورَاءَ؟ فَقَالَ: يُكَفِّرُ السَّنَةَ الْمَاضِيَةَ وَفِي هَذَا الْحَدِيثِ مِنْ رِوَايَةِ شُعْبَةَ قَالَ: وَسُئِلَ عَنْ صَوْمِ يَوْمِ الِاثْنَيْنِ وَالْخَمِيسِ؟ فَسَكَتْنَا عَنْ ذِكْرِ الْخَمِيسِ لَمَّا نُرَاهُ وَهْمًا»

“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাওম সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলো। এতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অন্তুষ্ট হলেন। তখন উমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বললেন, আমরা আল্লাহর ওপর (আমাদের) রব হিসেবে, ইসলামের ওপর (আমাদের) দীন হিসেবে, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর (আমাদের) রাসূল হিসেবে এবং আমাদের কৃত বায়‘আতের ওপর আমরা সন্তুষ্ট। অতঃপর সারা বছর সাওম পালন সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলো। তিনি বললেন, সে ব্যক্তি সাওম পালন করে নি, ইফতারও করে নি বা সে ব্যক্তি সাওম পালন করে নি এবং সাওমহীনও থাকে নি। অতঃপর একাধারে দুই দিন সাওম পালন করা ও এক দিন সাওম পালন না করা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলো। তিনি বললেন এভাবে সাওম পালনের সামর্থ্য কার আছে? অতঃপর একদিন সাওম পালন ও দু দিন সাওম ত্যাগ করা সস্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলো। তিনি বললেন, আল্লাহ যেন আমাদের এরূপ সাওম পালনের সামর্থ্য দান করেন। অতঃপর একদিন সাওম পালন করা ও একদিন না করা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলো। তিনি বললেন, তা আমার ভাই দাঊদ আলাইহিস সালামের সাওম। অতঃপর সোমবারের সাওম সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বললেন, এই দিন আমি জন্মগ্রহণ করেছি এবং এই দিনই আমি নবুওয়াত প্রাপ্ত হয়েছি বা আমার ওপর (কুরআন) নাযিল করা হয়েছে। আরও বললেন, প্রতি মাসে তিন দিন এবং গোটা রমযান মাস সাওম পালন করাই হলো সারা বছর সাওম পালনের সমতুল্য। অতঃপর ‘আরাফাহ দিবসের সাওম সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বললেন, তাতে পূর্ববর্তী বছর ও পরবর্তী বছরের শুনাহের কাফফারা হয়ে যাবে। অতঃপর ‘আশুরার সাওম সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বললেন, তাতে বিগত বছরের গুনাহের কাফফারা হয়ে যাবে। এই হাদীসে শু‘বা রহ.-এর বর্ণনায় আরও আছে, অতঃপর সোমবার ও বৃহস্প্রতিবারের সাওম সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলো। কিন্তু আমাদের মতে বৃহস্পতিবারের কথা ভুলবশত বর্ণিত হয়েছে, তাই আমরা তার উল্লেখ থেকে বিরত থাকলাম।”[3]

>
[1] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯৮৮, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১২৩।

[2] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯৮৯, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১২৪।

[3] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১৬২। ইবন হিব্বান, ৩৬৩৯।