﴿يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ كُتِبَ عَلَيۡكُمُ ٱلصِّيَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَى ٱلَّذِينَ مِن قَبۡلِكُمۡ لَعَلَّكُمۡ تَتَّقُونَ ١٨٣﴾ [البقرة: ١٨٣]

“হে মুমিনগণ, তোমাদের ওপর সাওম ফরয করা হয়েছে, যেভাবে ফরয করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর। যাতে তোমরা তাকওয়া অবলম্বন কর”। [সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ১৮৩]

তালহা ইবন উবাইদুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত,

«أَنَّ أَعْرَابِيًّا جَاءَ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ثَائِرَ الرَّأْسِ، فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ أَخْبِرْنِي مَاذَا فَرَضَ اللَّهُ عَلَيَّ مِنَ الصَّلاَةِ؟ فَقَالَ: «الصَّلَوَاتِ الخَمْسَ إِلَّا أَنْ تَطَّوَّعَ شَيْئًا»، فَقَالَ: أَخْبِرْنِي مَا فَرَضَ اللَّهُ عَلَيَّ مِنَ الصِّيَامِ؟ فَقَالَ: «شَهْرَ رَمَضَانَ إِلَّا أَنْ تَطَّوَّعَ شَيْئًا»، فَقَالَ: أَخْبِرْنِي بِمَا فَرَضَ اللَّهُ عَلَيَّ مِنَ الزَّكَاةِ؟ فَقَالَ: فَأَخْبَرَهُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ شَرَائِعَ الإِسْلاَمِ، قَالَ: وَالَّذِي أَكْرَمَكَ، لاَ أَتَطَوَّعُ شَيْئًا، وَلاَ أَنْقُصُ مِمَّا فَرَضَ اللَّهُ عَلَيَّ شَيْئًا، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ «أَفْلَحَ إِنْ صَدَقَ، أَوْ دَخَلَ الجَنَّةَ إِنْ صَدَقَ»

“এলোমেলো চুলবিশিষ্ট একজন গ্রাম্য আরব রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট এলেন। তারপর বললেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ! আমাকে বলুন, আল্লাহ তা‘আলা আমার ওপর কত (ওয়াক্ত) সালাত ফরয করেছেন? তিনি বলেন, পাঁচ (ওয়াক্ত) সালাত; তবে তুমি যদি কিছু নফল আদায় কর তা স্বতন্ত্র কথা। এরপর তিনি বললেন, বলুন, আমার ওপর কত সাওম আল্লাহ তা‘আলা ফরয করেছেন? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, রমযান মাসের সাওম; তবে তুমি যদি কিছু নফল কর তবে তা স্বতন্ত্র কথা। এরপর তিনি বললেন, বলুন, আল্লাহ আমার ওপর কী পরিমাণ যাকাত ফরয করেছেন? বর্ণনাকারী বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে ইসলামের বিধান জানিয়ে দিলেন। এরপর তিনি বললেন, ঐ সত্তার কসম, যিনি আপনাকে সত্য দিয়ে সম্মানিত করেছেন, আল্লাহ আমার ওপর যা ফরয করেছেন, আমি এর মাঝে কিছু বাড়াব না এবং কমাবও না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, সে সত্য বলে থাকলে সফলতা লাভ করল কিংবা বলেছেন, সে সত্য বলে থাকলে জান্নাত লাভ করল।”[1]

ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

«صَامَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَاشُورَاءَ، وَأَمَرَ بِصِيَامِهِ فَلَمَّا فُرِضَ رَمَضَانُ تُرِكَ»، وَكَانَ عَبْدُ اللَّهِ لاَ يَصُومُهُ إِلَّا أَنْ يُوَافِقَ صَوْمَهُ»

“নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘আশুরার দিন সাওম পালন করেছেন এবং এ সিয়ামের জন্য আদেশও করেছেন। পরে যখন রমযানের সাওম ফরয হলো তখন তা ছেড়ে দেওয়া হয়। ‘আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু এ সাওম পালন করতেন না, তবে মাসের যে দিনগুলোতে সাধারন সাওম পালন করতেন, তাঁর সাথে মিল হলে করতেন।”[2]

