(২) যায়তুন দ্বারা মিসওয়াক করা ফযীলতপূর্ণ

যায়তুন দ্বারা মিসওয়াক করার জন্য উৎসাহ প্রদান করা হয় এবং বিশেষ গুরুত্ব বর্ণনা করা হয়। অথচ এর পক্ষে শারঈ কোন বিধান নেই। এ মর্মে যে হাদীছ বর্ণিত হয়েছে তা জাল।

(أ) عَنْ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ  قَالَ نِعْمَ السِّوَاكُ الزَّيْتُوْنُ مِنْ شَجَرةٍ مُبارَكَةٍ يُطَيِّبُ الْفَمَ ويُذْهِبُ الحَفْرَ وَهُوَ سِوَاكِىْ وسِوَاكُ الْأَنْبِيَاءِ قَبْلِىْ.

(ক) মু‘আয বিন জাবাল বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, উত্তম মিসওয়াক হল বরকতপূর্ণ যায়তুন গাছ, যা মুখকে পবিত্র করে ও দাঁতের আবরণ দূর করে। এটা আমার মিসওয়াক ও আমার পূর্বের নবীগণের মিসওয়াক।[1]

তাহক্বীক্ব : বর্ণনাটি জাল। উক্ত বর্ণনার সনদে মুহাম্মাদ ইবনু ইসহাক্ব আল-উকাশী নামে একজন মিথ্যুক রাবী আছে। ইমাম যাহাবী, দারাকুৎনী, ইবনু হাজার আসক্বালানী সহ অন্যান্য মুহাদ্দিছও তাকে মিথ্যুক বলে অভিহিত করেছেন।[2] ইমাম হায়ছামী বলেন, এর সনদে মুহাম্মাদ ইবনু মুহছিন উকাশীও আছে। সে চরম মিথ্যাবাদী।[3]

(ب) عَنْ أَبِىْ خَيْرَةَ الصَّبَّاحِىِّ قَالَ كُنْتُ فِى الْوَفْدِ الَّذِيْنَ أَتَوْا رَسُوْلَ اللهِ  مِنْ عَبْدِ الْقَيْسِ فَزَوَّدَنَا الأَرَاكَ نَسْتَاكُ بِهِ فَقُلْنَا يَا رَسُوْلَ اللهِ عِنْدَنَا الْجَرِيْدُ وَلَكِنَّا نَقْبَلُ كَرَامَتَكَ وَعَطِيَّتَكَ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ  اللهُمَّ اغْفِرْ لِعَبْدِ الْقَيْسِ إِذْ أَسْلَمُوْا طَائِعِيْنَ غَيْرَ مُكْرَهِيْنَ إِذْ قَعَدَ قَوْمِىْ لَمْ يُسْلِمُوْا إِلاَّ خَزَايَا مَوْتُوْرِيْنَ.

(খ) আবু খায়রাহ ছববাহী (রাঃ) বলেন, আমি আব্দুল ক্বায়স প্রতিনিধি দলের সাথে ছিলাম, যারা রাসূল (ছাঃ)-এর কাছে গিয়েছিল। তিনি পাথেয় বাবদ মিসওয়াক করার জন্য আমাদেরকে আরাক গাছের ডাল দিলেন, যাতে আমরা তা দ্বারা মিসওয়াক করি। আমরা বললাম, আমাদের নিকট মিসওয়াক করার জন্য খেজুরের ডাল রয়েছে। তবে আমরা আপনার সম্মানজনক দান গ্রহণ করছি। তখন রাসূল (ছাঃ) বললেন, হে আল্লাহ! আব্দুল ক্বায়েসের প্রতিনিধি দলকে ক্ষমা করুন। কারণ তারা আনুগত্য স্বীকার করে ইসলাম গ্রহণ করেছে, অসন্তুষ্টিতে নয়। আর আমার সম্প্রদায় অপমানিত ও তীর-ধনুকের কবলে না পড়ে ইসলাম গ্রহণ করেনি।[4]

তাহক্বীক্ব : হাদীছটি যঈফ। এর সনদে দাঊদ ইবনু মাসাওয়ার নামক রাবী রয়েছে। সে অপরিচিত, কেউ তাকে নির্ভরযোগ্য বলেননি। তার শিক্ষক মুক্বাতিল বিন হুমামও অপরিচিত।[5]

[1]. ত্বাবারাণী, আল-আওসাত্ব, হা/৬৮৯।

[2]. আহমাদ ইবনু আলী ইবনু হাজার আল-আসক্বালানী, তাহযীবুত তাহযীব (বৈরুত : দারুল কুতুব আল-ইলমিয়াহ, ১৪১৫/১৯৯৪), ৯/৩৭১ পৃঃ।

[3]. فيه محمد بن محصن العكاشي وهو كذاب সিলসিলা যঈফাহ হা/৫৩৬০ ও ৫৫৭০।

[4]. ত্বাবারাণী কাবীর হা/১৮৩৫৯; মুন্তাখাব হাদীস, পৃঃ ৩০০।

[5]. ইমাম বুখারী, তারীখুল কাবীর ৩/২৪৭ পৃঃ।