এ অধ্যায় দ্বারা উদ্দেশ্য উট, গরু ও বকরির যাকাত। কারণ, এসব প্রাণী ব্যতীত অন্যান্য প্রাণীর যাকাতের কথা হাদীসে উল্লেখ নেই। অতএব, সাধারণ পাখি, মুরগি, ঘোড়া, গাধা, খরগোশ ও অন্যান্য প্রাণীতে যাকাত নেই, তার সংখ্যা যত বেশি হোক, তবে কোনও প্রাণী ব্যবসার জন্য নির্ধারিত হলে ব্যবসায়ী পণ্য হিসেবে তাতে যাকাত ওয়াজিব হবে। চতুষ্পদ প্রাণীর যাকাতের জন্য শর্তসমূহ:

১. নিসাব পরিমাণ হওয়া, যার ব্যাখ্যা সামনে আসছে।

২. হিজরী এক বছর পূর্ণ হওয়া।

৩. যাকাতের পশু সায়েমা হওয়া। (সায়েমার সংজ্ঞা নিম্নের প্যারাতে আসছে)

পশু যদি মালিকের কেটে আনা ঘাস খায়, তাতে যাকাত ওয়াজিব হবে না, অধিকাংশ আলেমের মত এটি। আর যদি ব্যবসার জন্য পশু লালন-পালন করা হয় ব্যবসার পণ্য হবে, তাদের লালন-পালন যেভাবেই হোক না কেন। তবে লক্ষণীয় যে, কেউ যদি নিজের জমি চাষ করার জন্য পশু পালন করে তাতে যাকাত নেই, কারণ এগুলো সায়েমা নয়, গৃহপালিত পশুও ব্যবহারের আসবাব-পত্রের ন্যায়। আলিমদের বিশুদ্ধ মত এটি। কারণ সায়েমা পশুর ওপর যাকাত ওয়াজিব, অর্থাৎ যেসব পশু মাঠে-জঙ্গলে ও পাহাড়ে চরে বেড়ায় এবং বছরের অধিকাংশ দিন প্রাকৃতিক ঘাস ও তৃণলতা খায় সেসব পশুই কেবল ‘সায়েমা’।

নিম্নে উট, গরু ও বকরির যাকাতের নিসাব ও তার পরিমাণ দেওয়া হল:

ক. সায়েমা উটে যাকাতের নিসাব ও তার পরিমাণ শরী‘আত নির্ধারণ করে দিয়েছে, নীচের চার্টে দেখুন:

ক্র.

উটের সংখ্যা

যাকাতের পরিমাণ

১.

১-৪

যাকাত নেই, চাইলে নফল সদকা করবে।

২.

৫-৯

একটি বকরি: ছাগল বা মেষ

৩.

১০-১৪

দু’টি বকরি

৪.

১৫-১৯

তিনটি বকরি

৫.

২০-২৪

চারটি বকরি, মালিকের সুবিধা হলে চারটি বকরির স্থানে একটি উট দিবে।

৬.

২৫-৩৫

বিনতু মাখাধ মাদী: দ্বিতীয় বছরের উটনী।

৭.

৩৬-৪৫

বিনতু লাবুন মাদী: তৃতীয় বছরের উটনী।

৮.

৪৬-৬০

একটি হিক্কাহ: চতুর্থ বছরের উটনী।

৯.

৬১-৭৫

একটি জিয‘আহ: পঞ্চম বছরের উটনী।

১০.

৭৬-৯০

দু’টি বিনতু লাবুন।

১১.

৯১-১২০

দু’টি হিককাহ।

জ্ঞাতব্য: উটের সংখ্যা যদি (১২০) থেকে বেশি হয়, তখন প্রত্যেক ৪০ অংকের জন্য একটি বিনতু লাবুন এবং প্রত্যেক পঞ্চাশ অংকের জন্য একটি হিক্কাহ যাকাত দিবে। উট যত বেশি হোক এভাবে (৪০ ও ৫০) দু’টি সংখ্যায় ভাগ করবে, যেমন:

