(৩) জুম‘আর ছালাতের মুছল্লী নির্দিষ্ট করা

ছহীহ হাদীছের দৃষ্টিতে দুই জন ব্যক্তি হলেই জুম‘আর ছালাত আদায় করা যাবে। কারণ জুম‘আর ছালাত অন্যান্য ফরয ছালাতের মতই ফরয ছালাত। কোন স্থানে দুইজন ব্যক্তি থাকলেও রাসূল (ছাঃ) তাদেরকে আযান, ইক্বামতসহ জামা‘আত করে ছালাত আদায়ের নির্দেশ দিয়েছেন।[1] অথচ সমাজে প্রচলিত আছে যে, ৪০ জন ব্যক্তি ছাড়া জুম‘আর ছালাত হবে না। কিন্তু এর পক্ষে ছহীহ কোন দলীল নেই। উক্ত মর্মে যত বর্ণনা এসেছে সবই ত্রুটিপূর্ণ।

(أ) عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ قَالَ مَضَتِ السُّنَّةُ أَنَّ فِىْ كُلِّ ثَلاَثَةٍ إِمَامٌ وَفِىْ كُلِّ أَرْبَعِيْنَ فَمَا فَوْقَ ذَلِكَ جُمُعَةً وَأَضْحًى وَفِطْرًا وَذَلِكَ أَنَّهُمْ جَمَاعَةٌ .

(ক) জাবের (রাঃ) বলেন, সুন্নাত প্রচলিত আছে যে, প্রত্যেক তিনজনে ইমাম নির্ধারিত হবে, ৪০ জনের উপরে জুম‘আ, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা সাব্যস্ত হবে।[2]

তাহক্বীক্ব : বর্ণনাটি জাল। এর সনদে আব্দুল আযীয বিন ক্বারশী নামে একজন মিথ্যুক রাবী আছে।[3] উল্লেখ্য যে, ছহীহ আছার বর্ণিত হয়েছে যে, মদ্বীনায় যখন প্রথম জুম‘আ চালু হয় তখন তার মুছল্লী সংখ্যা ছিল ৪০। উক্ত জামা‘আতের লোকসংখ্যা ছিল ৪০ জন। কিন্তু ৪০ জন না হলে ছালাত হবে না সে কথা তো বলা হয়নি।[4]

(ب) عَنْ أَبِى أُمَامَةَ أَنَّ نَبِىَّ اللهِ قَالَ عَلَى الْخَمْسِيْنَ جُمُعَةٌ لَيْسَ فِيْمَا دُوْنَ ذَلِكَ.

(খ) আবু উমামা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ৫০ জন ছাড়া জুম‘আর ছালাত হবে না।[5]

তাহক্বীক্ব : বর্ণনাটি অত্যন্ত দুর্বল। এই বর্ণনায় জাফর বিন যুবাইর নামক রাবী আছে। ইমাম বুখারী ও নাসাঈ বলেন, সে পরিত্যক্ত। ইমাম হায়ছামীও তাকে নিতান্ত দুর্বল বলেছেন।[6]

[1]. বুখারী হা/৬৫৮, ১/৯০ পৃঃ, (ইফাবা হা/৬২৫, ২/৬২ পৃঃ); মুসলিম হা/১৫৭০, ১/২৩৬ পৃঃ, (ইফাবা হা/১৪০৭)- عَنْ مَالِكِ بْنِ الْحُوَيْرِثِ عَنِ النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ إِذَا حَضَرَتِ الصَّلاَةُ فَأَذِّنَا وَأَقِيْمَا ثُمَّ لِيَؤُمَّكُمَا أَكْبَرُكُمَا.।

[2]. দারাকুৎনী হা/১৫৯৮, ২/৪; বায়হাক্বী ৩/১৭৭।

[3]. তানক্বীহ, পৃঃ ৪২৫; ইওয়াউল গালীল হা/৬০৩, ৩/৬৯ পৃঃ- قال أحمد : اضرب على حديثه فإنها كذب موضوعة وقال النسائي ليس بثقة وقال الدارقطني : منكر الحديث وقال ابن حبان لا يجوز الإحتجاج به وقال البيهقي هذا الحديث لا يحتج به।

[4]. ইরওয়াউল গালীল হা/৬০০, ৩/৬৯ পৃঃ; আবুদাঊদ হা/১০৬৯, ১/১৫৩ পৃঃ - عَنْ كَعْبِ بْنِ مَالِكٍ أَنَّهُ كَانَ إِذَا سَمِعَ النِّدَاءَ يَوْمَ الْجُمُعَةِ تَرَحَّمَ لِأَسْعَدَ بْنِ زُرَارَةَ فَقُلْتُ لَهُ إِذَا سَمِعْتَ النِّدَاءَ تَرَحَّمْتَ لِأَسْعَدَ بْنِ زُرَارَةَ قَالَ لِأَنَّهُ أَوَّلُ مَنْ جَمَّعَ بِنَا فِىٍ هَزْمِ النَّبِيْتِ مِنْ حَرَّةِ بَنِىْ بَيَاضَةَ فِىْ نَقِيْعٍ يُقَالُ لَهُ نَقِيْعُ الْخَضِمَاتِ قُلْتُ كَمْ أَنْتُمْ يَوْمَئِذٍ قَالَ أَرْبَعُوْنَ.।

[5]. দারাকুৎনী হা/১৫৯৯, ২/৪; ত্বাবারাণী কাবীর ৮/২৯১।

[6]. মাজমাউয যাওয়ায়েদ ২/১৭৬ পৃঃ; তানক্বীহুল কালাম, পৃঃ ৪২৬; ইরওয়া হা/৬০৩।