আনাস ইবন মালিক রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

«بَيْنَمَا نَحْنُ جُلُوسٌ مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي المَسْجِدِ، دَخَلَ رَجُلٌ عَلَى جَمَلٍ، فَأَنَاخَهُ فِي المَسْجِدِ ثُمَّ عَقَلَهُ، ثُمَّ قَالَ لَهُمْ: أَيُّكُمْ مُحَمَّدٌ؟ وَالنَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مُتَّكِئٌ بَيْنَ ظَهْرَانَيْهِمْ، فَقُلْنَا: هَذَا الرَّجُلُ الأَبْيَضُ المُتَّكِئُ. فَقَالَ لَهُ الرَّجُلُ: يَا ابْنَ عَبْدِ المُطَّلِبِ فَقَالَ لَهُ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «قَدْ أَجَبْتُكَ». فَقَالَ الرَّجُلُ لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِنِّي سَائِلُكَ فَمُشَدِّدٌ عَلَيْكَ فِي المَسْأَلَةِ، فَلاَ تَجِدْ عَلَيَّ فِي نَفْسِكَ؟ فَقَالَ: «سَلْ عَمَّا بَدَا لَكَ» فَقَالَ: أَسْأَلُكَ بِرَبِّكَ وَرَبِّ مَنْ قَبْلَكَ، آللَّهُ أَرْسَلَكَ إِلَى النَّاسِ كُلِّهِمْ؟ فَقَالَ: «اللَّهُمَّ نَعَمْ». قَالَ: أَنْشُدُكَ بِاللَّهِ، آللَّهُ أَمَرَكَ أَنْ نُصَلِّيَ الصَّلَوَاتِ الخَمْسَ فِي اليَوْمِ وَاللَّيْلَةِ؟ قَالَ: «اللَّهُمَّ نَعَمْ». قَالَ: أَنْشُدُكَ بِاللَّهِ، آللَّهُ أَمَرَكَ أَنْ نَصُومَ هَذَا الشَّهْرَ مِنَ السَّنَةِ؟ قَالَ: «اللَّهُمَّ نَعَمْ». قَالَ: أَنْشُدُكَ بِاللَّهِ، آللَّهُ أَمَرَكَ أَنْ تَأْخُذَ هَذِهِ الصَّدَقَةَ مِنْ أَغْنِيَائِنَا فَتَقْسِمَهَا عَلَى فُقَرَائِنَا؟ فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «اللَّهُمَّ نَعَمْ». فَقَالَ الرَّجُلُ: آمَنْتُ بِمَا جِئْتَ بِهِ، وَأَنَا رَسُولُ مَنْ وَرَائِي مِنْ قَوْمِي، وَأَنَا ضِمَامُ بْنُ ثَعْلَبَةَ أَخُو بَنِي سَعْدِ بْنِ بَكْرٍ وَرَوَاهُ مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، وَعَلِيُّ بْنُ عَبْدِ الحَمِيدِ، عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ المُغِيرَةِ، عَنْ ثَابِتٍ، عَنْ أَنَسٍ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِهَذَا»

