সহীহ ফিক্বহুস সুন্নাহ স্বভাবজাত (ফিতরাত) সুন্নাতসমূহ আবূ মালিক কামাল বিন আস-সাইয়্যিদ সালিম ১ টি
স্বভাবজাত সুন্নাতসমূহ দ্বারা উদ্দেশ্য কী? এবং সেগুলো কি কি?

স্বভাবজাত সুন্নাত হলো এমন রীতি যা সম্পাদন করলে এর সম্পাদনকারী এমন ফিতরাতের সাথে বিশেষিত হবেন যে ফিতরাতের উপর আল্লাহ্‌ তার বান্দাদের সৃষ্টি করেছেন এবং এর উপর ভিত্তি করে তার হাশর-নাশর হবে। আল্লাহ্‌ তাদেরকে এর জন্য ভালবাসবেন। যেন তারা এর মাধ্যমে পূর্ণগুণের অধিকারী হতে পারে এবং আকৃতিগতভাবে মর্যাদা পায়। এ ব্যাপারে ইসলামী শরীয়াত একমত যে, এটা একটি প্রাচীন সুন্নাত যা সকল নাবী পছন্দ করেছেন। এটি স্বভাবজাত বিষয়, যা সকল নাবী পছন্দ করেছেন।[1]

স্বভাবজাত রীতি অনুসরণের মাধ্যমে দ্বীনই ও দুনিয়াবী অনেক কল্যাণ রয়েছে। যেমন: এর ফলে সমুদয় দৈহিক গঠন সুন্দর থাকে এবং শরীর পরিষ্কার পরিচ্ছন্নণ থাকে।[2]

অতঃপর কতিপয় স্বভাবজাত সুন্নাত নিম্নে আলোচিত হলো:

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ ﷺ قَالَ: الْفِطْرَةُ خَمْسٌ: الِاخْتِتَانُ، وَالِاسْتِحْدَادُ، وَقَصُّ الشَّارِبِ، وَتَقْلِيمُ الْأَظْفَارِ، وَنَتْفُ الْإِبْطِ

(ক) আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূল (ﷺ) বলেন: স্বভাবজাত বিষয় ৫ টি। খাতনা করা, নাভীর নীচের লোম পরিষ্কার করা, গোঁফ খাটো করা, নখ কাটা, বগলের পশম উপড়িয়ে ফেলা।[3]

عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ: قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ: " عَشْرٌ مِنَ الْفِطْرَةِ: قَصُّ الشَّارِبِ، وَإِعْفَاءُ اللِّحْيَةِ، وَالسِّوَاكُ، وَاسْتِنْشَاقُ الْمَاءِ، وَقَصُّ الْأَظْفَارِ، وَغَسْلُ الْبَرَاجِمِ، وَنَتْفُ الْإِبِطِ، وَحَلْقُ الْعَانَةِ، وَانْتِقَاصُ الْمَاءِ " قَالَ زَكَرِيَّا: قَالَ مُصْعَبٌ: وَنَسِيتُ الْعَاشِرَةَ إِلَّا أَنْ تَكُونَ الْمَضْمَضَةَ

(খ) আয়িশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল (ﷺ) বলেছেন: ১০ টি বিষয় স্বভাবের অন্তর্ভুক্ত। গোঁফ খাটো করা, দাঁড়ি লম্বা করা, মিসওয়াক করা, নাকে পানি দেয়া, নখ কাটা, অঙ্গের গিরাসমূহ ঘষে মেজে ধৌত করা, বগলের পশম উপড়িয়ে ফেলা, নাভীর নীচের পশম পরিষ্কার করা, মলমূত্র ত্যাগের পর পানি ব্যবহার করা তথা ইসতিনজা করা। যাকারিয়া বলেন, মাস‘আব বলেছেন: আমি দশ নম্বরটি ভুলে গেছি। সম্ভবতঃ তা হলো কুলি করা।[4]


এ দু’টি হাদীস থেকে বুঝা যায় স্বভাবজাত ফিতরাতসমূহ শুধু এই দশটির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। নিম্নে তা থেকে উল্লেখ করা হলো:

(১) খাতনা করা বা সুন্নৎ দেয়া

(২) মলমূত্র ত্যাগের পর পানি ব্যবহার করা তথা ইসতিনজা করা

(৩) মিসওয়াক করা

(৪) নখ কাটা

(৫) গোঁফ খাটো করা

(৬) দাঁড়ি লম্বা করা

(৭) নাভীর নীচের পশম পরিষ্কার করা

(৮) বগলের পশম উপড়িয়ে ফেলা

(৯) বিভিন্ন অঙ্গের গিরাসমূহ ঘষে মেজে ধৌত করা। এর দ্বারা উদ্দেশ্য ঐ সমস্ত গিরা যেগুলোতে ময়লা জমা হয়। যেমন: আঙ্গুলের গিরাসমূহ, কানের গোড়াসমূহ ইত্যাদি।

(১০) কুলি করা ও নাকে পানি দেয়া।

[1] নাইলুল আওতার (১/১০৯), আলস্নামা আইনী প্রণীত উম্মদাতুল কারী (২২/৪৫)।

[2] মানাভী প্রণীত ফাইযুল কাদীর (১/৩৮)।

[3] সহীহ; বুখারী হা/ ৫৮৯১; মুসলিম হা/২৫৭।

[4] হাসান; মুসলিম হা/ ২৬১ আবূ দাউদ হা/ ৫২, তিরমিযী ৬/২৯ নাসাঈ ৮/১২৬; ইবনে মাজাহ হা/ ২৯৩;