(১২) প্রতিটি অঙ্গ ধৌত করার সময় পৃথক পৃথক দু‘আ পড়া

ওযূর প্রত্যেক অঙ্গ ধৌত করার সময় পৃথক পৃথক দু‘আ পড়তে হবে মর্মে আশরাফ আলী থানভী (রহঃ) উল্লেখ করেছেন। তবে তিনি কোন দলীল পেশ করেননি। অন্য শব্দে একটি জাল হাদীছ বর্ণিত হয়েছে। যেমন-

يَا أَنَسُ ادْنُ مِنِّىْ أُعَلِّمْكَ مَقَادِيْرَ الْوُضُوْءِ فَدَنَوْتُ فَلَمَّا أَنْ غَسَلَ يَدَيْهِ قَالَ بِسْمِ اللهِ وَالْحَمْدُ لِلَّهِ وَلاَ حَوْلَ وَلاَ قُوَّةَ إِلاَّ بِاللهِ فَلَمَّا اسْتَنْجَى قَالَ اللَّهُمَّ حَصِّنْ فَرْجِىْ وَيَسِّرْ لِىْ أَمْرِىْ فَلَمَّا تَوَضَّأَ وَاسْتَنْشَقَ قَالَ اللَّهُمَّ لَقِّنِىْ حُجَّتِىْ وَلاَ تَحْرِمْنِىْ رَائِحَةَ الْجَنَّةِ فَلَمَّا غَسَلَ وَجْهَهُ قَالَ اللَّهُمَّ بَيِّضْ وَجْهِىْ يَوْمَ تَبْيَضُّ وُجُوْهٌ فَلَمَّا أَنْ غَسَلَ ذِرَاعَيْهِ قَالَ اللَّهُمَّ أَعْطِنِىْ كِتَابِىْ بِيَمِيْنِىْ فَلَمَّا أَنْ مَسَحَ يَدَهُ عَلَى رَأْسِهِ قَالَ اللَّهُمَّ أَغِثْنَا بِرَحْمَتِكَ وَجَنِّبْنَا عَذَابَكَ فَلَمَّا أَنْ غَسَلَ قَدَمَيْهِ قَالَ اللَّهُمَّ ثَبِّتْ قَدَمِىْ يَوْمَ تَزِلْ فِيْهِ الْأَقْدَامُ ثُمَ قَالَ وَالَّذِىْ بَعَثَنِىْ بِالْحَقِّ يَا أَنَسُ مَا مِنْ عَبْدٍ قَالَهَا عِنْدَ وُضُوْئِهِ لَمْ تَقْطُرْ مِنْ خِلَلِ أَصَابِعِهِ قَطْرَةٌ إِلاَّ خَلَقَ اللهُ تَعَالَى مَلِكًا يُسَبِّحُ اللهَ بِسَبْعِيْنَ لِسَانًا يَكُوْنُ ثَوَابُ ذَلِكَ التَّسْبِيْحِ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ.

(রাসূল (ছাঃ) বলেন) হে আনাস! তুমি আমার নিকটবর্তী হও, তোমাকে ওযূর মিক্বদার শিক্ষা দিব। অতঃপর আমি তার নিকটবর্তী হলাম। তখন তিনি তাঁর দুই হাত ধৌত করার সময় বললেন, ‘বিসমিল্লা-হি ওয়াল হামদুল্লিা-হি ওয়ালা হাওলা ওয়ালা কুউওয়াতা ইল্লা বিল্লা-হি’। যখন তিনি ইস্তিঞ্জা করলেন তখন বললেন, ‘আল্লা-হুম্মা হাছ্ছিন ফারজী ওয়া ইয়াস্সিরলী আমরী’। যখন তিনি ওযূ করেন ও নাক ঝাড়েন তখন বললেন, ‘আল্লা-হুম্মা লাক্কিনী হুজ্জাতী ওয়ালা তারহামনী রায়েহাতাল জান্নাতি’। যখন তার মুখমণ্ডল ধৌত করেন তখন বললেন, ‘আল্লা-হুম্মা বাইয়িয ওয়াজহী ইয়াওমা তাবইয়ায্যু উজূহুওঁ’। যখন তিনি দুই হাত ধৌত করলেন তখন বললেন, ‘আল্লাহুম্মা আ‘ত্বিনী কিতাবী ইয়ামানী’। যখন হাত দ্বারা মাসাহ করলেন তখন বললেন, ‘আল্লা-হুম্মা আগিছনা বিরহমাতিকা ওয়া জান্নিবনা আযাবাকা’। যখন তিনি দুই পা ধৌত করলেন তখন বললেন, ‘আল্ল-হুম্মা ছাবিবত ক্বাদামী ইয়াওমা তাযিল্লু ফীহি আক্বদাম’।

অতঃপর তিনি বলেন, হে আনাস! ঐ সত্তার কসম করে বলছি, যিনি আমাকে সত্যসহ প্রেরণ করেছেন, যে বান্দা ওযূ করার সময় এই দু‘আ বলবে, তার আঙ্গুল সমূহের ফাঁক থেকে যত ফোঁটা পানি পড়বে তার প্রত্যেক ফোঁটা দ্বারা আল্লাহ তা‘আলা একজন করে ফেরেশতা তৈরি করবেন। সেই ফেরেশতা সত্তরটি জিহবা দ্বারা আল্লাহর তাসবীহ বর্ণনা করবেন। এই ছওয়াব ক্বিয়ামত পর্যন্ত হতে থাকবে।[1]

তাহক্বীক্ব : বর্ণনাটি জাল। এর সনদে উবাদা বিন ছুহাইব ও আহমাদ বিন হাশেমসহ কয়েকজন মিথ্যুক রাবী রয়েছে। ইমাম বুখারী, নাসাঈ, দারাকুৎনীসহ অন্যান্য মুহাদ্দিছও তাদেরকে পরিত্যক্ত বলেছেন। ইমাম নববী বলেন, এই বর্ণনাটি বাতিল, এর কোন ভিত্তি নেই।[2]

[1]. তাযকিরাতুল মাওযূ‘আত, পৃঃ ৩২; আল-ফাওয়াইদুল মাজমূ‘আহ, পৃঃ ১৩, ‘পবিত্রতা’ অধ্যায়, হা/৩৩।

[2]. فِيْهِ عُبَادَةُ بْنُ صُهَيْبٍ مُتَّهِمٌ وَقَالَ الْبُخَارِيُّ وَالنَّسَائِيُّ مَتْرُوْكٌ وفيه أحمد بن هاشم اتهمه الدارقطني وقد نص النووي بِبُطْلاَنِ هَذَا الْحَدِيْثِ وَأَنَّهُ لاَ أَصْلَ لَهُ -তাযকিরাতুল মাওযূ‘আত, পৃঃ ৩২; আল-ফাওয়াইদুল মাজমূ‘আহ, পৃঃ ১৩, ‘পবিত্রতা’ অধ্যায়, হা/৩৩।