উট সংখ্যা

৪০ ও ৫০ সংখ্যা

যাকাতের পরিমাণ

১৩০

১৩০=(২*৪০)+(৫০)=

২ বিনতু লাবুন ও ১ হিককাহ

১৪০

১৪০=(২*৫০)+(৪০)=

২ হিককাহ ও ১ বিনতু লাবুন

১৫০

১৫০=(৩*৫০)=

৩ হিককাহ

১৬০

১৬০=(৪*৪০)=

৪ বিনতু লাবুন

১৭০

১৭০=(৩*৪০)+(৫০)=

৩ বিনতু লাবুন ও ১ হিককাহ

১৮০

১৮০=(২*৫০)+(২*৪০)=

২ হিককাহ ও ২ বিনতু লাবুন

১৯০

১৯০=(৩*৫০)+(৪০)=

৩ হিককাহ ও ১ বিনতু লাবুন

২০০

২০০=(৪*৫০)= অথবা

২০০=(৫*৪০)=

৪ হিককাহ অথবা

৫ বিনতু লাবুন

২. যদি নির্দিষ্ট বছরের উট মালিকের ওপর ওয়াজিব হয়, যেমন চার্টে আমরা স্পষ্ট করেছি, আর সে বয়সের উট না থাকে, বরং কম বয়সের উট থাকে, যেমন একটি জিয‘আহ (চার বছরের উট) যাকাত ওয়াজিব হয়েছে কিন্তু তার নিকট জিয‘আহ নেই, আছে বিনতু লাবুন অর্থাৎ দুই বছরের উট, অথবা কারও ওপর দুই বছরের বিনতু লাবুন ওয়াজিব, কিন্তু তার নিকট বিনতু লাবুন নেই, আছে বিনতু মাখাধ অর্থাৎ এক বছরের উট, এই অবস্থায় তার থেকে কম বয়সের উট এবং তার সাথে দু’টি বকরি অথবা দু’টি বকরির বাজার দর গ্রহণ করা হবে, যে কোনো একটি গ্রহণ করলে সমস্যা নেই।[1] এটাকে বলা হয় (جُبرَان) অর্থাৎ ক্ষতিপূরণ।

৩. উপরের অবস্থার বিপরীত, মালিকের ওপর কম বয়সের উট ওয়াজিব, কিন্তু সেই বয়সের উট নেই, তার চেয়ে বেশি বয়সের উট আছে, যেমন বিনতু মাখাধ ওয়াজিব, কিন্তু বিনতু মাখাধ নেই, বিনতু লাবুন আছে। অথবা বিনতু লাবুন ওয়াজিব, কিন্তু বিনতু লাবুন নেই, তার চেয়ে বেশি বয়সের হিককাহ আছে। অথবা হিককাহ ওয়াজিব, কিন্তু হিককাহ নেই, তার চেয়ে বেশি বয়সের জিয‘আহ আছে। এসব অবস্থায় বেশি বয়সের উট গ্রহণ করবে, আর বেশির বিনিময় যাকাত উসুলকারী থেকে মালিক দু’টি বকরি অথবা তার মূল্য গ্রহণ করবে, যাকাত উসুলকারী যা-ই দিবে গ্রহণ করবে। যাকাত উসুলকারী বর্তমান যুগে অনেকটা ট্যাক্স উসুলকারীর ন্যায়।

৪. যে প্রকার উট যাকাত দাতার ওপর ওয়াজিব, যদি সে প্রকার থেকে সরাসরি নিচের স্তর অথবা সরাসরি তার উপরের স্তরের উট পাওয়া না যায়, বরং এক স্তর থেকে নীচের উট অথবা এক স্তর থেকে উপরের উট পাওয়া যায়, তাহলে মালিককে নির্দিষ্ট প্রকার উট হাযির করতে বাধ্য করা হবে। যেমন কারও ওপর জিয‘আহ ওয়াজিব, কিন্তু জিয‘আহ নেই এবং সরাসরি তার নীচের স্তরের উট, অর্থাৎ হিককাহও নেই, তবে এক স্তর থেকে নীচের উট অর্থাৎ বিনতু লাবুন আছে। এই অবস্থায় মালিক থেকে বিনতু লাবুন গ্রহণ করা হবে না, বরং নির্ধারিত উট হাযির করতে তাকে বাধ্য করবে। অনুরূপ কারও ওপর বিনতু মাখাধ ওয়াজিব, কিন্তু বিনতু মাখাধ নেই এবং সরাসরি তার উপরের স্তরের উট, অর্থাৎ বিনতু লাবুনও নেই, তবে এক স্তর থেকে উপরের উট, অর্থাৎ হিককাহ বা জিয‘আহ আছে। এই অবস্থায় তার থেকে উট গ্রহণ করা হবে না, বরং নির্দিষ্ট প্রকার উট হাজির করতে তাকে বাধ্য করা হবে, তবে মালিক যদি নিজের ইচ্ছায় এক স্তর থেকে উপরের উট প্রদান করে, তখন তা গ্রহণ করতে সমস্যা নেই।

