দ্বিতীয় মূলনীতি: সিফাতের অধ্যায় নামের অধ্যায় থেকে প্রশস্ততর।

 কারণ প্রতিটি নামই একটি গুণকে শামিল করে আছে, যেমন আল্লাহর নাম-বিষয়ক মূলনীতির তৃতীয়টিতে উল্লিখিত হয়েছে। আর যেহেতু আল্লাহর সিফাত আল্লাহর কার্যাদির সঙ্গে সম্পৃক্ত, আর আল্লাহর কার্যাদির কোনো সীমা পরিসীমা নেই, যেমন তার কথারও কোনো সীমা পরিসীমা নেই। ইরশাদ হয়েছে:

﴿ وَلَوۡ أَنَّمَا فِي ٱلۡأَرۡضِ مِن شَجَرَةٍ أَقۡلَٰمٞ وَٱلۡبَحۡرُ يَمُدُّهُۥ مِنۢ بَعۡدِهِۦ سَبۡعَةُ أَبۡحُرٖ مَّا نَفِدَتۡ كَلِمَٰتُ ٱللَّهِۚ إِنَّ ٱللَّهَ عَزِيزٌ حَكِيمٞ ٢٧ ﴾ [لقمان: ٢٧]

‘আর জমিনে যত গাছ আছে তা যদি কলম হয়, আর সমুদ্র (হয় কালি), তার সাথে কালিতে পরিণত হয় আরো সাত সমুদ্র, তবুও আল্লাহর বাণীসমূহ শেষ হবে না। নিশ্চয় আল্লাহ মহাপরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। (সূরা লুকমান: ৩১: ২৭)

এর উদাহরণ: আল্লাহর গুণসমূহের মধ্যে কয়েকটি হলো নিম্নরূপ:

الإتيان আগমণ করা, الأخذ পাকড়াও করা, الإمساكধরা, البطش পাকড়াও করা এবং এজাতীয় আরও অগণিত সিফাত। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

﴿ وَجَآءَ رَبُّكَ﴾ [الفجر: ٢٢]

আর তোমার রব আসবেন... (সূরা ফজর: ৮৯: ২২)

﴿ هَلۡ يَنظُرُونَ إِلَّآ أَن يَأۡتِيَهُمُ ٱللَّهُ فِي ظُلَلٖ مِّنَ ٱلۡغَمَامِ﴾ [البقرة: ٢١٠]

‘তারা কি এরই অপেক্ষা করছে যে, মেঘের ছায়ায় আল্লাহ তাদের নিকট আগমন করবেন।’ (সূরা আল বাকারা: ২: ২১০)

আল্লাহ বলেছেন:

﴿فَأَخَذَهُمُ ٱللَّهُ بِذُنُوبِهِمۡۗ﴾ [ال عمران: ١١]

ফলে তাদের পাপের কারণে আল্লাহ তাদরেকে পাকড়াও করেছেন। (সূরা আলে ইমরান: ৩: ১১)

অন্য এক আয়াতে আল্লাহ বলেন:

﴿َيُمۡسِكُ ٱلسَّمَآءَ أَن تَقَعَ عَلَى ٱلۡأَرۡضِ إِلَّا بِإِذۡنِهِۦٓۚ﴾ [الحج: ٦٥]

‘আর তিনিই আসমানকে আটকিয়ে রেখেছেন, যাতে তাঁর অনুমতি ছাড়া তা জমিনের উপর পড়ে না যায়।’ (সূরা আল হাজ্জ: ২২: ৬৫)

আল্লাহ আরো বলেন:

﴿ إِنَّ بَطۡشَ رَبِّكَ لَشَدِيدٌ ١٢ ﴾ [البروج: ١٢]

‘নিশ্চয় তোমার রবের পাকড়াও বড়ই কঠিন।’ (সূরা আল বুরুজ: ৮৫: ১২)

আবার ইরশাদ হয়েছে:

﴿يُرِيدُ ٱللَّهُ بِكُمُ ٱلۡيُسۡرَ وَلَا يُرِيدُ بِكُمُ ٱلۡعُسۡرَ﴾ [البقرة: ١٨٥]

আল্লা­হ তোমাদের জন্য সবকিছু সহজ করে দিতে চান এবং কঠিন চান না। (সূরা আল বাকারা: ২: ১৮৫)

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

«ينزل ربنا كل ليلة إلى السماء الدنيا»

(আমাদের রব প্রতিদিনই নিম্নাকাশে নেমে আসেন।) [1]অতএব, আমরা আল্লাহর সঙ্গে এসব গুণ ঠিক সেভাবেই সম্পৃক্ত করব যেভাবে ওপরে বর্ণিত হলো। আর এগুলো দিয়ে আল্লাহ তা‘আলার নাম তৈরি করব না, বলব না যে আল্লাহর নাম হলো الجائي (আগন্তক), الآتي (আগন্তক), الآخذ (পাকড়াওকারী), الممسك (ধারক), الباطش (পাকড়াও কারী), المريد (ইচ্ছুক), النازل (অবতরণকারী) ইত্যাদি। যদিও আমরা এসব গুণ ব্যবহার করে আল্লাহ তা‘আলার ব্যাপারে সংবাদ দিই এবং এসব গুণে আল্লাহ তা‘আলাকে গুণান্বিত করি।

[1] - বুখারী, হাদীস নং (১১৪৫), মুসলিম, হাদীস নং (৭৫৮)