আমরা এই নাস্তিকদের সঙ্গে কিরূপ আচরণ করব?

অতএব কুলাঙ্গার নাস্তিকদের সঙ্গে আমাদের কোনো ধরনের ভালোবাসা ও মিত্রতা রাখা যাবে না। আমরা তখনই পূর্ণ মুমিন হতে পারব যখন আমাদের সম্পর্কের মাপকাঠি হবে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের ভালোবাসা। যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে ভালোবাসবে সে আমার বন্ধু, যে বাসবে না সে আমার পরম মিত্র হতে পারে না। কারণ, মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা বলেন,

﴿لَّا تَجِدُ قَوۡمٗا يُؤۡمِنُونَ بِٱللَّهِ وَٱلۡيَوۡمِ ٱلۡأٓخِرِ يُوَآدُّونَ مَنۡ حَآدَّ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥ وَلَوۡ كَانُوٓاْ ءَابَآءَهُمۡ أَوۡ أَبۡنَآءَهُمۡ أَوۡ إِخۡوَٰنَهُمۡ أَوۡ عَشِيرَتَهُمۡۚ أُوْلَٰٓئِكَ كَتَبَ فِي قُلُوبِهِمُ ٱلۡإِيمَٰنَ وَأَيَّدَهُم بِرُوحٖ مِّنۡهُۖ وَيُدۡخِلُهُمۡ جَنَّٰتٖ تَجۡرِي مِن تَحۡتِهَا ٱلۡأَنۡهَٰرُ خَٰلِدِينَ فِيهَاۚ رَضِيَ ٱللَّهُ عَنۡهُمۡ وَرَضُواْ عَنۡهُۚ أُوْلَٰٓئِكَ حِزۡبُ ٱللَّهِۚ أَلَآ إِنَّ حِزۡبَ ٱللَّهِ هُمُ ٱلۡمُفۡلِحُونَ ٢٢ ﴾ [المجادلة: ٢٢]

‘আল্লাহ ও পরকালের প্রতি বিশ্বাসী এমন কোনো জাতিকে পাবে না যে, তারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরুদ্ধাচারীদেরকে ভালোবাসে, হোন এই বিরুদ্ধাচারী তাদের পিতা, পুত্র, ভাই অথবা তাদের গোত্রীয় কেউ। এদের অন্তরে আল্লাহ ঈমান লিখে দিয়েছেন এবং তাঁর পক্ষ থেকে রূহ দ্বারা তাদের শক্তিশালী করেছেন। তিনি তাদের প্রবেশ করাবেন এমন জান্নাতসমূহে যার নিচে দিয়ে ঝর্ণাধারাসমূহ প্রবাহিত হয়। সেখানে তারা স্থায়ী হবে। আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন এবং তারাও আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছে। এরা হল আল্লাহর দল। জেনে রাখ, নিশ্চয় আল্লাহর দলই সফলকাম।’(সূরা মুজাদালা, আয়াত : ২২)

এদের বন্ধুরূপে গ্রহণের সমালোচনায় আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿ تَرَىٰ كَثِيرٗا مِّنۡهُمۡ يَتَوَلَّوۡنَ ٱلَّذِينَ كَفَرُواْۚ لَبِئۡسَ مَا قَدَّمَتۡ لَهُمۡ أَنفُسُهُمۡ أَن سَخِطَ ٱللَّهُ عَلَيۡهِمۡ وَفِي ٱلۡعَذَابِ هُمۡ خَٰلِدُونَ ٨٠ وَلَوۡ كَانُواْ يُؤۡمِنُونَ بِٱللَّهِ وَٱلنَّبِيِّ وَمَآ أُنزِلَ إِلَيۡهِ مَا ٱتَّخَذُوهُمۡ أَوۡلِيَآءَ وَلَٰكِنَّ كَثِيرٗا مِّنۡهُمۡ فَٰسِقُونَ ٨١ ﴾ [المائ‍دة: ٨٠، ٨١]

‘তাদের অনেককে তুমি কাফেরদের সঙ্গে মিত্রতা করতে দেখবে, কত নিকৃষ্ট তাদের কৃতকর্ম। যে কারণে আল্লাহ তাদের ওপর রাগান্বিত হয়েছেন, তাদের শাস্তি ভোগ স্থায়ী হবে। তারা আল্লাহ, নাবী ও তাঁর ওপর যা অবতীর্ণ হয়েছে তাতে ঈমান আনলে তাদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করত না। কিন্তু তাদের অনেক ফাসেক।’ (সুরা মায়িদাহ, আয়াত : ৮০-৮১)

হাদীসে কুদসীতে এসেছে, আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

إِنَّ اللَّهَ قَالَ: مَنْ عَادَى لِي وَلِيًّا فَقَدْ آذَنْتُهُ بِالحَرْبِ

‘আল্লাহ তা‘আলা বলেন, যে ব্যক্তি আমার কোনো বন্ধুর সঙ্গে শত্রুতা করল আমি তার বিরুদ্ধে যুদ্ধের ঘোষণা দিলাম। [বুখারী : ৬৫০২]

এইনাস্তিকরা এত বড় অপরাধী যে এদের জন্য এমনকিআল্লাহর কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা বা রহমতেরদু‘আকরাযাবে না। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা বলেন,

﴿ مَا كَانَ لِلنَّبِيِّ وَٱلَّذِينَ ءَامَنُوٓاْ أَن يَسۡتَغۡفِرُواْ لِلۡمُشۡرِكِينَ وَلَوۡ كَانُوٓاْ أُوْلِي قُرۡبَىٰ مِنۢ بَعۡدِ مَا تَبَيَّنَ لَهُمۡ أَنَّهُمۡ أَصۡحَٰبُ ٱلۡجَحِيمِ ١١٣ ﴾ [التوبة: ١١٣]

‘নবী ও মু’মিনদের জন্য আত্মীয় স্বজন হলেও মুশরিকদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা সংগত নয় যখন তা সুস্পষ্ট হয়ে গেছে যে, নিশ্চিতই তারা জাহান্নামী।’ (সূরা আত-তাওবা, আয়াত : ১১৩)

উপরোক্ত আলোচনা থেকে এ কথা প্রতীয়মান হয় যে, যারা আল্লাহ এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বিরুদ্ধআচারণ করবে তাদের সঙ্গে কোনো রকম যোগাযোগতথা ভালোবাসা ও মিত্রতা রাখা যাবে না। এমনকি স্বঘোষিত নাস্তিক হিসেবে মৃত্যু বরণকারীদের জন্য ক্ষমা ও রহমতের দু‘আ করা যাবে না।

অবশেষে প্রার্থনা, আল্লাহ এই দেশ ও জাতিকে রক্ষা করুন। এ দেশে ইসলাম ও মুসলমানের ইজ্জত-আব্রু হেফাযত করুন। আল্লাহ নাস্তিকদের সুমতি এবং আস্তিকদের মজবুতি (ঈমানে দৃঢ়তা) দান করুন। ইসলামের স্বপক্ষের লোকদের শক্তি বৃদ্ধি করুন এবং মিডিয়ার অস্ত্রে সজ্জিত হওয়ার তাওফীক দান করুন। আমীন।