৫. যাকাত হিসেবে যার ওপর উট ওয়াজিব, সে উপরের বর্ণনা মোতাবেক উট দিবে, উটের মূল্য পরিশোধ করা যথেষ্ট নয়। অনুরূপভাবে যা ওয়াজিব হয় তার পরিবর্তে অন্য বস্তু প্রদান করা যথেষ্ট নয়, যেমন উটের পরিবর্তে গরু দেওয়া যথেষ্ট নয়।

ইবন তাইমিয়াহ রহ. মনে করেন, মুসলিমদের উপকার ও প্রয়োজন হলে মূল্য দিয়ে যাকাত দেওয়া বৈধ। যেমন, কারও ওপর উটের যাকাত বকরি ওয়াজিব, তার নিকট বকরি নেই, সে তার মূল্য দিলে যথেষ্ট হবে। বকরি ক্রয় করার জন্য তাকে সফর করতে বাধ্য করবে না অথবা তার ঘনিষ্ঠ কেউ যাকাতের হকদার, সে পশুর যাকাতের মূল্য চায়, মূল্যই তার জন্য উপকারী, এমন হলে তাকে মূল্য দেওয়া বৈধ।[2]

শাইখ আদিল আয্যাযী বলেন: “ইখতিলাফ থেকে বাচার জন্য শিথিলতা ত্যাগ করে নির্দিষ্ট বস্তু দিয়ে যাকাত দেওয়াই উত্তম”। অনুরূপ ফসলের যাকাত, প্রয়োজন ব্যতীত মূল্য দিয়ে পরিশোধ না করাই শ্রেয়।

খ. বকরির যাকাত: বকরির নিসাব নর বা মাদী ৪০টি বকরি। বকরি মেষকেও শামিল করে। অতএব, বকরি ও মেষের যাকাত নিম্নরূপ:

ক্র.

বকরি / মেষের সংখ্যা

যাকাতের পরিমাণ

১.

১-৩৯

যাকাত নেই, চাইলে সদকা করবে।

২.

৪০-১২০

১ বকরি।

১২১-২০০

২ বকরি।

২০১-৩০০

৩ বকরি।

বকরি যদি ৩০০ থেকে অধিক হয়, প্রতি একশো থেকে একটি বকরি যাকাত দিবে। অর্থাৎ বকরি ৪০০ হওয়ার আগে চারটি বকরি ওয়াজিব হবে না, অতএব, ৩৯৯টি বকরি পর্যন্ত তিনটি বকরি ওয়াজিব হবে, বকরির সংখ্যা যখন ৪০০ হবে ৪টি বকরি ওয়াজিব হবে ৪৯৯টি পর্যন্ত। এভাবে উপরের দিকে অগ্রসর হবে।

লক্ষণীয় যে, সায়েমা বা স্বাধীনভাবে বিচরণকারী পশুর ওপর হিজরী এক বছর পূর্ণ হলে যাকাত ফরয হয়। আরেকটি বিষয়, ইতোপূর্বে বকরির যে নিসাব বলেছি সে নিসাব বরাবর হলে যাকাত ফরয হবে। পালের সব বকরি হোক, বা পালের সব মেষ হোক, বা পালের কতক বকরি ও কতক মেষ যেভাবে নিসাব পূর্ণ হবে, তার ওপর যাকাত ওয়াজিব হবে।

যাকাত হিসেবে যে বকরি ওয়াজিব হয়, তার অবশ্যই দ্বিতীয় বছরে পদার্পণ করা জরুরি। এক বছর পূর্ণ হয়নি এরূপ মেষকে ‘জিয‘আহ’ বলা হয়, আবার কেউ ছয় মাস বা কেউ আট মাসের মেষকে জিয‘আহ বলেছেন।