“একবার আমরা রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে মসজিদে বসা ছিলাম। তখন এক ব্যক্তি সওয়ার অবস্থায় ঢুকল। মসজিদে (প্রাঙ্গণে) সে তার উটটি বসিয়ে বেঁধে রাখল। এরপর সাহাবীদের লক্ষ্য করে বলল, ‘তোমাদের মধ্যে আল্লাহর রাসূল কে?’ রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন তার সামনেই হেলান দিয়ে বসা ছিলেন। আমরা বললাম, ‘এই হেলান দিয়ে বসা ফর্সা রঙের ব্যক্তিই হলেন তিনি।’ তারপর লোকটি তাঁকে লক্ষ্য করে বলল, ‘হে আব্দুল মুত্তালিবের পুত্র!’ রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, ‘আমি তোমার জওয়াব দিচ্ছি।’ লোকটি বলল, ‘আমি আপনাকে কিছু প্রশ্ন করব এবং সে প্রশ্ন করার ব্যাপারে কঠোর হব, এতে আপনি রাগ করবেন না।’ তিনি বললেন, ‘তোমার যেমন ইচ্ছা প্রশ্ন কর।’ সে বলল, ‘আমি আপনাকে আপনার রব ও আপনার পূর্ববর্তীদের রবের কসম দিয়ে জিজ্ঞাসা করছি, আল্লাহই কি আপনাকে সব মানুষের জন্য রাসূলরূপে পাঠিয়েছেন?’ তিনি বললেন, ‘আল্লাহ সাক্ষী, হ্যাঁ।’ সে বলল, ‘আমি আপনাকে আল্লাহর কসম দিয়ে বলছি, আল্লাহ্ই কি আপনাকে দিন ও রাতে পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করতে নির্দেশ দিয়েছেন?’ তিনি বললেন, ‘আল্লাহ সাক্ষী, হ্যাঁ। সে বলল, ‘আমি আপনাকে আল্লাহর কসম দিয়ে বলছি, আল্লাহই কি আপনাকে বছরের এ মাসে (রমযান) সাওম পালনের নির্দেশ দিয়েছেন?’ তিনি বললেন, ‘আল্লাহ সাক্ষী, হ্যাঁ।’ সে বলল, ‘আমি আপনাকে আল্লাহর কসম দিয়ে বলছি, আল্লাহ্ই কি আপনাকে নির্দেশ দিয়েছেন, আমাদের ধনীদের থেকে সদকা (যাকাত) উসূল করে গরীবদের মধ্যে ভাগ করে দিতে?’ রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘আল্লাহ সাক্ষী, হ্যাঁ।’ এরপর লোকটি বলল, ‘আমি ঈমান আনলাম আপনি যা (যে শরী‘আত) এনেছেন তার ওপর। আর আমি আমার কওমের রেখে আসা লোকজনের পক্ষে প্রতিনিধি, আমার নাম যিমাম ইবন সা‘লাবা, বনী সা‘দ ইবন বকর গোত্রের একজন। মূসা ও আলী ইবন আব্দুল হামীদ রহ. আনাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর সূত্রেও এরূপ বর্ণনা করেছেন।”[3]

আনাস ইবন মালিক রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

«نُهِينَا أَنْ نَسْأَلَ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ شَيْءٍ، فَكَانَ يُعْجِبُنَا أَنْ يَجِيءَ الرَّجُلُ مِنْ أَهْلِ الْبَادِيَةِ الْعَاقِلُ، فَيَسْأَلَهُ، وَنَحْنُ نَسْمَعُ، فَجَاءَ رَجُلٌ مِنْ أَهْلِ الْبَادِيَةِ، فَقَالَ: يَا مُحَمَّدُ، أَتَانَا رَسُولُكَ فَزَعَمَ لَنَا أَنَّكَ تَزْعُمُ أَنَّ اللهَ أَرْسَلَكَ، قَالَ: «صَدَقَ»، قَالَ: فَمَنْ خَلَقَ السَّمَاءَ؟ قَالَ: «اللهُ»، قَالَ: فَمَنْ خَلَقَ الْأَرْضَ؟ قَالَ: «اللهُ»، قَالَ: فَمَنْ نَصَبَ هَذِهِ الْجِبَالَ، وَجَعَلَ فِيهَا مَا جَعَلَ؟ قَالَ: «اللهُ»، قَالَ: فَبِالَّذِي خَلَقَ السَّمَاءَ، وَخَلَقَ الْأَرْضَ، وَنَصَبَ هَذِهِ الْجِبَالَ، آللَّهُ أَرْسَلَكَ؟ قَالَ: «نَعَمْ»، قَالَ: وَزَعَمَ رَسُولُكَ أَنَّ عَلَيْنَا خَمْسَ صَلَوَاتٍ فِي يَوْمِنَا، وَلَيْلَتِنَا، قَالَ: «صَدَقَ»، قَالَ: فَبِالَّذِي أَرْسَلَكَ، آللَّهُ أَمَرَكَ بِهَذَا؟ قَالَ: «نَعَمْ»، قَالَ: وَزَعَمَ رَسُولُكَ أَنَّ عَلَيْنَا زَكَاةً فِي أَمْوَالِنَا، قَالَ: «صَدَقَ»، قَالَ: فَبِالَّذِي أَرْسَلَكَ، آللَّهُ أَمَرَكَ بِهَذَا؟ قَالَ: «نَعَمْ»، قَالَ: وَزَعَمَ رَسُولُكَ أَنَّ عَلَيْنَا صَوْمَ شَهْرِ رَمَضَانَ فِي سَنَتِنَا، قَالَ: «صَدَقَ»، قَالَ: فَبِالَّذِي أَرْسَلَكَ، آللَّهُ أَمَرَكَ بِهَذَا؟ قَالَ: «نَعَمْ»، قَالَ: وَزَعَمَ رَسُولُكَ أَنَّ عَلَيْنَا حَجَّ الْبَيْتِ مَنِ اسْتَطَاعَ إِلَيْهِ سَبِيلًا، قَالَ: «صَدَقَ»، قَالَ: ثُمَّ وَلَّى، قَالَ: وَالَّذِي بَعَثَكَ بِالْحَقِّ، لَا أَزِيدُ عَلَيْهِنَّ، وَلَا أَنْقُصُ مِنْهُنَّ، فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَئِنْ صَدَقَ لَيَدْخُلَنَّ الْجَنَّةَ»

