(১৪) ফযীলতের আশায় জুম‘আর দিন পাগড়ী পরিধান করা

অধিক ফযীলত মনে করে অনেকে এই দিনে পাগড়ী পরে থাকে। জুম‘আর দিন পাগড়ী পরিধান করার ফযীলত সম্পর্কে যত হাদীছ বর্ণিত হয়েছে, সবই জাল।

عَنْ أَبِى الدَّرْدَاءِ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ إِنَّ اللهَ وَمَلاَئِكَتَهُ يُصَلُّوْنَ عَلَى أَصْحَابِ الْعَمَائِمِ يَوْمَ الْجُمُعَةِ.

আবু দারদা (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, আল্লাহ তা‘আলা এবং ফেরেশতামন্ডলী জুম‘আর দিনে পাগড়ী পরিধানকারী ব্যক্তিদের উপর রহম করেন।[1]

তাহক্বীক্ব : বর্ণনাটি জাল। এর সনদে আইয়ূব ইবনু মুদরাক নামে মিথ্যুক রাবী রয়েছে।[2] ইমাম ইবনুল জাওযী এই বর্ণনাকে জাল হাদীছের গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন।[3] শায়খ আলবানীও জাল বলেছেন।[4] অন্য বর্ণনায় এসেছে,

عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ قَالَ إِنِّىْ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ يَقُوْلُ صَلاَةٌ بِعِمَامَةٍ تَعْدِلُ خَمْسًا وَّعِشْرِيْنَ صَلاَةً بِغَيْرِ عِمَامَةٍ وَجُمُعَةٌ بِعِمَامَةٍ تَعْدِلُ سَبْعِيْنَ جُمُعَةً بِغَيْرِ عِمَامَةٍ إِنَّ الْمَلاَئِكَةَ لَيَشْهَدُوْنَ الْجُمُعَةَ مُعْتَمِّيْنَ وَلاَ يَزَالُوْنَ يُصَلُّوْنَ عَلَى أَصْحَابِ الْعَمَائِمِ حَتىَّ تَغْرُبَ الشَّمْسُ.

আব্দুল্লাহ ইবনু ওমর (রাঃ) বলেন, আমি রাসূল (ছাঃ)-কে বলতে শুনেছি যে, পাগড়ী মাথায় দিয়ে এক ওয়াক্ত ছালাত আদায় করলে পাগড়ী বিহীন ২৫ ওয়াক্ত ছালাতের সমান নেকী হয় এবং পাগড়ী পরে এক জুম‘আ পড়লে পাগড়ী বিহীন ৭০ জুম‘আর সমপরিমাণ নেকী হয়। নিশ্চয় ফেরেশতারা পাগড়ী পরে জুম‘আর ছালাতে শরীক হন। তারা পাগড়ী পরিহিত ব্যক্তিদের জন্য সূর্যাস্ত পর্যন্ত দু‘আ করতে থাকেন।[5]

তাহক্বীক্ব : বর্ণনাটি জাল। এর সনদে আব্বাস ইবনু কাছীর নামে মিথ্যুক রাবী আছে।[6] ইবনু হাজার আসক্বালানী বলেন, বর্ণনাটি জাল।[7]

জ্ঞাতব্য : উক্ত ফযীলতের আশা না করে কেউ চাইলে পাগড়ী পরতে পারে। রাসূল (ছাঃ) কখনো জুম‘আর দিন পাগড়ী পরে খুৎবা দিতেন।[8]

[1]. হিলইয়া ৫/১৮৯-১৯০।

[2]. ইবনুল জাওযী, কিতাবুল মাওযূ‘আত ২/১০৫ পৃঃ; সিলসিলা যঈফাহ হা/১৫৯।

[3]. কিতাবুল মাওযূ‘আত ২/১০৫ পৃঃ।

[4]. সিলসিলা যঈফাহ হা/১৫৯, ১/২৯২-২৯৩ পৃঃ।

[5]. ইবনু নাজ্জার, সিলসিলা যঈফাহ হা/১২৭, ১/২৪৯ পৃঃ।

[6]. সিলসিলা যঈফাহ হা/১২৭-এর আলোচনা দ্রঃ, ১/২৪৯ পৃঃ।

[7]. ইবনু হাজার আসক্বালানী, লিসানুল মীযান ৩/২৪৪ পৃঃ- هَذَا حَدِيْثٌ مَوْضُوْعٌ।

[8]. ছহীহ মুসলিম হা/৩৩৭৭ ও ৩৩৭৮, ১/৪৩৯-৪৪০ পৃঃ, (ইফাবা হা/৩১৭৭-৭৮); মিশকাত হা/১৪১০; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/১৩২৬, ৩/১৯৮ পৃঃ।