অনেক মানুষকে সত্যের দিশা দিতে গেলে বাপ দাদার দোহাই দেয়। অনেকে কোন বড় আলেম বা নেতার দোহাই দেয়। এমন দোহাই দিয়ে কি সত্য প্রত্যাখ্যান করা উচিত?

অবশ্যই না। প্রত্যেকের বাপ দাদা তার নিজের কাছে শ্রদ্ধেয়। কিন্তু প্রত্যেকের বাপ দাদা যে হকপন্থী, তার নিশ্চয়তা কোথায়? হকের মাপকাঠি কোন ব্যক্তিত্ব নয়, হকের মাপকাঠি হল কুরআন ও সহিহ সুন্নাহ। বাপ দাদার দোহাই দিয়ে হক প্রত্যাখ্যান করার রোগ অনেক পুরাতন। কুরআন মজিদের বহু জায়গায় সে কথা উল্লেখিত রয়াছে। মহান আল্লাহ দাদুপন্থিদের ব্যাপারে বলেছেন,

“আর যখন তাদের বলা হয়, ‘আল্লাহ জা অবতীর্ণ করেছেন, তার তোমরা অনুসরণ কর।’ তারা বলে, ‘(না-না) বরং আমরা আমাদের পিতৃপুরুষদের যাতে (মতামত ও ধর্মাদর্শে ) পেয়েছি, তার অনুসরণ করব।’ যদিও তাদের পিতৃপুরুষগণ কিছুই বুঝত না এবং তারা সৎ পথেও ছিল না। (বাকারাহঃ ১৭০)

“আর যখন তাদেরকে বলা হয়, ‘আল্লাহ জা অবতীর্ণ করেছেন তার দিকে ও রাসুলের দিকে এসো,’ তখন তারা বলে, ‘আমরা আমাদের পূর্ব পুরুষদের যাতে পেয়েছি, তাই আমাদের জন্যও যথেষ্ট ।’ যদিও তাদের পূর্বপুরুষগণ কিছুই জানত না এবং সৎপথপ্রাপ্ত ও ছিলেন না, তবুও? (মায়িদাহঃ ১০৪)

যখন তাদেরকে বলা হয়, ‘আল্লাহ জা অবতীর্ণ করেছেন তোমরা তার অনুসরণ কর’, তখন তারা বলে, ‘আমাদের বাপ দাদাকে যাতে পেয়েছি, আমরা তো তাই মেনে চলব।’ যদিও শয়তান তাদেরকে দোজখ যন্ত্রণার দিকে আহবান করে (তবুও কি তারা বাপ দাদারই অনুসরণ করবে) ? (লুকমানঃ ২১)

“বরং ওরা বলে, আমরা তো আমাদের পূর্বপুরুষদের এক মতাদর্শের অনুসারী পেয়েছি এবং আমতা তাদেরই পদাঙ্ক অনুসরণ করে পথপ্রাপ্ত। এভাবে, তোমার পূর্বে কোন জনপদে যখনই কোন সতর্ককারী প্রেরণ করেছি, তখনই তাদের মধ্যে যারা বিত্তশালী ছিল তারা বলত, ‘আমরা তো আমাদের পূর্বপুরুষকে এক মতাদর্শের অনুসারী পেয়েছি এবং আমরা তাদেরই পদাঙ্ক অনুসরণ করছি।’ (প্রত্যেক সতর্ককারী) বলত, ‘তোমরা তোমাদের পূর্বপুরুষকে যার অনুসারী পেয়েছ, আমি যদি তোমাদের জন্য তা অপেক্ষা উৎকৃষ্ট পথনির্দেশ আনায়ন করি, তবুও কি তোমরা তাদের পদাঙ্ক অনুসরণ ক্রব্যে? (প্রত্যুত্তরে) তারা বলত, ‘তোমরা যা নিয়ে প্রেরিত হয়েছ, আমরা তা প্রত্যাখ্যান করি।’ সুতরাং আমি ওদের নিকট থেকে প্রতিশোধ গ্রহণ করলাম। অতএব দেখ, মিথ্যাচারীদের পরিণাম কি হয়েছে? (জুখরুফঃ ২২-২৫)