“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে কোনো বিষয়ে প্রশ্ন করার ব্যাপারে আমাদের নিষেধ করা হয়েছিল। তাই আমরা চাইতাম যে, গ্রাম থেকে কোনো বুদ্ধিমান ব্যক্তি এসে তাঁকে প্রশ্ন করুক আর আমরা তা শুনি। তারপর একদিন গ্রাম থেকে এক ব্যক্তি এসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলল, হে মুহাম্মদ! আমাদের কাছে আপনার দূত এসে বলেছে, আপনি দাবি করেছেন যে, আল্লাহ আপনাকে রাসুল হিসাবে পাঠিয়েছেন। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, সত্যই বলেছে। আগন্তুক বলল, আসমান কে সৃষ্টি করেছেন? তিনি বললেন, আল্লাহ। আগন্তুক বলল, জমিন কে সৃষ্টি করেছেন? রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আল্লাহ। আগন্তুক বলল, এসব পর্বতমালা কে স্থাপন করেছেন এবং এর মধ্যে যা কিছু আছে তা কে সৃষ্টি করেছেন? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আল্লাহ। আগন্তুক বলল, কসম সেই সত্তার! যিনি আসমান ও জমিন সৃষ্টি করেছেন এবং এসব পর্বতমালা স্থাপন করেছেন। আল্লাহই আপনাকে রাসুলরূপে পাঠিয়েছেন? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন,হ্যাঁ। আগন্তুক বলল, আপনার দূত বলে যে, আমাদের ওপর দিনে ও রাতে পাঁচ ওয়াক্ত সালাত ফরয। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, সত্যই বলেছে। আগন্তুক বলল, যিনি আপনাকে রাসুলরূপে পাঠিয়েছেন তাঁর কসম, আল্লাহ-ই কি আপনাকে এর নির্দেশ দিয়েছেন? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হ্যাঁ। আগন্তুক বলল, আপনার দূত বলে যে, আমাদের ওপর আমাদের মালের যাকাত দেওয়া ফরয। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন,ঠিকই বলেছো আগন্তুক বলল, যিনি আপনাকে রাসুলরূপে পাঠিয়েছেন, তাঁর কসম, আল্লাহ-ই কি আপনাকে এর নির্দেশ দিয়েছেন? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন,হ্যাঁ। আগন্তুক বলল, আপনার দূত বলে যে, প্রতি বছর রমযান মাসের সাওম পালন করা আমাদের ওপর ফরয। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, সত্যই বলেছে। আগন্তুক বলল, যিনি আপনাকে রাসুল হিসেবে পাঠিয়েছেন, তার কসম, আল্লাহ-ই কি আপনাকে এর নির্দেশ দিয়েছেন? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হ্যাঁ। আগন্তুক বলল, আপনার দূত বলে যে, আমাদের মধ্যে যে বায়তুল্লায় যেতে সক্ষম তার ওপর হজ ফরয। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন,সত্যি বলেছে। বর্ণনাকারী বলেন যে, তারপর আগন্তুক চলে যেতে যেতে বলল, যিনি আপনাকে সত্যসহ প্রেরণ করেছেন তার কসম, আমি এর অতিরিক্তও করব না এবং এর কমও করব না। এ কথা শুনে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, লোকটি সত্য বলে থাকলে অবশ্যই সে জান্নাতে যাবে।”[4]

ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

«صَامَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَاشُورَاءَ، وَأَمَرَ بِصِيَامِهِ فَلَمَّا فُرِضَ رَمَضَانُ تُرِكَ»، وَكَانَ عَبْدُ اللَّهِ لاَ يَصُومُهُ إِلَّا أَنْ يُوَافِقَ صَوْمَهُ»

“নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘আশুরার দিন সাওম পালন করেছেন এবং এ সিয়ামের জন্য আদেশও করেছেন। পরে যখন রমযানের সাওম ফরয হলো তখন তা ছেড়ে দেওয়া হয়। ‘আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু এ সাওম পালন করতেন না, তবে মাসের যে দিনগুলোতে সাধারণ সাওম পালন করতেন, তাঁর সাথে মিল হলে করতেন।”[5]

আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত,

عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا،: أَنَّ قُرَيْشًا كَانَتْ تَصُومُ يَوْمَ عَاشُورَاءَ فِي الجَاهِلِيَّةِ، ثُمَّ أَمَرَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِصِيَامِهِ حَتَّى فُرِضَ رَمَضَانُ، وَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ شَاءَ فَلْيَصُمْهُ وَمَنْ شَاءَ أَفْطَرَ»

“জাহেলী যুগে কুরাইশগণ ‘আশুরার দিন সাওম পালন করত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও পরে এ সাওম পালনের নির্দেশ দেন। অবশেষে রমযানের সাওম ফরয হলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যার ইচ্ছা ‘আশুরার সাওম পালন করবে এবং যার ইচ্ছা সে সাওম পালন করবে না।”[6]

ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

«قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ " بُنِيَ الإِسْلاَمُ عَلَى خَمْسٍ: شَهَادَةِ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ، وَإِقَامِ الصَّلاَةِ، وَإِيتَاءِ الزَّكَاةِ، وَالحَجِّ، وَصَوْمِ رَمَضَانَ»

“রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ইসলামের ভিত্তি পাঁচটি। আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই এবং নিশ্চয় মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর রাসূল -এ কথার সাক্ষ্য দান, সালাত কায়েম করা, যাকাত দেওয়া, হজ করা এবং রমযানের সাওম পালন করা।”[7]

