অনুমান দ্বারা খেজুর ও আঙ্গুরের নিসাব নির্ধারণ করা

অনুমান বা খারস হচ্ছে যাকাত উসুলকারী আমানতদারের অভিজ্ঞতা লব্ধ ধারণা, যিনি মালিক থেকে যাকাত উসুল করেন, যেমন খেজুর ও আঙ্গুরের বাগান দেখে ওজন ব্যতীত একটি পরিমাণ বলেন, যা অভিজ্ঞ ও নির্ভরযোগ্য ব্যক্তি ব্যতীত সম্ভব নয়। অভিজ্ঞ ব্যক্তি অনুমান করে শুকনো খেজুর বা কিশমিশের পরিমাণ বলবেন, অর্থাৎ গাছের ব্যবহার উপযোগী খেজুর বা আঙ্গুর দেখে বলবেন: এই বাগানের খেজুর বা আঙ্গুর শুকালে এই পরিমাণ খেজুর বা কিশমিশ হবে। অনুমান করার উদ্দেশ্য, গাছে থাকাবস্থায় ব্যবহার উপযোগী ফলের পরিমাণ জেনে খাওয়ার পূর্বে তার যাকাত নির্ণয় করা।

অনুমান করার সময় লক্ষণীয়:

১. ফল ব্যবহার উপযোগী হওয়ার পর অনুমান করবে, অর্থাৎ যখন ফলের রঙ লাল, হলুদ বা আঙ্গুরে মিষ্টতা শুরু হয়।

২. অনুমানকারী একাধিক হওয়া জরুরি নয়, একজন যথেষ্ট, তবে আমানতদার হওয়া ও অনুমান করার অভিজ্ঞতা থাকা জরুরি।

৩. মালিকের খাওয়ার অংশ অনুমানকারী হিসেব থেকে বাদ দিবে, অর্থাৎ নিসাব নির্ণয় করে বলবে এই পরিমাণ খাবারের জন্য বাদ দিলাম। কতক আলিম বলেছেন খাওয়ার পরিমাণ এক তৃতীয়াংশ, যদি এক তৃতীয়াংশ না রাখে এক-চতুর্থাংশ অবশ্যই রাখবে। কারণ, তারা খাবে ও মেহমানকে খাওয়াবে এবং তাদের প্রতিবেশী ও বন্ধুদের খেতে দিবে। খাবারের অংশ রেখে অবশিষ্ট অংশ থেকে যাকাত দিবে।

৪. ইবন কুদামাহ রহ. বলেছেন: যদি মালিক বলেন যে, অনুমানকারী অনুমান করতে ভুল করেছেন, তার দাবি যুক্তিসঙ্গত হলে গ্রহণ করা হবে, কসমের প্রয়োজন নেই। আর যদি তার দাবি যুক্তি সঙ্গত না হয়, যেমন বলল অর্ধেক ভুল করেছে, বা অনুরূপ কিছু বলল, তার কথা গ্রহণ করা হবে না। আর যদি বলে: অনুমানের বাইরে কিছুই থাকবে না, তার কথা গ্রহণ করা হবে কসম ব্যতীত। কারণ, অনেক ফল বিপদাপদে নষ্ট হবে, যার কারণ আমরা জানি না।[1]

৫. যদি ইমাম কাউকে অনুমান করার জন্য নির্ধারণ না করেন, যেমন বর্তমানে করা হয় না। তাহলে ইবন কুদামাহ রহ. বলেছেন: ফসলের মালিক অনুমানকারী ঠিক করবে। আবার মালিকের নিজের অনুমান করাও বৈধ, তবে সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি, যে খাতে যা প্রযোজ্য তার চেয়ে বেশি নিবে না, যথা খাবারের জন্য এক-তৃতীয়াংশ বা এক চতুর্থাংশ থেকে বেশি নিবে না, যেমন পূর্বে বলেছি।[2]

৬. অনুমান শুধু খেজুরের জন্য প্রযোজ্য, তার সাথে যোগ হবে আঙ্গুর। অন্যান্য দানা জাতীয় শস্য অনুমান করে বলা যথেষ্ট নয়, মাপা জরুরি।

৭. অনুমান করার পদ্ধতি: অনুমানকারী ঘুরেঘুরে বাগানের ফল দেখবে ও বলবে: এই গাছে এতো কেজি খেজুর হবে, শুকালে এত কেজি খেজুর টিকবে, একই ভাবে আঙ্গুর থেকে উৎপাদিত কিশমিশ অনুমান করবে।

জরুরি জ্ঞাতব্য:

অধিকাংশ আলিম বলেন মধুর ভেতর যাকাত নেই, তবে মধু যদি ব্যবসায়ী পণ্য হয়, ব্যবসার পণ্যের ন্যায় তাতে যাকাত ওয়াজিব হবে, যেমন পূর্বে বলেছি।

">
[1] আল-মুগনি: (২/৭০৮)

[2] আল-মুগনি: (২/৭০৯)