ওযূ ভঙ্গের কারণ হিসাবে বিভিন্ন গ্রন্থে বমিকে উল্লেখ করা হয়েছে। আর মানুষও তাই আমল করে থাকে। অথচ তার পক্ষে কোন ছহীহ হাদীছ নেই।

(أ) عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ  مَنْ أَصَابَهُ قَيْءٌ أَوْ رُعَافٌ أَوْ قَلَسٌ أَوْ مَذْيٌ فَلْيَنْصَرِفْ فَلْيَتَوَضَّأْ ثُمَّ لِيَبْنِ عَلَى صَلاَتِهِ وَهُوَ فِىْ ذَلِكَ لاَ يَتَكَلَّمُ.

(ক) আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ছালাতের মধ্যে কারো যদি বমি হয় অথবা নাক থেকে রক্ত ঝরে বা মুখ দিয়ে খাদ্যদ্রব্য বের হয় কিংবা মযী নির্গত হয়, তাহলে সে যেন ফিরে যায় এবং ওযূ করে। এরপর পূর্ববর্তী ছালাতের উপর ভিত্তি করে ছালাত আদায় করে। আর এই সময়ে সে কোন কথা বলবে না।[1]

তাহক্বীক্ব : বর্ণনাটি যঈফ। উক্ত হাদীছের সনদে ইসমাঈল ইবনু আইয়াশ নামে একজন রাবী আছে, সে যঈফ। সে হিজাযের দুই ব্যক্তি থেকে বর্ণনা করেছে। কিন্তু তারাও যঈফ।[2]

(ب) عَنْ زَيْدِ بْنِ عَلِىٍّ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ جَدِّهِ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ  الْقَلْسُ حَدَثٌ.

(খ) যায়েদ ইবনু আলী তার পিতার সূত্রে তার দাদা থেকে বর্ণনা করেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, বমি অপবিত্র।[3]

তাহক্বীক্ব : বর্ণনাটি নিতান্ত যঈফ। ইমাম দারাকুৎনী হাদীছটি বর্ণনা করে বলেন, এর সনদে সাওর নামক রাবী রয়েছে। সে যায়েদ বা অন্য কারো নিকট থেকে বর্ণনা করেনি।[4] অতএব বমি হলে ওযূ করতে হবে মর্মে কোন ছহীহ বিধান নেই।

জ্ঞাতব্য : হেদায়া ও কুদূরীতে রক্ত বের হওয়া ও বমি হওয়াকে ওযূ ভঙ্গের কারণ হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে।[5] আর সে কারণেই এই আমল চালু আছে। দুঃখজনক হল, ইমাম দারাকুৎনীর উক্ত মন্তব্য থাকতে হেদায়া ও কুদূরীতে কিভাবে তা পেশ করা হল?

[1]. ইবনু মাজাহ হা/১২২১, ‘ছালাত কায়েম ও তার সুন্নাত’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-১৩৭।

[2]. في إسناده إسماعيل بن عياش . وقد روى عن الحجازيين وروايته عنهم ضعيفة -যঈফ ইবনে মাজাহ হা/১২২১; যঈফ আবুদাঊদ (আল-উম্ম), পৃঃ ৬৮; যঈফুল জামে‘ হা/৫৪২৬।

[3]. দারাকুৎনী ১/১৫৫ পৃঃ।

[4]. দারাকুৎনী ১/১৫৫ পৃঃ; সিলসিলা যঈফাহ হা/৪০৭৫, ৯/৭২ পৃঃ; যঈফুল জামে‘ হা/৪১৩৯।

[5]. وَالدَّمُ وَالْقَيْحُ إذَا خَرَجَا مِنْ الْبَدَنِ فَتَجَاوَزَا إِلَى مَوْضِعٍ يَلْحَقُهُ حُكْمُ التَّطْهِيْرِ وَالْقَيْءُ مِلْءَ الْفَمِ -হেদায়া ১ম খন্ড, পৃঃ ২৩; বঙ্গানুবাদ ১/৮-৯ পৃঃ; কুদূরী, পৃঃ ৫।