আনাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এ বর্ণনা করেছেন।
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«نَهَى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنِ الوِصَالِ فِي الصَّوْمِ» فَقَالَ لَهُ رَجُلٌ مِنَ المُسْلِمِينَ: إِنَّكَ تُوَاصِلُ يَا رَسُولَ اللَّهِ، قَالَ: وَأَيُّكُمْ مِثْلِي، إِنِّي أَبِيتُ يُطْعِمُنِي رَبِّي وَيَسْقِينِ، فَلَمَّا أَبَوْا أَنْ يَنْتَهُوا عَنِ الوِصَالِ، وَاصَلَ بِهِمْ يَوْمًا، ثُمَّ يَوْمًا، ثُمَّ رَأَوُا الْهِلَالَ، فَقَالَ: لَوْ تَأَخَّرَ لَزِدْتُكُمْ كَالتَّنْكِيلِ لَهُمْ حِينَ أَبَوْا أَنْ يَنْتَهُوا»
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিরতিহীন সাওম পালন করতে নিষেধ করলে মুসলিমদের এক ব্যক্তি তাঁকে বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি যে বিরতীহীন সাওম পালন করেন? তিনি বললেন, তোমাদের মধ্যে আমার মত কে আছ? আমি এমনভাবে রাত যাপন করি যে, আমার রব আমাকে পানাহার করান। এরপর যখন লোকেরা সাওমে বেসাল করা থেকে বিরত থাকল না, তখন তিনি তাদেরকে নিয়ে দিনের পর দিন সাওমে বেসাল করতে থাকলেন। এরপর লোকেরা যখন চাঁদ দেখতে পেল তখন তিনি বললেন, যদি চাঁদ উঠতে আরও দেরী হতো তবে আমি তোমাদেরকে নিয়ে আরও বেশি দিন সাওমে বেসাল করতাম। এ কথা তিনি তাদেরকে শাস্তি প্রদানস্বরূপ বলেছিলেন, যখন তারা বিরত থাকতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল”।[1]
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন,
«إِيَّاكُمْ وَالوِصَال مَرَّتَيْنِ قِيلَ: إِنَّكَ تُوَاصِلُ، قَالَ: إِنِّي أَبِيتُ يُطْعِمُنِي رَبِّي وَيَسْقِينِ، فَاكْلَفُوا مِنَ العَمَلِ مَا تُطِيقُونَ»
“তোমরা সাওমে বেসাল পালন করা থেকে বিরত থাক (বাক্যটি তিনি) দু’বার বললেন। তাঁকে বলা হলো, আপনি তো সাওমে বেসাল করেন। তিনি বললেন, আমি এভাবে রাত যাপন করি যে, আমার রব আমাকে পানাহার করিয়ে থাকেন। তোমরা তোমাদের সাধ্যানুযায়ী ‘আমল করার দায়িত্ব গ্রহণ করো”।[2]
আনাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«كَانَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، يُصَلِّي فِي رَمَضَانَ، فَجِئْتُ فَقُمْتُ إِلَى جَنْبِهِ وَجَاءَ رَجُلٌ آخَرُ، فَقَامَ أَيْضًا حَتَّى كُنَّا رَهْطًا فَلَمَّا حَسَّ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّا خَلْفَهُ جَعَلَ يَتَجَوَّزُ فِي الصَّلَاةِ، ثُمَّ دَخَلَ رَحْلَهُ، فَصَلَّى صَلَاةً لَا يُصَلِّيهَا عِنْدَنَا، قَالَ: قُلْنَا لَهُ: حِينَ أَصْبَحْنَا أَفَطَنْتَ لَنَا اللَّيْلَةَ قَالَ: فَقَالَ: نَعَمْ، ذَاكَ الَّذِي حَمَلَنِي عَلَى الَّذِي صَنَعْتُ قَالَ: فَأَخَذَ يُوَاصِلُ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَذَاكَ فِي آخِرِ الشَّهْرِ، فَأَخَذَ رِجَالٌ مِنْ أَصْحَابِهِ يُوَاصِلُونَ، فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: مَا بَالُ رِجَالٍ يُوَاصِلُونَ، إِنَّكُمْ لَسْتُمْ مِثْلِي، أَمَا وَاللهِ، لَوْ تَمَادَّ لِي الشَّهْرُ لَوَاصَلْتُ وِصَالًا يَدَعُ الْمُتَعَمِّقُونَ تَعَمُّقَهُمْ»
“রমযান মাসে একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাত আদায় করছিলেন। আমি তাঁর পাশে এসে দাঁড়ালাম! এরপর অন্য এক ব্যক্তি এসেও তাঁর পাশে দাঁড়ালেন। এভাবে আমরা এক দল লোক হয়ে গেলাম। এরপর নরী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন বুঝতে পারলেন যে আমরা তাঁর পেছনে আছি তখন তিনি সালাত সংক্ষেপ করে ফেললেন। তারপর তিনি আপন গৃহে চলে গেলেন এবং এমন (দীর্ঘ) সালাত আদায় করলেন যে, এভাবে তিনি আমাদের সাথে সালাত আদায় করতেন না। সকালে আমরা তাকে বললাম, রাত্রে আপনি আমাদের সম্পর্কে বুঝতে পেরেছিলেন কি? তিনি বললেন, হ্যাঁ, তাইতো আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে ঐ কাজের যা আমি করেছি। এরপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমযানের শেষভাগে আবার সাওমে বেসাল করতে আরম্ভ করলেন। এ দেখে কতিপয় সাহাবীও সাওমে বেসাল শুরু করলেন। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, লোকদের কি হলো তারা যে সাওমে বেসাল আরম্ভ করেছে! তোমরা তো আমার মত নও। আল্লাহর শপথ! যদি মাস দীর্ঘায়িত হতো তবে আমি এমনভাবে সাওমে বিসাল করতাম যার ফলে সীমালংঘনকারীগণ সাওমে বেসাল করা ছেড়ে দিত”।[3]
>[2] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯৬৬।
[3] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১০৪।