শোক পালনের সময় বিধবা স্ত্রীর উপর যেসব বিষয় নিষিদ্ধঃ
এক. প্রয়োজন ছাড়া বাড়ী থেকে বের হবে না। যেমনঃ সে অসুস্থ হলে হাসপাতালে যেতে পারবে, তবে দিনের বেলায় যাবে। অনুরূপভাবে যরূরী কারণ ছাড়া বাড়ী থেকে বের হবে না। যেমনঃ তার বাড়ী ধ্বসে পড়ার উপক্রম হল এবং ভেঙ্গেচুরে তার গায়ের উপর পড়ার ভয় পেল, অথবা তার বাড়ীতে আগুন লেগে গেল ইত্যাদি। বিদ্বানগণ বলেন, দিনের বেলায় দরকারে বের হতে পারে। কিন্তু রাতে যরূরী কারণ ছাড়া বের হবে না।
দুই. খোশবূ ব্যবহার করবে না। কেননা রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম শোক পালনকারিণীকে ঋতুমুক্ত না হওয়া পর্যন্ত খোশবূ ব্যবহার করতে নিষেধ করেছেন। ঋতুমুক্ত হওয়ার পর ঋতুর চিহ্ন দূর হওয়ার উদ্দেশ্যে সামান্য পরিমাণ আযফার (এক প্রকার খোশবূ) ব্যবহার করবে।[1]
তিন. শোভাবর্ধক সুন্দর কোনো পোশাক পরিধান করবে না। কেননা নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এমন পোশাক পরতে নিষেধ করেছেন।[2] ফলে সে কোনো রকম সাজসজ্জা ছাড়াই ঐ জাতীয় সাধারণ পোশাক পরবে, বাড়িতে স্বাভাবিক যেসব পোশাক পরা হয়।
চার. চোখে সুরমা লাগাবে না। কেননা নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম চোখে সুরমা লাগাতে নিষেধ করেছেন।[3] তবে যদি সুরমা লাগাতে বাধ্য হয়, তাহলে এমনভাবে লাগাবে যাতে রাতে সুরমার রঙ প্রকাশ না পায়। আর দিনের বেলায় উহা মুছে ফেলবে।
পাঁচ. অলংকার পরবে না। কেননা সুন্দর পোশাক পরাই যদি নিষেধ হয়, তাহলে অলংকার পরার নিষেধাজ্ঞা তো আরো স্বাভাবিক।
সে পুরুষদের সাথে কথা বলতে পারবে, ফোন-মোবাইলে কথা বলতে পারবে। বাড়ীতে প্রবেশে শরী‘আতে বাধা নেই এমন ব্যক্তিকে বাড়ীতে প্রবেশের অনুমতি দিতে পারবে। রাতে ও দিনে বাড়ীর ছাদে উঠতে পারবে। প্রত্যেক জুমু‘আয় গোসল করা তার জন্য আবশ্যক– কিছু সাধারণ জনতার এমন ধারণা ঠিক নয়। প্রত্যেক সপ্তাহে তাকে তার মাথার চুলও খুলতে হবে না।
অনুরূপভাবে ইদ্দত শেষ হওয়ার পরে কিছু জিনিষ নিয়ে বের হওয়া এবং সর্বপ্রথম যার সাথে সাক্ষাৎ হবে, তাকে তা দান করে দেওয়ার প্রথাও শরী‘আত সম্মত নয়; বরং তা বিদ‘আত।
[2]. উম্মে আত্বিইয়াহ (রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা) বর্ণিত উল্লেখিত হাদীছে এসেছে, ‘আমাদেরকে রঙীন কাপড় পরতে নিষেধ করা হত। তবে এক ধরনের ডোরা-কাটা পোষাক পরার অনুমতি দেওয়া হত’।
[3]. উম্মে আত্বিইয়াহ (রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা) বর্ণিত উল্লেখিত হাদীছে এসেছে, ‘আমাদেরকে চোখে সুরমা লাগাতে নিষেধ করা হত’।