আবু জামরা রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

«كُنْتُ أَقْعُدُ مَعَ ابْنِ عَبَّاسٍ يُجْلِسُنِي عَلَى سَرِيرِهِ فَقَالَ: أَقِمْ عِنْدِي حَتَّى أَجْعَلَ لَكَ سَهْمًا مِنْ مَالِي فَأَقَمْتُ مَعَهُ شَهْرَيْنِ، ثُمَّ قَالَ: إِنَّ وَفْدَ عَبْدِ القَيْسِ لَمَّا أَتَوُا النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «مَنِ القَوْمُ؟ - أَوْ مَنِ الوَفْدُ؟ -» قَالُوا: رَبِيعَةُ. قَالَ: «مَرْحَبًا بِالقَوْمِ، أَوْ بِالوَفْدِ، غَيْرَ خَزَايَا وَلاَ نَدَامَى»، فَقَالُوا: يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّا لاَ نَسْتَطِيعُ أَنْ نَأْتِيكَ إِلَّا فِي الشَّهْرِ الحَرَامِ، وَبَيْنَنَا وَبَيْنَكَ هَذَا الحَيُّ مِنْ كُفَّارِ مُضَرَ، فَمُرْنَا بِأَمْرٍ فَصْلٍ، نُخْبِرْ بِهِ مَنْ وَرَاءَنَا، وَنَدْخُلْ بِهِ الجَنَّةَ، وَسَأَلُوهُ عَنِ الأَشْرِبَةِ: فَأَمَرَهُمْ بِأَرْبَعٍ، وَنَهَاهُمْ عَنْ أَرْبَعٍ، أَمَرَهُمْ: بِالإِيمَانِ بِاللَّهِ وَحْدَهُ، قَالَ: «أَتَدْرُونَ مَا الإِيمَانُ بِاللَّهِ وَحْدَهُ» قَالُوا: اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ، قَالَ: «شَهَادَةُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ، وَإِقَامُ الصَّلاَةِ، وَإِيتَاءُ الزَّكَاةِ، وَصِيَامُ رَمَضَانَ، وَأَنْ تُعْطُوا مِنَ المَغْنَمِ الخُمُسَ» وَنَهَاهُمْ عَنْ أَرْبَعٍ: عَنِ الحَنْتَمِ وَالدُّبَّاءِ وَالنَّقِيرِ وَالمُزَفَّتِ "، وَرُبَّمَا قَالَ: «المُقَيَّرِ» وَقَالَ: «احْفَظُوهُنَّ وَأَخْبِرُوا بِهِنَّ مَنْ وَرَاءَكُمْ»

“আমি ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমার সঙ্গে বসতাম। তিনি আমাকে তাঁর আসনে বসাতেন। একবার তিনি বললেন, তুমি আমার কাছে থেকে যাও, আমি তোমাকে আমার সম্পদ থেকে কিছু অংশ দেব। আমি দু’মাস তাঁর সঙ্গে অবস্থান করলাম। তারপর একদিন তিনি বললেন, আব্দুল কায়েসের একটি প্রতিনিধি দল রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে আসলে তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, তোমরা কোন কওমের? অথবা কোন প্রতিনিধি দলের? তারা বলল, রাবী‘আ গোত্রের।’ তিনি বললেন, মারহাবা সে গোত্র বা সে প্রতিনিধি দলের প্রতি, যারা অপদস্থ ও লজ্জিত না হয়েই এসেছে। তারা বলল, ইয়া রাসূলুল্লহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! নিষিদ্ধ মাসসমূহ ছাড়া অন্য কোনো সময় আমরা আপনার কাছে আসতে পারি না। (কারণ) আমাদের এবং আপনার মাঝখানে মুদার গোত্রীয় কাফিরদের বসবাস। তাই আমাদের কিছু স্পষ্ট হুকুম দিন, যাতে আমরা যাদের পিছনে রেখে এসেছি তাদের জানিয়ে দিতে পারি এবং যাতে আমরা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারি। তারা পানীয় সম্পর্কেও জিজ্ঞাসা করল। তখন তিনি তাদের চারটি জিনিসের নির্দেশ এবং চারটি জিনিস থেকে নিষেধ করলেন। তাদের এক আল্লাহর প্রতি ঈমান আনার আদেশ দিয়ে বললেন, ‘এক আল্লাহ্‌ প্রতি ঈমান আনা কিভাবে হয় তা কি তোমরা জান?’ তাঁরা বলল, ‘আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই ভাল জানেন।’ তিনি বললেন, ‘তা হলো এ সাক্ষ্য দেওয়া যে, আল্লাহ্ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই এবং মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর রাসূল এবং সালাত কায়েম করা, যাকাত দেওয়া, রমযানের সাওম পালন করা আর তোমরা গণীমতের মাল থেকে এক-পঞ্চমাংশ প্রদান করবে। তিনি তাদেরকে চারটি জিনিস থেকে নিষেধ করলেন। তা হলো সবুজ কলসী, শুকনো লাউয়ের খোল, খেজুর গাছের গুঁড়ি থেকে তৈরিকৃত পাত্র এবং আলকাতরার পালিশকৃত পাত্র। বর্ণনাকারী বলেন, বর্ণনাকারী (المُزَفَّتِ এর স্থলে) কখনও المُقَيَّرِ উল্লেখ করেছেন (উভয় শব্দের অর্থ একই)। তিনি আরো বলেন, তোমরা এগুলো ভালো করে আয়ত্ত করে নাও এবং অন্যদেরও এগুলি জানিয়ে দিও।”[8]