আরেকটি জরুরি বিষয়, যাকাত হিসেবে যা ওয়াজিব হয় সেটি মেষ বা বকরি আবার নর বা মাদী যাই পরিশোধ করা হোক কোনো সমস্যা নেই। যাকাতের বকরি নিজের পাল বা অন্যত্র থেকে সংগ্রহ করে দেওয়ার অনুমতি আছে, সেটি খরিদ বা ঋণ করে যেভাবে হোক। অধিক বয়স্ক অথবা ত্রুটিযুক্ত অথবা পাঠা যাকাত হিসেবে দিবে না, তবে যাকাত উসুলকারী চাইলে সেটি গ্রহণ করতে সমস্যা নেই।

যাকাত উসুলকারী সর্বোত্তম ও সবচেয়ে সুন্দর পশু উসুল করবে না, যেমন বেশি বাচ্চাদানকারী অথবা বেশি মোটা-তাজা অথবা গর্ভবতী পশু। অনুরূপ নর-ছাগল নিবে না, তবে মালিক দিতে চাইলে গ্রহণ করতে সমস্যা নেই। যাকাত হিসেবে দু’বছরের বকরি অথবা আট-নয় মাসের মেষ উসুল করবে।

গ. গরুর যাকাত: গরুর যাকাতের নিসাব ৩০টি গরু। নর-মাদী উভয় প্রকার কিংবা শুধু মাদী বা শুধু নর যাই হোক ৩০টি গরু হলে তাতে যাকাত ওয়াজিব হবে। নিসাব পরিমাণ গরুর ওপর হিজরী এক বছর পূর্ণ হলে একটি তাবি বা তাবি‘আহ অর্থাৎ এক বছরের নর বা মাদী গরু যাকাত দিবে। তারপর প্রতি ৪০টি গরু থেকে একটি মুসিন্নাহ অর্থাৎ দুই বছরের গরু যাকাত দিবে। অধিকাংশ আলিম এ কথা বলেছেন। গরু যত বেশি হোক ৩০ ও ৪০ দু’টি সংখ্যায় অর্থাৎ তিন দশক ও চার দশক করে ভাগ করবে:

ক্র.

গরুর সংখ্যা

যাকাতের পরিমাণ

১.

১-২৯

যাকাত নেই

২.

৩০-৩৯

১টি তাবি বা তাবিআহ (১ বছরের গরু)

৩.

৪০-৫৯

১টি মুসিন্নাহ (২-বছরের গরু)

৪.

৬০

৬০=(৩০*২)= দু’টি তাবি/তাবিআহ (নর-মাদী)

৫.

৭০

৭০=(৩০+৪০)= ১টি তাবিআহ ও ১টি মুসিন্নাহ

৬.

১০০

১০০=(৩০*২)+৪০= ২টি তাবিআহ ও ১টি মুসিন্নাহ

আরেকটি মাসআলা জানা জরুরি যে, যদি মনে করি কারও ৬৫ টি গরু আছে, সে ৬০টি গরুর যাকাত দিবে, পূর্বে বলেছি, ষাটের অতিরিক্ত ৫টি গরুর যাকাত নেই।

কয়েকটি জরুরি জ্ঞাতব্য:

১. গরুর ক্ষেত্রে সায়েমাহ হওয়া শর্ত কি না, আহলে ইলমগণ দ্বিমত পোষণ করেছেন। বিশুদ্ধ মতে অন্যান্য পশুর মত গরুরও সায়েমাহ হওয়া জরুরি।

২. উটের ন্যায় গরুর ক্ষেত্রে جُبران তথা ক্ষতিপূরণ নেই, যে গরু ওয়াজিব যদি সেটি তার কাছে না থাকে, ক্রয় করে বা ঋণ করে যেভাবে হোক হাজির করবে, কম বা বেশি বয়সী গরু গ্রহণ করা হবে না, তবে মালিক বেশি বয়সের গরু স্বেচ্ছায় দিলে যাকাত উসুলকারীর তা নিতে সমস্যা নেই।

৩. তাবি‘ অর্থাৎ এক বছরের গরু অথবা মুসিন্নাহ অর্থাৎ দু’বছরের গরু নর-মাদী উভয় গ্রহণ করা বৈধ।

৪. লক্ষণীয় যে, মহিষও এক প্রকার গরু। যদি গরু ও মহিষের মালিক হয় গণনার সময় একটির সাথে অপরটি যোগ করবে, যেমনটি বকরি ও মেষের ক্ষেত্রে যোগ করা হয়, অতঃপর হিজরী এক বছর হলে যাকাত দিবে।

