তাঁর নাম আব্দুল্লাহ। কারও মতে আতিক, যাকে (জাহান্নাম থেকে) মুক্ত করা হয়েছে। তাঁর বংশধারা ছয় পুরুষ উপরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বংশধারার সাথে মিলিত হয়েছে। তিনি ব্যবসা করতেন, প্রচুর সম্পদের মালিক ছিলেন তিনি।
জাহিলিয়ার সময়ে তিনি কুরাইশদের একজন নেতা ছিলেন। পরামর্শ-দাতা, জনপ্রিয় এবং বিভিন্ন বিষয়ে বিশেষজ্ঞ- বিশেষ করে নসব বা বংশসংক্রান্ত জ্ঞানে তিনি পারদর্শী ছিলেন। তাঁর সম্পর্কে কুরাইশদের একজন নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি ইবন আদ-দাগেনার মন্তব্য ছিল: আপনি আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করেন, সৎ, অভাবীদের সহায়তাকারী, অতিথি পরায়ণ, বিপদে সাহায্যকারী। সে এই মন্তব্য করেছিল যখন কুরাইশদের অত্যাচারে আবু বকর মক্কা ছেড়ে চলে যাচ্ছিলেন। ইবন আদ-দাগেনা তাঁকে যেতে দেয় নি, নিরাপত্তা দিয়ে ফিরিয়ে এনেছিল এই শর্তে যে তিনি প্রকাশ্যে সালাত আদায় করবেন না ও কুরআন তিলাওয়াত করবেন না। তাঁর মন ছিল অত্যন্ত নরম। সালাত ও কুর‘আন তিলাওয়াতের সময় তিনি কাঁদতেন, মুশরিকদের মহিলা ও শিশুরা তাতে আকৃষ্ট হতো। কিছুদিন শর্ত মনে চললেও পরে আবু বকর তার নিরাপত্তা প্রত্যাখ্যান করেন।
আবু বকর ছিলেন হালকা পাতলা গড়লের। তাঁর তিন কন্যা ও দুই পুত্র ছিল। ছোট মেয়ে আয়েশাকে তিনি বাল্যকালেই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে বিয়ে দিয়েছিলেন। আর অন্য দুই কন্যা আসমা ও উম্ম কুলসুমের বিয়ে হয় জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত দুই সাহাবী যুবায়ের ও তালহার সাথে-যাঁরা একসাথে থাকতেন ও একসাথে মারা যান।
আবু বকর কখনোই মূর্তিপূজা করেন নি, মদপান করেন নি। তিনি মনে করতেন এটা সম্ভ্রম ও বিবেচনাবিরোধী। সত্যের প্রতি তাঁর অন্তর আগে থেকেই উন্মুখ ছিল। ইসলাম আসার পর তিনি সবকিছুর উপর তা পছন্দ করলেন এবং সম্পূর্ণ ও পরিপূর্ণভাবে তাতে প্রবেশ করলেন।
জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত দশজন সাহাবীর মধ্যে পাঁচজনই তাঁর আহ্বানে সাড়া দিয়ে ইসলাম গ্রহণ করেন।