আবু সা‘ঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বর্ণনা করেন যে,

«أَنَّ أُنَاسًا مِنْ عَبْدِ الْقَيْسِ قَدِمُوا عَلَى رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالُوا: يَا نَبِيَّ اللهِ، إِنَّا حَيٌّ مِنْ رَبِيعَةَ، وَبَيْنَنَا وَبَيْنَكَ كُفَّارُ مُضَرَ، وَلَا نَقْدِرُ عَلَيْكَ إِلَّا فِي أَشْهُرِ الْحُرُمِ، فَمُرْنَا بِأَمْرٍ نَأْمُرُ بِهِ مَنْ وَرَاءَنَا، وَنَدْخُلُ بِهِ الْجَنَّةَ إِذَا نَحْنُ أَخَذْنَا بِهِ، فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: " آمُرُكُمْ بِأَرْبَعٍ، وَأَنْهَاكُمْ عَنْ أَرْبَعٍ: اعْبُدُوا اللهَ وَلَا تُشْرِكُوا بِهِ شَيْئًا، وَأَقِيمُوا الصَّلَاةَ، وَآتُوا الزَّكَاةَ، وَصُومُوا رَمَضَانَ»

“আব্দুল কায়স গোত্রের কয়েকজন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে উপস্থিত হয়ে আরয করল, হে আল্লাহর নবী! আমরা রাবী’আ গোত্রের লোক। আপনার ও আমাদের মধ্যবতী যাতায়াত পথে মুদার গোত্রের কাফিররা অবস্থান করায় ‘হারাম মাস’ ছাড়া আমরা আপনার কাছে আসতে পারি না। অতএব, আপনি আমাদের এমন কাজের আদেশ দিন, আমাদের যারা আসে নি তাদের জানাতে পারি এবং যা পালন করে আমরা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমাদের চারটি বিষয় পালনের এবং চারটি বিষয় থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিচ্ছি। পালনীয় চারটি বিষয় হলো, তোমরা আল্লাহর ইবাদত করবে, তাঁর সাথে অন্য কাউকে শরীক করবে না, সালাত কায়েম করবে, যাকাত দিবে, রমযানের সাওম পালন করবে এবং গনীমতের এক-পঞ্চমাংশ প্রদান করবে।”[9]

আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

«كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَارِزًا يَوْمًا لِلنَّاسِ، فَأَتَاهُ جِبْرِيلُ فَقَالَ: مَا الإِيمَانُ؟ قَالَ: «الإِيمَانُ أَنْ تُؤْمِنَ بِاللَّهِ وَمَلاَئِكَتِهِ، وَكُتُبِهِ، وَبِلِقَائِهِ، وَرُسُلِهِ وَتُؤْمِنَ بِالْبَعْثِ». قَالَ: مَا الإِسْلاَمُ؟ قَالَ: " الإِسْلاَمُ: أَنْ تَعْبُدَ اللَّهَ، وَلاَ تُشْرِكَ بِهِ شَيْئًا، وَتُقِيمَ الصَّلاَةَ، وَتُؤَدِّيَ الزَّكَاةَ المَفْرُوضَةَ، وَتَصُومَ رَمَضَانَ ". قَالَ: مَا الإِحْسَانُ؟ قَالَ: «أَنْ تَعْبُدَ اللَّهَ كَأَنَّكَ تَرَاهُ، فَإِنْ لَمْ تَكُنْ تَرَاهُ فَإِنَّهُ يَرَاكَ»، قَالَ: مَتَى السَّاعَةُ؟ قَالَ: " مَا المَسْئُولُ عَنْهَا بِأَعْلَمَ مِنَ السَّائِلِ، وَسَأُخْبِرُكَ عَنْ أَشْرَاطِهَا: إِذَا وَلَدَتِ الأَمَةُ رَبَّهَا، وَإِذَا تَطَاوَلَ رُعَاةُ الإِبِلِ البُهْمُ فِي البُنْيَانِ، فِي خَمْسٍ لاَ يَعْلَمُهُنَّ إِلَّا اللَّهُ " ثُمَّ تَلاَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ﴿ إِنَّ ٱللَّهَ عِندَهُۥ عِلۡمُ ٱلسَّاعَةِ﴾ [لقمان: ٣٤]، ثُمَّ أَدْبَرَ فَقَالَ: «رُدُّوهُ» فَلَمْ يَرَوْا شَيْئًا، فَقَالَ: «هَذَا جِبْرِيلُ جَاءَ يُعَلِّمُ النَّاسَ دِينَهُمْ» قَالَ أَبُو عَبْدِ اللَّهِ: جَعَلَ ذَلِكَ كُلَّهُ مِنَ الإِيمَانِ»

