(৩০) মাথার চুলের গোড়ায় নাপাকি থাকবে মনে করে সর্বদা মাথার চুল ছোট করে রাখা বা কামিয়ে রাখা

নাপাকির ভয়ে এক শ্রেণীর মুরববী সর্বদা মাথা ন্যাড়া করে রাখেন বা চুল খুব ছোট করে রাখেন এবং একে খুব ফযীলতপূর্ণ মনে করেন। আলী (রাঃ) এরূপ করতেন বলে তারা এর অনুসরণ করে থাকেন। অথচ উক্ত মর্মে যে বর্ণনা প্রচলিত আছে তা যঈফ। মোটেই আমলযোগ্য নয়।

(أ) عَنْ عَلِىٍّ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ  قَالَ مَنْ تَرَكَ مَوْضِعَ شَعْرَةٍ مِنْ جَنَابَةٍ لَمْ يَغْسِلْهَا فُعِلَ بِهِ كَذَا وَكَذَا مِنَ النَّارِ قَالَ عَلِىٌّ فَمِنْ ثَمَّ عَادَيْتُ رَأْسِىْ فَمِنْ ثَمَّ عَادَيْتُ رَأْسِىْ ثَلاَثًا وَكَانَ يَجِزُّ شَعْرَهُ.

(ক) আলী (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি নাপাকীর একচুল পরিমাণ স্থানও ছেড়ে দিবে এবং উহা ধৌত করবে না, তার সাথে আগুনের দ্বারা এই এই ব্যবস্থা করা হবে। আলী (রাঃ) বলেন, সে অবধিই আমি আমার মাথার সাথে শত্রুতা করেছি। একথা তিনি তিনবার বললেন। তিনি তার মাথার চুল খুব ছোট করে রাখতেন।[1]

তাহক্বীক্ব : বর্ণনাটি যঈফ।[2] উক্ত বর্ণনার সনদে ‘আত্বা, হাম্মাদ ও যাযান নামের ব্যক্তি ত্রুটিপূর্ণ।[3]

(ب) عَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ  إِنَّ تَحْتَ كُلِّ شَعْرَةٍ جَنَابَةً فَاغْسِلُوا الشَّعْرَ وَأَنْقُوا الْبَشَرَ.

(খ) আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, প্রত্যেক চুলের নীচেই নাপাকি রয়েছে। সুতরাং চুলগুলোকে ভালভাবে ধৌত করবে এবং চামড়াকে সুন্দর করে পরিষ্কার করবে।[4]

তাহক্বীক্ব : বর্ণনাটি যঈফ।[5] এর সনদে হারিছ ইবনু ওয়াজীহ নামক এক রাবী আছে। ইমাম আবুদাঊদ বলেন, তার হাদীছ মুনকার আর সে দুর্বল রাবী।[6]

(ج) عَنْ أَبِى أَيُّوْبَ الْأَنْصَارِيِّ أَنَّ النَّبِيَّ  قَالَ الصَّلَوَاتُ الْخَمْسُ وَالْجُمُعَةُ إِلَى الْجُمُعَةِ وَأَدَاءُ الْأَمَانَةِ كَفَّارَةٌ لِمَا بَيْنَهَا قُلْتُ وَمَا أَدَاءُ الْأَمَانَةِ قَالَ غُسْلُ الْجَنَابَةِ فَإِنَّ تَحْتَ كُلِّ شَعَرَةٍ جَنَابَةً.

(গ) আবু আইয়ূব আনছারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূল (ছাঃ) বলেন, পাঁচ ওয়াক্ত ছালাত, এক জুম‘আ থেকে অপর জুম‘আ, আমানত আদায় করা- এর মধ্যবর্তী সময়ের গুনাহের কাফফারা। আমি বললাম, আমানত আদায়ের অর্থ কী? তিনি বললেন, জানাবাতের গোসল করা। কারণ প্রতিটি পশমের গোড়ায় নাপাকি রয়েছে।[7]

তাহক্বীক্ব : উক্ত হাদীছও যঈফ।[8] এর সনদে উতবা ইবনু আবী হাকীম নামে একজন দুর্বল রাবী আছে।[9]

[1]. আবুদাঊদ হা/২৪৯, ১/৩৩ পৃঃ; আহমাদ হা/১১২১; মিশকাত হা/৪৪৪, পৃঃ ৪৮; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৪০৮।

[2]. সিলসিলা যঈফাহ হা/৯৩০; ইরওয়াউল গালীল হা/১৩৩; তাহক্বীক্ব মিশকাত হা/৪৪৪, ১/১৩৮ পৃঃ।

[3]. সিলসিলা যঈফাহ হা/৯৩০, ২/২৩২ পৃঃ।

[4]. আবুদাঊদ হা/২৪৮, ১/৩৩ পৃঃ; তিরমিযী হা/১০৬, ১/২৯ পৃঃ; ইবনু মাজাহ হা/৫৯৭, পৃঃ ৪৪; আলবানী, মিশকাত হা/৪৪৩, পৃঃ ৪৮; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৪০৭, ২/৯৭ পৃঃ।

[5]. সিলসিলা যঈফাহ হা/৩৮০১।

[6]. الحارث بن وجيه حديثه منكر وهو ضعيف- যঈফ আবুদাঊদ হা/২৮৪; তাহক্বীক্ব মিশকাত হা/৪৪৩, ১/১৩৮ পৃঃ।

[7]. ইবনু মাজাহ হা/৫৯৮, পৃঃ ৪৪, ‘পবিত্রতা অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-১০৬।

[8]. যঈফ ইবনে মাজাহ হা/৫৯৮।

[9]. সিলসিলা যঈফাহ হা/৩৮০১, ৮/২৭২।