মৃত ব্যক্তিকে কেন্দ্র করে প্রচলিত বিদ‘আত ও কুসংস্কার :

(১) মৃত্যুর আগে কিংবা পরে বিশাল খানার আয়োজন করা
(২) মৃত ব্যক্তির নামে দেয়া ছাদাক্বা সবাই খাওয়া
(৩) জানাযা নিয়ে যাওয়ার সময় তার পিছনে পিছনে উচ্চৈঃস্বরে তাকবীর দেয়া ও বিভিন্ন যিকির করা
(৪) কবরে গোলাপ জল ছিটানো
(৫) যে কাপড় দ্বারা খাটলি ঢেকে রাখা হয় সেই কাপড়ে ‘আয়াতুল কুরসী’, বিভিন্ন সূরা ও দু‘আ লেখা
(৬) খাটলি নিয়ে যাওয়ার সময় দুইবার রাখা
(৭) শোক দিবস পালন করা
(৮) চার কুল পড়ে কবরের চার কোণায় খেজুরের ডাল পোঁতা
(৯) কবর যিয়ারত করতে গিয়ে সাতবার সূরা ফাতিহা, তিনবার সূরা ইখলাছ, সাতবার দরূদ ইত্যাদি নিয়ম পালন করা (১০) নির্দিষ্ট করে ২৭ রামাযান তারিখে, দুই ঈদের দিন কিংবা জুম‘আর দিন কবর যিয়ারত করা
(১১) মৃত ব্যক্তির নামে কুরআন পড়ার আয়োজন করা কিংবা মাইকে কুরআন তেলাওয়াত বাজানো
(১২) কথিত শবেবরাত, শবে মি‘রাজের বিদ‘আতী রাতে কবরস্থানে যাওয়া। পীরের দরগায় সারা রাত জেগে ইবাদত করা। এটা শিরক।
(১৩) লাশ দেখার জন্য মেয়েদের ভিড় করা
(১৪) মৃত ব্যক্তির নামে আজমীর, খানকা, মাযার ও কবরের উদ্দেশ্যে মানত করা বা টাকা-পয়সা, গরু-ছাগল ইত্যাদি পাঠানো।[1]

উপসংহার :

ছালাত আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের সর্বশ্রেষ্ঠ মাধ্যম (আনকাবূত ৪৫)। কিন্তু এই ছালাত বিশুদ্ধ না হলে কোন আমলই আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্য হবে না। অথচ ফরয ছালাতসহ আমাদের প্রত্যেকটি ছালাতই জাল-যঈফ ও বানোয়াট কেচ্ছা-কাহিনী দ্বারা ভরপুর, যা লেখনীতে পরিষ্কারভাবে ফুটে উঠেছে। তাই সকল মুছল্লী ভাই ও বোনদের প্রতি আকুল আবেদন থাকবে- তারা যেন যাবতীয় সংকীর্ণতা ঝেড়ে ফেলে দেন এবং রাসূল (ছাঃ)-এর পদ্ধতি নিঃশর্তভাবে গ্রহণ করেন। মনে রাখা আবশ্যক যে, বিভিন্ন মাযহাব, মতবাদ ও ত্বরীক্বা সৃষ্টির বহু পূর্বেই ছাহাবায়ে কেরাম ও পরবর্তী স্বর্ণযুগের মানুষগুলো রাসূল (ছাঃ)-এর যথাযথ অনুসরণের মাধ্যমেই সফলকাম হয়েছেন। এমনকি অনেকে দুনিয়াতেই জান্নাতের সুসংবাদও পেয়েছেন। অতএব আসুন! আমরা একমাত্র সেই রাসূল মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর অনুসরণ করি এবং তাঁরই দেখানো পদ্ধতিতে ছালাত আদায় করি। তিনি ছাড়া কাল ক্বিয়ামতের মাঠে আমাদেরকে উদ্ধার করার কেউ থাকবে না। আল্লাহ আমাদেরকে রাসূল (ছাঃ)-এর অনুপম আদর্শের উপর সুপ্রতিষ্ঠিত করুন! আমাদের ভুলগুলো সংশোধন করে নেয়ার তাওফীক্ব দান করুন! আমাদেরকে সৎকর্মশীল বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত করুন এবং জান্নাত লাভে ধন্য করুন! আমীন!!

يَا مُقَلِّبَ الْقُلُوْبِ ثَبِّتْ قَلْبِىْ عَلَى دِيْنِكَ. رَبَّنَا اغْفِرْ لِىْ وَلِوَالِدَيَّ وَلِلْمُؤْمِنِيْنَ يَوْمَ يَقُوْمُ الْحِسَابِ. صَلَّى اللهُ عَلَى نَبِيِّنَا مُحَمَّدٍ وَ عَلَى آلِهِ وَ صَحْبِهِ وَسَلَّمَ. سُبْحَانَكَ اللَّهُمَّ وَبِحَمْدِكَ أَشْهَدُ أَنْ لَّا إِلٰهَ إلَّا أنْتَ أسْتَغْفِرُكَ وَأَتُوْبُ إِلَيْكَ.।

[1]. বিস্তারিত দ্রঃ ছালাতুর রাসূল (ছাঃ), পৃঃ ২৩৮-২৪১