“একদিন রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জনসমক্ষে বসা ছিলেন, এমন সময় তাঁর কাছে এক ব্যক্তি এসে জিজ্ঞাসা করলেন ‘ঈমান কী?’ তিনি বললেন, ‘ঈমান হলো, আপনি বিশ্বাস রাখবেন আল্লাহর প্রতি, তাঁর ফিরিশতাগণের প্রতি, (কিয়ামতের দিন) তাঁর সঙ্গে সাক্ষাতের প্রতি এবং তাঁর রাসূলগণের প্রতি। আপনি আরো বিশ্বাস রাখবেন পুনরুত্থানের প্রতি।’ তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, ‘ইসলাম কী?’ তিনি বললেন, ‘ইসলাম হলো, আপনি আল্লাহর ইবাদত করবেন এবং তাঁর সঙ্গে শরীক করবেন না, সালাত কায়েম করবেন, ফরয যাকাত আদায় করবেন এবং রমযানের সাওম পালন করবেন।’ ঐ ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করলেন, ‘ইহসান কী?’ তিনি বললেন, ‘আপনি এমন ভাবে আল্লাহর ইবাদত করবেন যেন আপনি তাঁকে দেখছেন, আর যদি আপনি তাঁকে দেখতে না পান তবে (বিশ্বাস রাখবেন যে) তিনি আপনাকে দেখছেন।’ ঐ ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করলেন, ‘কিয়ামত কবে?’ তিনি বললেন, ‘এ ব্যাপারে যাকে জিজ্ঞাসা করা হচ্ছে, তিনি জিজ্ঞাসাকারী অপেক্ষা বেশি জানেন না। তবে আমি আপনাকে কিয়ামতের আলামতসমূহ বলে দিচ্ছি: বাঁদী যখন তার প্রভুকে প্রসব করবে এবং উটের নগণ্য রাখালেরা যখন বড় বড় অট্টালিকা নির্মাণে প্রতিযোগিতা করবে। (কিয়ামতের বিষয়) সেই পাঁচটি জিনিসের অন্তর্ভূক্ত, যা আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না।’ এরপর রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই আয়াতটি শেষ পর্যন্ত তিলাওয়াত করলেন,

﴿إِنَّ ٱللَّهَ عِندَهُۥ عِلۡمُ ٱلسَّاعَةِ﴾ [لقمان: ٣٤]

“কিয়ামতের জ্ঞান কেবল আল্লাহই নিকট..।” [সূরা লুকমান, আয়াত: ৩৪], এরপর ঐ ব্যক্তি চলে গেলে তিনি বললেন, ‘তোমরা তাকে ফিরিয়ে আন।’ তারা কিছুই দেখতে পেল না। তখন তিনি বললেন, ‘ইনি জিবরীল আলাইহিস সালাম। লোকদের দীন শেখাতে এসেছিলেন।”[10]

[1] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৮৯১।

[2] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৮৯২।

[3] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৬৩, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৩।

[4] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১২।

[5] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৮৯২, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১২৬।

[6] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৮৯৩।

[7] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৮, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৬।

[8] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৫৩, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৭।

[9] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৮।

[10] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৫০, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৯।