মহান আল্লাহ কুরআনে বলেছেন, “অতঃপর নিষিদ্ধ মাসগুলো অতিবাহিত হলে অংশীবাদীদেরকে যেখানে পাও হত্যা কর, তাদেরকে বন্দি কর, অবরোধ কর এবং প্রত্যেক ঘাঁটিতে তাদের জন্য ওত পেতে থাক। কিন্তু যদি তারা তওবা করে, যথাযথ নামাজ পরে ও জাকাত প্রদান করে, তাহলে তাদের পথ ছেড়ে দাও। নিশ্চয় আল্লাহ চরম ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।” (তওবাহঃ ৫) “ আর যেখানে পাও, তাদেরকে হত্যা কর এবং যেখান থেকে তোমাদেরকে বহিষ্কার করেছে, তোমরা সেখান থেকে তাদেরকে বহিষ্কার কর।” (বাকারাহঃ ১৯১) এ সবের মানে কি কুরআন আমাদেরকে অমুসলিমদেরকে হত্যা করতে বলেছে?

না, তার মানে এই নয় যে, মুসলিমরা সুযোগ পেলেই অমুসলিমদের যেখানে পাবে, সেখানেই হত্যা করবে। বরং উক্ত নির্দেশগুলি সাময়িক ভাবে দেওয়া হয়েছিল। যুদ্ধ চলাকালীন পরিস্থিতিতে বিশেষ আদেশ দেওয়া হয়েছিল। এ আদেশ সকল সময়ের জন্য নয়। মহান আল্লাহ পূর্বাপর উক্তি একটু ভালভাবে লক্ষ করলে বুঝা যাবে যে, তা সাময়িক ছিল। যেমন মহান আল্লাহ বলেছেন “যারা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে, তোমরাও আল্লাহর পথে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ কর, তবে বাড়াবাড়ি (সীমালঙ্ঘন) করো না, নিশ্চয় আল্লাহ বাড়াবাড়ি কারীদেরকে পছন্দ করে না।” (বাকারাহঃ১৯০) “ যদি তারা তোমাদের নিকট হতে পৃথক না হয় (যুদ্ধ না করে) , তোমাদের নিকট সন্ধি প্রার্থনা না করে এবং তাদের হস্ত সংবরণ না করে, তাহলে তাদেরকে যেখানে পাও, সেখানেই গ্রেফতার করে হত্যা কর। আর এই সকল লোকের বিরুদ্ধেই আমি তোমাদেরকে স্পষ্ট আধিপত্য দান করছি।” (নিশা ৯১)

তা যদি না হত, তাহলে পৃথিবীতে অমুসলিম নিধন করা হত এবং যে দেশে মুসলিম আধিপত্য পরিপূর্ণ ছিল, সে দেশে কোন অমুসলিমকে জীবিত রাখা হত না।

তাছাড়া জানতে হবে যে, মহান সৃষ্টিকর্তার উদ্দেশ্য কাফের নিধন নয়, উদ্দেশ্য হল তাদের হিদায়াত। এ জন্য অংশীবাদীদের ব্যাপারেই পরবর্তী নির্দেশে বলা হয়েছে,

“আর অংশীবাদীদের মধ্যে কেউ তোমার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করলে তুমি তাকে আশ্রয় দাও, যাতে সে আল্লাহর বানী শুনতে পায়। অতঃপর তাকে তার নিরাপদ স্থানে পৌঁছে দাও। তা এ জন্য যে তারা অজ্ঞ লোক।” (তওবাহঃ ৬)

বলা বাহুল্য, মুসলিম বিদ্বেষীরা যেভাবে কুরআন বুঝে, সেভাবে মুসলিমরা বুঝে না । আর তার জন্যই মুসলিম জাতি ও তাদের কুরআনের বিরুদ্ধে বিষোদগার করতে প্রয়াস পায় এবং সেই সাথে নিজেদের বেওকুফির বহিঃপ্রকাশ ঘটায়।