৫. বাছুর ও উটের বাচ্চার দু’টি অবস্থা:

ক. কেউ যদি নিসাব পরিমাণ উট বা গরু বা বকরির মালিক হয়, অতঃপর হিজরী বছরের মাঝে কতিপয় পশু বাচ্চা দেয়, অধিকাংশ আলিম বলেন: বাচ্চা তাদের মায়ের সাথে গণনা করা হবে, তবে যাকাত ছোট বাচ্চা দিয়ে দিবে না, বড় পশু দিয়েই দিবে।

খ. যদি ছোট পশু নিসাব পরিমাণ থাকে এবং তার ওপর হিজরী এক বছর পূর্ণ হয়, একদল আলিম বলেন: এতে যাকাত নেই, কিন্তু অধিকাংশ আলিম বলেন: তাতে যাকাত ওয়াজিব, তবে ছোট পশু দিয়েই যাকাত দিবে। এটিই বিশুদ্ধ মত।

ইবন তাইমিয়াহ রহ. এসব অভিমত উল্লেখ করে বলেন: “... যদি সবপশু ছোট হয়, কেউ বলেছেন: ছোট পশু দিবে। আর কেউ বলেছেন: বড় পশু কিনে দিবে”।[3]

৬. আলিমদের প্রসিদ্ধ মতে, যৌথ মালিকানা পশুর যাকাতে ভূমিকা রাখে, অর্থাৎ যৌথ মালিকানার কারণে পশুর যাকাত হ্রাস-বৃদ্ধি হয়, যেমন তিন জন প্রতিবেশী প্রত্যেকে ৪০টি করে বকরির মালিক, সবাই একটি করে বকরি যাকাত দিবে এটিই স্বাভাবিক, অর্থাৎ তিনজন তিনটি বকরি যাকাত দিবে। কিন্তু যাকাত উসুলকারী আসার পর যদি তিনজনের বকরি এক জায়গায় করে পেশ করে ১২০টি বকরি হয়, যার যাকাত মাত্র একটি বকরি। বকরির যাকাতের চার্ট দেখুন। অথবা দু’জন শরীক যৌথভাবে ৪০টি বকরির মালিক, কিন্তু যাকাত উসুলকারী আসার পর যদি তারা ভাগ করে নেয়, একজন ২০টি করে পায়, ফলে তাতে যাকাত ওয়াজিব হয় না, অথচ তাদের ওপর একটি বকরি ওয়াজিব, যেমন চার্টে বলেছি। যাকাত থেকে নিষ্কৃতির জন্য এরূপ বাহানা করা হারাম। অতএব, পশু যোগ বা ভাগ করার উদ্দেশ্য যদি হয় যাকাত হ্রাস বা রহিত করা, তাহলে এরূপ করা হারাম এবং অভিযুক্তরা শাস্তির উপযুক্ত।

কয়েকটি জরুরি বিষয়:

১. শাইখ ইবন উসাইমীন রহ. বলেন: পশু ব্যতীত অন্যান্য সম্পদ যোগ করলে যাকাতে প্রভাব পড়ে না। অতঃপর তিনি একটি উদাহরণ দিয়েছেন: দু’জন ব্যক্তি ফসলি জমি অথবা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক, উভয়ের সম্পদ যৌথভাবে নিসাব পরিমাণ, কিন্তু পৃথকভাবে প্রত্যেকের সম্পদ নিসাব পরিমাণ নয়। অতএব, তাদের ওপর যাকাত নেই।[4]

২. জ্ঞাতব্য, পশুর যাকাত পশুর স্থান থেকে গ্রহণ করবে, যেমন যাকাত উসুলকারী পশুর জায়গায় চলে যাবে, মালিককে উসুলকারীর জায়গায় পশু হাজির করতে বাধ্য করবে না।

>
[1] আশ-শারহুল মুমতি‘: (৬/৬০)।

[2] দেখুন: আল-ইখতিয়ারাতুল ফিকহিয়্যাহ: (পৃ. ১৮৪)।

[3] দেখুন: আল-ফাতাওয়া: (২৫/৩৭)।

[4] আশ-শারহুল মুমতি‘: (৬/৭০)।